ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

গুরবাজ, রুশো ও মুশফিকের ব্যাটিং নৈপূণ্যে ১৪ ওভারেই খেলা শেষ

চট্টগ্রামকে সহজেই হারাল খুলনা

প্রকাশিত: ১১:০৬, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯

চট্টগ্রামকে সহজেই হারাল খুলনা

মিথুন আশরাফ ॥ চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে পাত্তাই দিল না খুলনা টাইগার্স। রহমানুল্লাহ গুরবাজের (৫০) ঝড়ো ব্যাটিংয়ের সঙ্গে রাইলি রুশোর (৬৪) অসাধারণ ব্যাটিংয়ে ৮ উইকেটে জিতল খুলনা। বঙ্গবন্ধু বিপিএলে শুভ সূচনাও করল খুলনা। চট্টগ্রামের ছুড়ে দেওয়া ১৪৫ রানের টার্গেট ১৩.৫ ওভারেই করে ফেলে খুলনা। শুরুতেই ওপেনার নাজমুল হাসান শান্ত (৪) আউট হয়ে যান। প্রথম ওভারেই শান্ত সাজঘরে ফেরেন। রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও রাইলি রুশো মিলে এরপর ৭০ রানের জুটি গড়েন। দ্রুত রান তুলতে থাকেন। ৫০ রানের জুটি গড়ার সঙ্গে ৬ ওভারেই ৭৪ রান হয়ে যায়। গুরবাজ এমনই ধুমধারাক্কা ব্যাটিং করেন ১৮ বলেই হাফসেঞ্চুরি করে ফেলেন। পরের বলেই অবশ্য আউট হয়ে যান। তবে ৪ চার ও ৫ ছক্কায় মাতিয়ে রাখেন। ষষ্ঠ ওভারে গিয়ে মুক্তার আলীর বলে আউট হন। এই ওভারটিতেই আউট হওয়ার আগে দুই ছক্কা ও দুই চারে ২০ রান নেন গুরবাজ। বিপিএল ইতিহাসে আহমেদ শেহজাদের (১৬ বলে হাফসেঞ্চুরি, ২০১২ সাল) পর দ্বিতীয় দ্রুততম হাফসেঞ্চুরি করেন গুরবাজ। রান যে গতিতে এগিয়ে যেতে থাকে, তাতে কয়েক ওভার হাতে রেখেই খুলনা টাইগার্সের জিতে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা হয়। গুরবাজ আউট হলেও রানের চাকা সচলই থাকে। রুশো আর মুশফিক মিলে স্কোরবোর্ডে রান যুক্ত করতে থাকেন। ১০ ওভারে ১০০ রানও স্কোরবোর্ডে জমা হয়ে যায়। ৩২ বলে গিয়ে রুশোও হাফসেঞ্চুরি করে ফেলেন। দুইজন মিলে ৫০ রানের জুটিও গড়ে ফেলেন। ৩৭ বল বাকি থাকতে ম্যাচ জিতিয়েও বের হন। ১৪৬ রান করে জিতে খুলনা। রুশো ৩৮ বলে অপরাজিত ৬৪ রান করেন। মুশফিক ২২ বলে ২৮ রান করেন। দুইজনের জুটি ৭২ রান স্কোরবোর্ডে জমা করে। আসরের প্রথম ম্যাচেই চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স জিতেছিল। প্রথম দিন সিলেট থান্ডারের বিরুদ্ধে জয় পাওয়ার পর আসরের দ্বিতীয়দিনই আবার খুলনা টাইগার্সের বিরুদ্ধে খেলতে নামে চট্টগ্রাম। খুলনা টস জিতে চট্টগ্রামকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠায়। দ্বিতীয় ম্যাচেও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ খেলতে পারেননি। তবে দুই ওপেনার লেন্ডল সিমন্স ও চাডউইক ওয়ালটন শুরুটা ভালভাবেই করেন। ছয় ওভার