ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই সিলেট ও রংপুরের

প্রকাশিত: ০৮:১৬, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯

ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই সিলেট ও রংপুরের

মোঃ মামুন রশীদ ॥ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) টি২০ আসরে প্রথম ধাপের খেলা শেষ হয়েছে। মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৪ দিনে অনুষ্ঠিত হয়েছে ৮ ম্যাচ। এই ম্যাচগুলোয় সবচেয়ে সফল রাজশাহী রয়্যালস। আন্দ্রে রাসেলের নেতৃত্বে দুই ম্যাচ খেলে দু’টিতেই বিশাল জয় তুলে নিয়েছে। এছাড়া ঢাকা প্লাটুন ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সও সফল হয়েছে। তারা সর্বাধিক ৩টি করে ম্যাচ খেলে ২টি করে জয় ও ১টি করে পরাজয় দেখেছে। তবে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় সিলেট থান্ডার। ৩ ম্যাচ খেলে সবগুলোতেই হেরেছে তারা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের নেতৃত্বে। রংপুর রেঞ্জার্সও মোহাম্মদ নবির নেতৃত্বে দুই ম্যাচেই হার দেখেছে। বঙ্গবন্ধু বিপিএলে এ দু’টি দল আপাতত পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে অবস্থান করছে। মঙ্গলবার থেকে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে হবে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের দ্বিতীয় ধাপ। মোট ৮ দিনে ১২টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। মাঝে ২দিন বিরতিও আছে এইপর্বে। সেখানে ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ সিলেট ও রংপুরের। ৩টি করে ম্যাচ আছে উভয় দলেরই। লড়াইয়ে টিকে থাকতে চট্টগ্রামেই দারুণ কিছু করতে হবে দু’দলকে। ঢাকাপর্বের ম্যাচগুলো থেকে ইতোমধ্যেই দলগুলোর শক্তিমত্তা কিছুটা আঁচ করা গেছে। কারণ সবগুলো দলই একাধিক ম্যাচ খেলেছে এবং রাজশাহী ব্যতীত সবারই মিশ্র অভিজ্ঞতা হয়েছে। মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বে প্রথম ম্যাচেই রাজশাহীর কাছে বাজেভাবে হার দেখে ঢাকা প্লাটুন। তবে পরের দুই ম্যাচে ছন্দে ফিরে আসে তারা এবং কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স ও সিলেটকে হারিয়ে দেয়। এখন পর্যন্ত চলতি বিপিএলে সর্বোচ্চ দুটি দলীয় সংগ্রহও গড়েছে ঢাকা। কুমিল্লার বিপক্ষে ৭ উইকেটে ১৮০ রান তোলার পর সিলেটের বিপক্ষে তারা তুলে ফেলে ৪ উইকেটে ১৮২ রান। এরপর আছে উদ্বোধনী দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে রংপুর রেঞ্জার্সের বিপক্ষে কুমিল্লার করা ৭ উইকেটে ১৭৩ রান। আগে ব্যাট করে সবচেয়ে বড় ১০৫ রানের ব্যবধানে জয়টা সেদিনই তুলে নিয়েছে তারা। তবে অপর ম্যাচে তারা ঢাকার বিপক্ষে ১৮০ রান তাড়া করতে পারেনি, কিন্তু ৯ উইকেটে ১৬০ রান তুলেছিল। সবচেয়ে ভাল রান তাড়া করেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। উদ্বোধনী ম্যাচে তারা সিলেট থান্ডারের করা ৪ উইকেটে ১৬২ রান