ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধান শিক্ষকের লালসায় চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা

প্রকাশিত: ০৯:৩৩, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯

প্রধান শিক্ষকের লালসায় চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ সহকারী শিক্ষিকার সহায়তায় প্রধান শিক্ষকের লালসার শিকার হয়ে অন্তঃসত্ত্বা চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। খবর পেয়ে জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম অন্তঃসত্ত্বা ওই ছাত্রীকে শেবাচিমে দেখতে গিয়েছিলেন। শনিবার সকালে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ওই ছাত্রীর সার্বিক বিষয়ে তিনি খোঁজখবর নিয়ে তার চিকিৎসার ব্যয় বহনের দায়িত্ব নিয়েছেন। পাশাপাশি এ বিষয়ে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। শেবাচিম হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডাঃ মৃদুলা কর জানান, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই নির্যাতিতার শারীরিক অবস্থা জানা যাবে। তিনি আরও জানান, অপরিণত বয়সে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় ওই ছাত্রীর জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে। নির্যাতিতা ছাত্রীর মা জানান, গত ১০ ডিসেম্বর রাতে তার ১২ বছরের স্কুলপড়ুয়া কন্যাকে শেবাচিম হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করার পর বেশকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে দেয়া হয়েছে। কিন্তু টাকার অভাবে তারা এখনও কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে পারেননি। হাসপাতালে শষ্যাশয়ী জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার ভোজমহল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী জানায়, প্রায় নয় মাস আগে স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা রেবা খানমের সহায়তায় দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বাবুল হোসেন তার অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে প্রায় প্রতিদিনই তাকে ধর্ষণ করা হতো। এ সময় বাইরে পাহারায় থাকত শিক্ষিকা রেবা খানম। বিষয়টি কাউকে জানালে তাকে (ছাত্রী) প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়া হয়। গর্ভবতী হওয়ার চার মাস পর বিষয়টি ওই ছাত্রীর মা বুঝতে পেরে মেয়েকে জিজ্ঞাসা করলে সে তার মায়ের কাছে সব খুলে বলে। এরপর ভোজমহল গ্রামের দরিদ্র পরিবারের সন্তান ওই ছাত্রীর মা স্কুলে গিয়ে সকল শিক্ষকের কাছে বিষয়টি জানালে তারা তাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে জানাজানি হলে প্রতিবেশী জুয়েল হাওলাদার ও রনি বাসায় ঢুকে ওই ছাত্রীকে আবার ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় নির্যাতিতার মা প্রতিবাদ করায় তাকে মারধর করা হয়। পরবর্তীতে উল্লেখিত ঘটনায় গত ২২ আগস্ট ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে বাকেরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। নির্যাতিতার মা অভিযোগ করেন, স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপের মুখে ধর্ষণকারী শিক্ষক, রনি ও সহায়তাকারী শিক্ষিকার নাম মামলা থেকে বাদ দিতে বাধ্য হয়েছে পুলিশ। নির্যাতিতা ওই শিশু চার ভাইবোনের মধ্যে ছোট। তার মা গৃহকর্মীর কাজ করেন এবং বাবা শাক তুলে বিক্রি করেন।
×