ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পার্থে বিপদে নিউজিল্যান্ড

লাবুশানের ব্যাটে রানের ফোয়ারা

প্রকাশিত: ১১:৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯

 লাবুশানের ব্যাটে রানের ফোয়ারা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মার্নাস লাবুশানের ছোট্ট ক্যারিয়ারটাকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। এ্যাশেজের আগে এবং পারে। লর্ডসে মাথায় আঘাত পেয়ে স্টিভেন স্মিথ ছিটকে গেলে কনকাশন বদলি হিসেবে সুযোগ পান। পাওয়া সুযোগের এমন ব্যবহার ক্রিকেটের ইতিহাসে খুব কমই আছে। ব্যাট হাতে রানের বন্যা বইয়ে দিয়ে চলেছেন ২৫ বছর বয়সী টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান। শেষ দশ ইনিংসে চার হাফ সেঞ্চুরি, সেঞ্চুরি তিনটি। তিন সেঞ্চুরির তিনটিই আবার ‘ব্যাক টু ব্যাক’। পার্থে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৪৩ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস। অলআউট হওয়ার আগে তার দল অসিরা গড়েছে ৪১৬ রানের বড় স্কোর। জবাবে শুক্রবার দ্বিতীয়দিন শেষে ১০৯ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে ভীষণ বিপদে নিউজিল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের মাত্র অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে টানা তিন টেস্টে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে রেকর্ড বইয়ে জায়গা করে নিয়েছেন লাবুশানে। যিনি বছর শুরু করেছিলেন র‌্যাঙ্কিংয়ের ১১০ নম্বরে থেকে সেই তিনি এখন ৮ নম্বরে, স্বপ্নের ফর্ম বুঝি একেই বলে। গ্যাবায় পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে ১৮৫ রানের পর এ্যাডিলেডে ডে-নাইট টেস্টে ১৬২। পার্থে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে প্রথমদিন শেষ করেন অপরাজিত ১১০ রানে। তাতে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ইতিহাসে মাত্র অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে টানা তিন সেঞ্চুরির কৃতিত্ব দেখালেন লাবুশানে। সর্বশেষ ২০১৫-১৬ মৌসুমে এমনটা করে দেখিয়েছিলেন এ্যাডাম ভোজেস। তিন নম্বরে নেমে টানা তিন সেঞ্চুরি হাঁকানো লাবুশানে ১২ টেস্টে পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস খেলেছেন ৮টি। অস্ট্রেলিয়ার ফক্স স্পোর্টস লিখেছে ‘ও যেন স্মিথ ভার্সন-২।’ তবে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ১৮ ইনিংসের পরিসংখ্যানে স্মিথের চেয়েও ভাল লাবুশানে। প্রথম ১ হাজার রান করতে স্মিথের লেগেছিল ৩৩ ইনিংস। তার চেয়ে ১৬ ইনিংস কম লাগল লাবুশানের। পরশু লাবুশানে ব্যক্তিগত ৯০ রানের সময়ই এক হাজারি ক্লাবে নাম লেখান। এ তালিকায় সবার আগে স্যার ডন ব্র্যাডম্যান (১৩), এরপর রয়েছেন নিল হার্ভে (১৪), সিড বার্নস (১৭)। ১০০০ ছুঁতে লাবুশানে, হার্ব কলিনস, ডাগ ওয়াল্টার্স, মার্ক টেলর ও এ্যাডাম ভোজেস প্রত্যেকের লেগেছিল ১৮ ইনিংস। ১১০ রান নিয়ে এদিন দিন শুরু করা লাবুশানে ১৪৩ রানে নেইল ওয়েগনারের বলে বোল্ড হন। ২২৪ বলের ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ১৮ চার ও ১টি ছক্কা দিয়ে। লাবুশানে টেস্ট ইতিহাসের নবম ব্যাটসম্যান যিনি ক্যারিয়ারের প্রথম তিন সেঞ্চুরির তিনটিকেই ১৪০-এর ওপরে নিয়ে গেছেন। তালিকায় অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে আছেন স্মিথ ও শন মার্শ। এ্যাশেজে লর্ডসে স্মিথের বদলি হিসেবে নামার আগে এ বছর পাঁচ ইনিংসে ছিল একটিমাত্র হাফ সেঞ্চুরি, ক্যারিয়ার নিয়েই তৈরি হয়েছিল শঙ্কা। সেই তিনি এখন রানের বন্যা বইয়ে দিয়ে চলেছেন। উসমান খাজা-শন মার্শের মতো প্রতিষ্ঠিতরাও তাই আর দলে জায়গা পাচ্ছেন না। ২০১৯ সালে টেস্টে তিনটি সেঞ্চুরি পাওয়া পঞ্চম ব্যাটসম্যান লাবুশানে। অপর চারজন হলেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল, টম লাথাম, রোহিত শর্মা ও স্টিভেন স্মিথ। ২০১৮’র অক্টোবরে অভিষেক হওয়া লাবুশানে ১২ টেস্টের ১৮ ইনিংসে করেছেন ১০৫৩ রান। এর মধ্যে চলতি বছর ১৪ ইনিংসেই ৯৩৯। গড় ৭২.৩২। সেঞ্চুরি ৩ ও হাফ সেঞ্চুরি ৫টি। ৪৩, ৪৩ ও ৫৬ রান করে পার্থে প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার বড় সংগ্রহে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথ আর ট্রাভিস হেড। সফরকারী কিউইদের হয়ে ৪টি করে উইকেট নিয়েছেন দুই পেসার টিম সাউদি ও নেইল ওয়েগনার। জবাবে দলীয় ১ রানের মধ্যে ২ এবং ৭৭ রানে ৩ ও ৯৭ রানে ৫ উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ডের হয়ে ধ্বংস্তূপে দাঁড়িয়ে একাই লড়ে যাচ্ছেন অভিজ্ঞ রস টেইলর (৬৬*)। স্টার্ক নিয়েছেন ৪ উইকেট। স্কোর ॥ অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস- ৪১৬/১০ (১৪৬.২ ওভার; ওয়ার্নার ৪৩, লাবুশানে ১৪৩, স্মিথ ৪৩, হেড ৫৬, পেইন ৩৯ ; সাউদি ৪/৯৩ ওয়েগনার ৪/৯২)। নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস- ১০৯/৫ (৩২ ওভার; রাভাল ১, লাথাম ০, উইলিয়ামসন ৩৪, টেইলর ৬৬*, নিকোলস ৭, ওয়েগনার ০, ওয়াটলিং ০*: স্টার্ক ৪/৩১)। ** দ্বিতীয়দিন শেষে
×