টপকে যায় ১৯ ওভারে ৫ উইকেটে ১৬৩ রান তুলে। পরে ব্যাট করে সবচেয়ে বড় জয় পেয়েছে রাজশাহী। ঢাকার বিপক্ষে তারা ১৩৫ রানের লক্ষ্য পেরিয়ে যায় মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে, তুলে নেয় ৯ উইকেটের দুর্দান্ত জয়। পরে ব্যাট করে সর্বনিম্ন রান রংপুরের, তারা কুমিল্লার বিপক্ষে ১১ ডিসেম্বর গুটিয়ে গিয়েছিল ৬৮ রানে। আর আগে ব্যাট করে সর্বনিম্ন রান সিলেটের। রাজশাহীর বিরুদ্ধে তারা ১৩ ডিসেম্বর গুটিয়ে যায় মাত্র ৯১ রান তুলেই। সবমিলিয়ে ঢাকাপর্বে সিলেট ও রংপুরের দারুণ বিষাদময় সময় কেটেছে। কোন ম্যাচই জিততে পারেনি তারা। সিলেট দেখেছে হ্যাটট্রিক পরাজয়, আর রংপুর স্বাদ নিয়েছে জোড়া হারের। এ দু’টি দলকেই এখন চট্টগ্রাম পর্বে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। লড়তে হবে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য। স্বাগতিক চট্টগ্রামের বিপক্ষে মঙ্গলবার প্রথমদিনেই সন্ধ্যার ম্যাচে নামবে সিলেট। বঙ্গবন্ধু বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচটাই খেলেছিল দু’দল। অর্থাৎ প্রথম ফিরতি ম্যাচ খেলতে নামবে তারাই। চট্টগ্রামের কাছে ৫ উইকেটে পরাজয়ের শোধ নেয়ার চেয়ে জরুরী বন্দরনগরীতে তাদের ঘুরে দাঁড়ানো। টানা ৩ পরাজয়ের পর আবার ৩ হার হয়ে গেলে চলতি আসরে শেষ চারে ওঠার লড়াই থেকে প্রায় ছিটকেই যাবে তারা। এই ধাপে তাদের বাকি দুই ম্যাচ খুলনা টাইগার্স ও ঢাকার বিপক্ষে। ঢাকার বিপক্ষেও হেরেছে সিলেট, তবে খুলনার বিপক্ষে প্রথমবার মাঠে নামবে। খুলনার দলটিকে এখন পর্যন্ত সেভাবে বুঝে উঠতে পারেনি কেউ। প্রচুর সময় পেয়েছে তারা। মাত্র একটি ম্যাচ খেলেছে চট্টগ্রামের বিপক্ষে এবং ৮ উইকেটের অনায়াস জয় তুলে নিয়েছে মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বে। তাদের দলগত শক্তির গভীরতা চট্টগ্রাম ধাপের প্রথমদিনেই বোঝা যাবে। প্রথম ম্যাচটি তারা খেলবে ঢাকাপর্বে শতভাগ জয় তুলে নেয়া রাজশাহীর বিপক্ষে। ৪ পয়েন্ট নিয়ে তারাই আছে শীর্ষে। সমান ৪ পয়েন্ট করে নিয়ে নেট রানরেটে পিছিয়ে থাকায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম আছে পরের দুটি অবস্থানে। কারণ ৩টি করে ম্যাচ খেলে একটি করে পরাজয়ও দেখেছে তারা। আর তলানিতে থাকা রংপুরকে এবার এই পর্বে খেলতে হবে কুমিল্লা, খুলনা ও চট্টগ্রামের বিপক্ষে। নিজেদের মাঠ হওয়াতে চট্টগ্রামই এই ধাপে সর্বাধিক ৪টি ম্যাচ খেলবে। তাই এইপর্ব শেষে তাদের দারুণ সুযোগ শীর্ষে উঠে আসার। কিন্তু সে জন্য রাজশাহীর পরাজয়টাও চাইতে হবে তাদের। রাজশাহীর বিপক্ষে নিজেদের মাঠে তাদের ম্যাচ নেই। কিন্তু আন্দ্রে রাসেলের দল রাজশাহী খেলবে খুলনার সঙ্গে দুই ম্যাচ এবং কুমিল্লার সঙ্গে। ১৯ ও ২২ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম ধাপে আছে বিরতি। ২৪ ডিসেম্বর শেষ হবে চট্টগ্রাম পর্ব। এরপর আবারও ঢাকায় তৃতীয় ধাপে ফিরবে বঙ্গবন্ধু বিপিএল। ২৭ ডিসেম্বর শুরু হবে সেই ধাপটি।
×