পর্যন্ত অসাধারণ ব্যাটিং করেন দুইজনই। কিন্তু সপ্তম ওভারেই শফিউল ইসলামের বোলিংয়ে বোল্ড হয়ে যান সিমন্স। দলের ৪৫ রান হতেই ২৩ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় ২৬ রান করে আউট হয়ে যান সিমন্স। সিমন্স আউট হতেই চাডউইকও টিকে থাকতে পারেননি। দলের স্কোরবোর্ডে ৪ রান যোগ হতেই শহিদুল ইসলামের বলে চাডউইক (১৮) সাজঘরে ফেরেন। দুই ওপেনারকে হারিয়ে চট্টগ্রামও একটু বিপদে পড়ে যায়। ইমরুল কায়েস প্রথম ম্যাচের মত খেলার ইঙ্গিত দেন। শহিদুল ইসলামের একটি বলে ছক্কাও হাকান। ১০ ওভারে ৬০ রান করে ফেলে চট্টগ্রাম। কিন্তু যেই দলের রান ৬৪ রান হয়, রান আউট হয়ে যান ইমরুল (১২)। যখন তার উইকেটে থাকা দরকার, তখন সাজঘরে ফেরেন। চাপে পড়ে যায় চট্টগ্রাম। দলের ৬৫ রানের সময় ১ রানে থাকা নুরুল হাসান সোহান রান আউট হওয়া থেকে বাচেন। নয়ত চার উইকেট ততক্ষনে পড়ে যেত। সোহান আউট হওয়া থেকে বাচার সুযোগটি কাজে লাগানোর চেষ্টাও করেন। নাসির হোসেনের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ৩৭ রানের জুটিও গড়েন। এ জুটিই দলকে এগিয়ে নিয়ে যায়। দুইজনই দলকে ১০১ রানে নিয়ে যান। এমন মুহুর্তে গিয়ে রান আউট হয়ে যান সোহান (১৯)। ৮ রান যোগ হতেই নাসিরও (২৪) সাজঘরে ফিরেন। খুলনা বোলাররা এতটাই চাপ তৈরী করেন রানের গতি কম থাকে। দলের ১১৮ রানে গিয়ে যখন রায়াদ এমরিটও (১) আউট হয়ে যান, তখন স্কোরবোর্ড যে মজবুত হবে না, বোঝা হয়ে যায়। ছয় নম্বর ব্যাটিং পজিশনে নেমে মুক্তার আলী যদি ১৪ বলে ৪ ছক্কায় ২৯ রানের ইনিংসটি না খেলতেন, তাহলে ১৪৪ রান হত না চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের। মুক্তারই শেষপর্যন্ত ম্যাচটিতে চট্টগ্রামের ইনিংসের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর গড়েন। তবে এত কম রান হয় যে খুলনা ব্যাটসম্যানদের সামনে তা চাপই হয়ে উঠতে পারেনি। আর তাই খুলনা সহজে জয়ও তুলে নেয়। চট্টগ্রামকে হারের স্বাদ দিয়ে লীগে শুভ সূচনাও করে খুলনা। স্কোর ॥ চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স-খুলনা টাইগার্স ম্যাচ-মিরপুর টস ॥ খুলনা টাইগার্স (ফিল্ডিং)। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ইনিংস ১৪৪/৬; ২০ ওভার; সিমন্স ২৬, চাডউইক ১৮, ইমরুল ১২, নাসির ২৪, সোহান ১৯, মুক্তার ২৯*, এমরিট ১, রুবেল ৬*; ফ্রাইলিংক ১/২১। খুলনা টাইগার্স ইনিংস ১৪৬/২; ১৩.৫ ওভার; শান্ত ৪, গুরবাজ ৫০, রুশো ৬৪*, মুশফিক ২৮*; নাসুম ১/১৮। ফল ॥ খুলনা টাইগার্স ৮ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ রাইলি রুশো (খুলনা)।
×