ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ন্যাটো সম্মেলনে ইঙ্গিত স্পষ্ট

বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব ক্রমাগত কমছে

প্রকাশিত: ০৮:৫৩, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯

 বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব ক্রমাগত  কমছে

ন্যাটো সম্মেলনের সময় সভাকক্ষগুলোয় একটা গুঞ্জন এবং একটা উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে চীনের শক্তির বলয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান সহযোগী দেশগুলোর রাজধানীতে এটা এক পরিতাপের বিষয় হয়ে উঠেছে এবং ক্রেমলিনের কাছে হয়ে উঠেছে এক প্রীতিকর বিষয়। ডোনাল্ড ট্রাম্পের তিন বছরের শাসনে আমেরিকার বৈশ্বিক প্রভাব হ্রাস পেয়েছে। বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক পররাষ্ট্র কর্মকর্তা ও বিদ্বজনরা এপির সঙ্গে সাক্ষাতকারে একে এক পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক নিয়ম বলে উল্লেখ করেন এবং এতে য্ক্তুরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ভূমিকা বড় একটা নেই বলে তারা বলেন। এপি। অনেক দিক থেকে হোয়াইট হাউসের একটি বিষয় বেশ চমৎকার। ট্রাম্প ‘আমেরিকার প্রথম’ পররাষ্ট্র নীতির ওপর প্রচার চালিয়েছেন এবং বলেছেন, একটি শক্তিশালী যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ হচ্ছে একটি শক্তিশালী বিশ্ব। ট্রাম্প সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বলেছেন, ভবিষ্যত বৈশ্বিকবাদীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়, সংশ্লিষ্ট দেশপ্রেমের সঙ্গে। ট্রাম্প দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও কল্যাণকরের জন্য বৈশ্বিকতা পরিত্যাগ করছেন। কিন্তু তার ইঙ্গিত নেই বললেই চলে। যুক্তরাষ্ট্রের এক সময়ের সহযোগী ফ্রান্স, মিসর, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, মেক্সিকো, তুরস্ক, জার্মানি ও অন্যান্য দেশ গত তিন বছরে ওয়াশিংটনের কাছ থেকে নীরবে দূরে সরে গেছে। কখনও কখনও ততটা নীরবে নয়, সম্প্রতি ন্যাটো শীর্ষ বৈঠকে বাকিংহাম প্রাসাদে অভ্যর্থনা কক্ষে কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো যখন ট্রাম্পের প্রতি পরিহাস ছুড়ে দিচ্ছিলেন তখন ইউরোপীয় নেতাদের একঝলক ভেংচি কাটা হাসিবন্দী করা হয়েছে টিভি ক্যামেরায়। ট্রুডো বলছিলেন, এখানটায় আপনারা কেবল তার টিমের আকস্মিক বিস্ময়, দুঃখ বা নৈরাশ্য দেখছেন। তিনি দৃশ্যত ট্রাম্পের সঙ্গে তার বৈঠক সম্পর্কে ফ্রান্স, ব্রিটেন ও লেদারল্যান্ডসের একটি গ্রুপের সঙ্গে কথা বলছিলেন। ট্রডো ওই সময় ত্বরিত তার কথার মোড় ঘুরিয়ে রিপোর্টারদের বলেন, ট্রাম্প ও তার মধ্যে ভাল এবং গঠনমূলক সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু ফুটেজে যুক্তরাষ্ট্র ও এর সহযোগীদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিভক্তি তুলে ধরা হয়েছে। এটা এক বহু ধরনের পরিবর্তন। আমেরিকা নিজেকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বিশ্বের মধ্যমনি হিসেবে দেখছে। ভাল বা মন্দ যাই হোক না কেন, বিশ্বের বাকি অংশ যুক্তরাষ্ট্রকে এক অতিকায় শক্তি হিসেবে দেখে। এর ওপর শ্রদ্ধা রয়েছে, ভীতি রয়েছে এবং সমস্যা সমাধানের জন্য দেশটির দিকে মোড় নেয়। ক্লিন্টন প্রশাসনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাডেলিক অলব্রাইট বলেন, আমরা আমেরিকা, আমরা অপরিহার্য দেশ। এটি নিশ্চিত, আমেরিকা বিশ্বে এখনও পরাশক্তি। কিন্তু এখন দেশটির হ্রাসমান প্রভাবের কারণে ভূরাজনৈতিক মানচিত্র ব্যাপকভাবে নতুন করে অঙ্কিত হচ্ছে।
×