ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সিলেট থান্ডারকে উড়িয়ে দিল রাজশাহী রয়্যালস

প্রকাশিত: ১১:২৯, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯

সিলেট থান্ডারকে উড়িয়ে দিল রাজশাহী রয়্যালস

মিথুন আশরাফ ॥ খেলা টি২০। ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিংই সবার দেখার আশা। চার-ছক্কা দেখতেই স্টেডিয়ামে আসেন দর্শকরা। অথচ সিলেট থান্ডারের ব্যাটসম্যানরা কিনা টানা ৪৭ বলে কোন বাউন্ডারিই হাঁকাতে পারেননি। আশ্চর্যজনকই। এমন হলে কী আর বড় স্কোর গড়া কিংবা ম্যাচ জেতা যায়? অঘটন না ঘটলে কখনই না। রাজশাহী রয়্যালসের কাছে সিলেট তাই উড়েই গেল। সিলেট ৯২ রানের টার্গেট দেয়ার পর ১০.৫ ওভারেই ৮ উইকেটে ম্যাচ জিতে যায় রাজশাহী। ৫৫ বল বাকি থাকতেই সিলেটকে উড়িয়ে দিল রাজশাহী। প্রথম ম্যাচে ঢাকা প্লাটুনের বিরুদ্ধে হযরতুল্লাহ জাজাই অপরাজিত ৫৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন। তাতে সহজেই ম্যাচ জিতে রাজশাহী রয়্যালস। ঢাকাকে পাত্তাই দেয়নি। দ্বিতীয় ম্যাচেই জাজাই রানের খাতা খোলার আগেই আউট হয়ে যান। তাতে অবশ্য কোন সমস্যাই হয়নি। সিলেট এতটাই কম রান করেছে যে লিটন কুমার দাস ও আফিফ হোসেন ধ্রুব মিলেই ম্যাচ জেতানোর অবস্থায় চলে যান। কিন্তু দলের যখন ৬২ রান হয় তখন আফিফ হোসেন ধ্রুব (৩০) আউট হয়ে যান। আর কোন উইকেট শিকার করে নিতে পারেননি সিলেট বোলাররা। লিটন (২৬ বলে অপরাজিত ৪৪ রান) ও শোয়েব মালিক (১৬*) মিলে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ২ উইকেট হারিয়ে ১০.৫ ওভারে ৯৫ রান করেই জিতে যায় রাজশাহী। সিলেট থান্ডারের শুরুটা হয় দুর্দান্ত। ২ ওভারেই দুই ওপেনার রনি তালুকদার ও জনসন চার্লস ২০ রান তুলে ফেলেন। দলের ২০ রানে ৯ রানে থাকা রনি তালুকদার ক্যাচ আউট হওয়া থেকে বাঁচেন। তবে দলের ৩৫ রানের সময় আন্দ্রে রাসেলের বলে রিভিউ নিয়েও এলবিডব্লিউ হওয়া থেকে বাঁচতে পারেননি রনি (১৯)। শুরু হয়ে যায় পতন। রনি আউটের পর যেন সিলেট ব্যাটসম্যানদের ওপর জেঁকে বসেন রাজশাহী বোলাররা। অলক কাপালী তো বুড়ো বয়সে ভেল্কি দেখান। প্রথম ওভার করতে এসেই শেষ দুই বলে চার্লস (১৬) ও জীবন মেন্ডিসকে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরিয়ে সিলেট ইনিংসের মাজা ভেঙ্গে দেন। হ্যাটট্রিকের আশা জাগিয়েও তা করতে পারেননি কাপালী। তবে সিলেট ইনিংসে ধস নামিয়ে দেন। তাতে করে ৪১ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে সিলেট। মোহাম্মদ মিঠুন ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত মিলে দলকে ভালই এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। টি২০ বাউন্ডারির খেলা। সেই বাউন্ডারি দেখা না মিললেও দুইজন দলকে ধীরে ধীরে এগিয়ে নিয়ে যান। ৭২ রানেও চলে যায় দল। কিন্তু এমন সময়েই মিঠুনকে (২০) আউট করে দেন বোপারা। একটি বড় জুটির সম্ভাবনা দেখা যেতে থাকে। কিন্তু বোপারা তা হতে দেননি। ১০ ওভারেই ৭২ রান করে ফেলা সিলেট আবার একটু থমকে যায়। অষ্টম ওভারের চতুর্থ বলের পর থেকে ১৬তম ওভারের তৃতীয় বল পর্যন্ত বাউন্ডারির দেখা মিলেনি। আবার ৭টি উইকেটও হারায় সিলেট। এরপর আর বাউন্ডারি মারার সুযোগও মিলেনি। উইকেটই যে থাকেনি। দলের ৮১ রান হতেই মোসাদ্দেককে (২০) আউট করে দেন বোপারা। কাজের কাজটি করে দেন। আর ৮৭ রানের সময় টানা তিনটি উইকেট হারিয়ে তো সিলেট মহাবিপদেই পড়ে যায়। ১০০ রান স্কোরবোর্ডে জমা হবে কিনা সেই শঙ্কা জাগে। দলের ৮৭ রানে ১৪তম ওভারে ফরহাদ রেজা অসাধারণ বোলিং করে নাজমুল হোসেন মিলন (১০) ও নাঈম হাসানকে (১) আউট করে দেন। ওভারের শেষ বলে সান্টোকি (০) আবার রান আউটও হন। কাপালী আবার বোলিংয়ে ফিরেই নাজমুল ইসলাম অপুকে আউট করে দেন। ৯১ রানে গিয়ে যখন নবিন উল হকও রান আউট হন তখন অলআউট হয়ে যায় সিলেট। এত কম রান নিয়ে কী আর জেতা সম্ভব? হারই হয় নিয়তি। টানা দুই ম্যাচে হারে সিলেট। আর সিলেটকে উড়িয়ে দিয়ে টানা দুই ম্যাচে জয় তুলে নেয় রাজশাহী রয়্যালস। স্কোর ॥ রাজশাহী রয়্যালস-সিলেট থান্ডার ম্যাচ- মিরপুর টস ॥ রাজশাহী রয়্যালস (ফিল্ডিং)। সিলেট থান্ডার ইনিংস ৯১/১০; ১৫.৩ ওভার; রনি ১৯, চার্লস ১৬, মিঠুন ২০, মেন্ডিস ০, মোসাদ্দেক ২০, মিলন ১০, নাঈম ১, নবিন ২, সান্টোকি ০, নাজমুল ০, এবাদত ১*; কাপালী ৩/১৭, ফরহাদ ২/৯, বোপারা ২/১০। রাজশাহী রয়্যালস ইনিংস- ৯৫/২; ১০.৫ ওভার; জাজাই ০, লিটন ৪৪*, আফিফ ৩০, মালিক ১৬*; নাঈম ১/১৬। ফল ॥ রাজশাহী রয়্যালস ৮ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসরা ॥ অলক কাপালী (রাজশাহী রয়্যালস)।
×