ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মুস্তাফিজকে নিয়ে যা বললেন পাপন

প্রকাশিত: ০৮:১৭, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯

 মুস্তাফিজকে নিয়ে যা বললেন পাপন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘এই রাউন্ড (প্রথম) দেখে এখনও বুঝতে পারছি না। তবে একটু তো চিন্তার বিষয় আছেই। আমাদের সেরা পেসার নিশ্চয়ই মুস্তাফিজুর রহমান। ওকে নিয়ে চিন্তার মধ্যে আছি। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।’ কথাগুলো বলেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তাতেই বোঝা যাচ্ছে, বিসিবিই শুধু নয়, সবার ভাবনায় ভালভাবেই আছেন মুস্তাফিজ। তিনি সবাইকে চিন্তায় ফেলছেন। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের আসল বোলার যে তিনিই। বিসিবি সভাপতিই শুধু নন, মুস্তাফিজকে নিয়ে ভাবনা আছে নির্বাচকদেরও। মুস্তাফিজ যে এখন আর আগের জৌলুস ছড়ানো বোলিং করতে পারেন না, তা ভাবনায় ফেলছে। নির্বাচক কমিটির সদস্য হাবিবুল বাশার সুমন যেমন বলেছেন, ‘মুস্তাফিজ এক বছর ধরে মিসিং হয়ে যাচ্ছে। মুস্তাফিজের বোলিংয়ে এখন ইয়র্কার নেই। আগে একটা দারুণ ইয়র্কার ছিল বোলিংয়ে। সেøায়ার বল এখনও আছে। পেসও আস্তে আস্তে বাড়ছে। এখন মোটামুটি ভাল পেসেই বল করছে। কিন্তু সে একটু বেশি প্রেডিক্টেবল হয়ে যাচ্ছে। এটাই আমার কনসার্ন। মনে হচ্ছে আমার কাছে। ব্যাটসম্যানরা ওকে পড়ে ফেলছে যে ও কি করতে যাচ্ছে।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘সে কিন্তু উইকেট পাচ্ছে। এখনও কিন্তু পাঁচ উইকেট পাচ্ছে। শেষ এক বছরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ও। কিন্তু সে খরুচে বোলার হয়ে যাচ্ছে। শেষের দিকে অনেক খরুচে হয়ে যাচ্ছে। আমাদের ডেথ বোলার কিন্তু মুস্তাফিজ। সে যদি খরুচে বোলিং করে তাহলে কিন্তু পুরো দলের ওপরেই চাপ চলে আসে।’ মুস্তাফিজকে নিয়ে যে এ চিন্তা হচ্ছে তার যৌক্তিক কারণও আছে। সামনেই টি২০ বিশ্বকাপ। আগামী বছর অক্টোবরে হবে অস্ট্রেলিয়ায় টি২০ বিশ্বকাপ। এ বিশ্বকাপে মুস্তাফিজের মতো বোলারকে লাগবে। দলের ভাল করতে হলে মুস্তাফিজকে চাই। কিন্তু যদি উইকেট পাওয়ার পরও টি২০তে খরুচে বোলার হয়ে থাকেন মুস্তাফিজ, তাহলে কিভাবে তাকে নিয়ে ভরসা করা যাবে? তাই তো এত চিন্তা। বঙ্গবন্ধু বিপিএলে বিদেশী বোলারদের সঙ্গে দেশী বোলাররাও ঝলক দেখাচ্ছেন। প্রথমপর্ব শেষে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ঢাকা প্লাটুনের শ্রীলঙ্কান থিসারা পেরেরার (৫ উইকেট) সঙ্গে পরের স্থানে থাকা দেশী বোলার রাজশাহী রয়্যালসের অলক কাপালীর (৪ উইকেট) উইকেট শিকারে খুব বেশি পার্থক্য নেই। তৃতীয় স্থানে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের সৌম্য সরকার (৪ উইকেট), চতুর্থ স্থানে রংপুর রেঞ্জার্সের ইংল্যান্ডের লুইস গ্রেগরি (৪ উইকেট) এবং পঞ্চম স্থানে রাজশাহী রয়্যালসের ফরহাদ রেজা (৩ উইকেট) রয়েছেন। পরের স্থানগুলোতে ৩ উইকেট করে পাওয়া দেশী বোলারদের মধ্যে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের আল-আমিন হোসেন, ঢাকা প্লাটুনের মাশরাফি বিন মর্তুজা, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের রুবেল হোসেনও আছেন। কিন্তু নেই মুস্তাফিজ। এমনকি সেরা ২০তেও নেই রংপুর রেঞ্জার্সের মুস্তাফিজ! কি বেহাল দশা। আন্তর্জাতিক টি২০ ক্রিকেটে গত বছর ডিসেম্বরে ৩ উইকেট শিকার করেন। এরপর এর নিচেই উইকেট শিকার থাকে। আর ওয়ানডেতে এ বছর বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচটিতে ৫ উইকেট শিকার করেন। তবে রান দেন ৭৫। টেস্টে গত বছর ফেব্রুয়ারিতে এক ইনিংসে ৩ উইকেট নেন। টেস্টে এখন আর সুযোগই মিলে না মুস্তাফিজের। তাকে টি২০তে সবচেয়ে বেশি কার্যকর মনে করা হয়। কিন্তু সেখানেও তার জৌলুস নেই। বিপিএলে প্রথম ম্যাচে ২ উইকেট পেলেও শ্রীলঙ্কার দাসুন শানাকা যে টানা চার ছক্কা মেরেছেন তা কারোরই দৃষ্টি এড়ায়নি। পরের ম্যাচে তো কোন উইকেটই পাননি মুস্তাফিজ। ২ ম্যাচে ৭.২ ওভার বোলিং করে ৫৮ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার করেন। রান দেন প্রায় ৮ করে। আর তাই ‘কাটার মাস্টার’কে নিয়ে ভাবনার শেষ নেই। এখন আশা, যত দ্রুত মুস্তাফিজ নিজের ছন্দে ফিরতে পারেন।
×