ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এবার পাঁচ মঞ্চে সাংস্কৃতিক জোটের বিজয় উৎসব শুরু আজ

প্রকাশিত: ১১:১৭, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯

এবার পাঁচ মঞ্চে সাংস্কৃতিক জোটের বিজয় উৎসব শুরু আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশব্যাপী সাংস্কৃতিক জাগরণের প্রত্যয়ে অনুষ্ঠিত হবে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত বিজয় উৎসব। ‘বিজয়ের অঙ্গীকার সাংস্কৃতিক অধিকার’ সেøাগানে নব সাংস্কৃতিক আন্দোলনের আহ্বানে আজ শুক্রবার থেকে শুরু হবে এই উৎসব। বিকেল সাড়ে তিনটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের চার দিনব্যাপী উৎসব উদ্বোধন করবেন ভাষাসংগ্রামী জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় সঙ্গীত ও মুক্তিযুদ্ধের গান পরিবেশন করবে বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদ। উদ্বোধনী নৃত্য পরিবেশন করবে স্পন্দন। শহীদ মিনার থেকে শুরু হওয়া উনত্রিশতম উৎসবটি ছড়িয়ে যাবে রাজধানীর নানা প্রান্তের আরও চারটি মঞ্চে। শনিবার থেকে ধানম-ির রবীন্দ্র সরোবর, রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ, মিরপুর ও দনিয়ায় মঞ্চে সূচনা হবে উৎসবের। সব মিলিয়ে ১২৫টি সাংস্কৃতিক সংগঠনের আড়াই হাজার শিল্পী অংশ নেবেন আয়োজনে। গানের সুরে, কবিতার ছন্দে, নৃত্যের নান্দনিকতায়, পথনাটকের পরিবেশনায় এবং শিশু সংগঠনের পরিবেশনায় বর্ণিল হবে এবারের উৎসব। থাকবে স্বাধীন বাংলা বেতারের শিল্পীদের সঙ্গীত পরিবেশনা। সঙ্গীত ও আবৃত্তিতে থাকবে একক এবং সম্মেলক পরিবেশনা। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত পাঁচ মঞ্চে চলবে পরিবেশনা পর্ব। প্রতিবছরের মতো এবারও বিজয় দিবসের দিন সকাল সাড়ে দশটায় ঢাকা শহীদ মিনার থেকে বের করা হবে বর্ণাঢ্য বিজয় শোভাযাত্রা। এছাড়াও ১৪ ডিসেম্বর বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের বিশেষ আলোচনা। বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সাংস্কৃতিক জোট কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বিজয় উৎসবের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে উৎসবের বাইরে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মুক্তিযুদ্ধেও গান না থাকায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জোটের সভাপতি গোলাম ক্দ্দুুছ। উৎসবসংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলেন জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ, দুই সহ-সভাপতি গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীর ও নাট্যশিল্পী ঝুনা চৌধুরী, দফতর সম্পাদক ফয়জুল আলম পাপ্পু, আবৃত্তিশিল্পী রেজিনা ওয়ালী লীনা, শহীদ মিনার মঞ্চের আহ্বায়ক মানজার চৌধুরী সুইট প্রমুখ। গোলাম কুদ্দুছ বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপনের প্রাক্কালে অনুষ্ঠিত এবারের বিজয় উৎসবের সেøাগান ‘বিজয়ের অঙ্গীকার সাংস্কৃতিক অধিকার’। আর এবারের স্লোগান শুধুমাত্র উৎসব সজ্জার বিষয় নয়Ñএর মাঝে নিহিত রয়েছে নব সাংস্কৃতিক আন্দোলন সূচনার ইঙ্গিত। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের পথ ধরে জীবন যাপন করতে পারাটাই হচ্ছে সাংস্কৃতিক অধিকার। ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বিকশিত হয়েছে বাঙালীর জাতিসত্তা। আর এই বাঙালীর জাতিরাষ্ট্রের মূল ভিত্তি হচ্ছে সংস্কৃতি। অথচ সেই সংস্কৃতিচর্চা বৃত্তবন্দী হয়েছে কেবলমাত্র রাজধানীসহ কয়েকটি শহরে। উপজেলা কিংবা গ্রামপর্যায়ে সংস্কৃতিচর্চা একেবারেই হচ্ছে না। বঙ্গবন্ধু বিপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সমালোচনা করে হাসান আরিফ বলেন, মাঠে-ঘাটের শিল্পীরাই এ দেশে সংস্কৃতির শেকড়। অথচ বিজয়ের মাসে বঙ্গবন্ধুর নামের উৎসর্গকৃত বিপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শোনা গেল না কোন মুক্তিযুদ্ধের গান। এই দেশে কি শিল্পীদের এতটাই অভাব? ওই অনুষ্ঠানে আধুনিকতার নামে অপসংস্কৃতি দেখতে হলো আমাদের। ভারতীয় দুই নায়ক-নায়িকার নাচ দেখতে খরচ করা হলো ২৬ কোটি টাকা। অথচ ওই দেশের কোন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানেও এই শিল্পীদের রাখা হয় না। এমন বাস্তবতায় এ উৎসবের মাধ্যমে আমরা নতুন সাংস্কৃতিক আন্দোলনের ডাক দিচ্ছি। বৃত্তবন্দী সংস্কৃতিকে প্রান্তিকে ছড়িয়ে দেয়াই হবে এ আন্দোলনের লক্ষ্য। সেই সাংস্কৃতিক জাগরণে প্রতিবন্ধকতা এলেও আর পিছু হটবো না।
×