ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জানুয়ারি থেকে নবেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ২২ হাজারের বেশি অগ্নিদুর্ঘটনা;###;ছোট বড় ভবন বা স্থাপনা নির্মাণে অগ্নি প্রতিরোধের আইনের প্রতি তোয়াক্কা নেই কারও

২৩ বছরে সর্বোচ্চ ॥ অগ্নিকাণ্ডের রেকর্ড

প্রকাশিত: ১১:১৮, ১২ ডিসেম্বর ২০১৯

২৩ বছরে সর্বোচ্চ ॥ অগ্নিকাণ্ডের রেকর্ড

মশিউর রহমান খান ॥ দেশে ভয়ানক আকারে বেড়ে চলেছে অগ্নি দুর্ঘটনা। সামগ্রিক উন্নয়নের পাশাপাশি প্রতিনিয়তই ঘটে যাওয়া নানা দুর্ঘটনা আগের বছরের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। গত দুই যুগে অগ্নি দুর্ঘটনার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের তথ্যমতে, শুধুমাত্র চলতি বছরের প্রথম এগারো মাসে সারাদেশে অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটেছে ২২ হাজারেরও বেশি। হিসাব অনুযায়ী যা গত ২৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এসব অগ্নি দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ২শ’ কোটি টাকারও বেশি সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। যা একটি সভ্য দেশে কোনক্রমেই কাম্য নয়। সূত্র জানায়, ১৯৯৬ সালে ৫ হাজার ৩৭৬টি অগ্নি দুর্ঘটনায় আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৬৩ কোটি টাকা। এর ১৩ বছর পর ২০০৯ সালে তা দাঁড়ায় ১২ হাজার ১৮২টিতে। এসব অগ্নিকাণ্ডে ১১৮ জন নিহত হন। এর প্রায় ১০ বছর পর ২০১৯ সালের প্রথম ১১ মাসে ২২ হাজার ২৮৩টি অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটে। যা সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। ফায়ার সার্ভিসের তথ্যে, শহর ও গ্রামে যত্রতত্র অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ ও পুরনো বৈদ্যুতিক সংযোগ হালনাগাদ না করা, জনসচেতনতা না থাকা, সরকারের ফায়ার আইন কার্যকরে বাধা ও চলমান আইনের নানা ত্রুটির উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া অগ্নি দুর্ঘটনায় আইন থাকলেও কোন আইন ভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে মামলা করার ক্ষমতা পর্যন্ত নেই সংস্থাটির। শুধুমাত্র নোটিস দিয়েই সতর্ক করা ছাড়া আর কোন কিছু করতে পারেন না ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। যা অনেকটা কাগুজে আইনের মতো। ফলে মানুষজনই অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটার আগ পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিস কর্মরতদের কোন নির্দেশ ও উপদেশই মানতে তেমন একটা আগ্রহ দেখান না। বাস্তবে দেখা গেছে, আগুন লাগলেই তা অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশের শহর বা গ্রামের নাগরিকদের ব্যবহার্য জিনিসের ব্যাপক পরিবর্তন হওয়ায় খুবই কম সময়ে আগুন নেভাতে পারছেন না ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। যা আতঙ্কের বটে। এক সময় নাগরিকরা কাঠের তৈরি জিনিসপত্র ব্যবহার করতেন। ফলে আগুন লাগলে পানি ছিটানোর সঙ্গে সঙ্গেই আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো। বর্তমানে অতি আধুনিক পদার্থের তৈরি আসবাব ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ব্যবহার করছেন নাগরিকগণ। ফলে আগুন লাগলে ফোম দিয়েও আগুণ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হচ্ছেন না অগ্নি নির্বাপক কর্মীরা। অগ্নি দুর্ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিরোধ করতে অতি উন্নতমানের আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন যন্ত্রপাতি আনা এবং দেশে ও বিদেশে প্রশিক্ষণ দিয়েও কোনক্রমেই অগ্নি দুর্ঘটনা রোধ ও ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ কমাতে পারছে না সংস্থাটি। ১৯৯৬ সালের পর থেকে বিগত যে কোন সময়ের তুলনায় চলতি বছরে অগ্নি দুর্ঘটনা ভয়াবহ আকারে বেড়ে যাওয়ার পেছনে সরকারী সংস্থাটির সক্ষমতার অভাবও অনেকটা দায়ী। ফায়ার সার্ভিসের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের নবেম্বর পর্যন্ত ছোট-বড় মোট ২২ হাজার ২৮৩টি অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে সবচেয়ে বেশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে যার সংখ্যা ৩ হাজার ১৭৭টি। এগারো মাসের অগ্নি দুর্ঘটনায় আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ২০৩ কোটি ৯২ লাখ ৭৬ হাজার ৩১৫ টাকার। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের চেষ্টায় ১ হাজার ৬৯৪ কোটি ৫২ লাখ ২০ হাজার ১২০ টাকার সম্পদ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে অগ্নি, সড়ক, নৌ এবং অন্যান্য দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ১৩৮ জন। আহত হয়েছেন প্রায় ১৪ হাজার ৯৩২ জন। চলতি বছরের অগ্নি দুর্ঘটনার মধ্যে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান মোট ৭১ জন মানুষ। এতে সাতটি আবাসিক ভবন ও চুড়িহাট্টা মসজিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। আগুনের ওই ঘটনা তদন্তে দেখা যায়, ওয়াহেদ ম্যানশনের ২য় তলার কক্ষগুলোতে অসংখ্য বডিস্প্রে এবং পারফিউমের ক্যান জমা থাকায় লিকেজ বা সিপেজের কারণে বডি স্প্রে ও পারফিউমের দাহ্য বাষ্প ওই রুমে জমা হয়। পারফিউম বা বডিস্প্রে, এয়ার ফ্রেশনারের ক্যান থেকে বিউটেন, আইসোবিউটেন বা রেকটিফাইড স্পিরিট কোন কারণে নিঃসৃত হয়ে বাতাসের সঙ্গে মিশে বিস্ফোরক মিশ্রণ তৈরি হয়। ভবনটির নিচতলায় পলিবেগ সিল মেশিনের কাজের সময় সৃষ্ট তাপে বা কোন কারণে ইলেকট্রিক স্পার্ক থেকে দোতলার বিস্ফোরক মিশ্রণের সংস্পর্শে এলে পর্যায়ক্রমে পারফিউমের ক্যানগুলো বিস্ফোরিত হতে থাকে। এ সময় ওয়াহেদ ম্যানশনের নিচতলায় থাকা প্লাস্টিকের দানার গোডাউনে ওই আগুন ছড়িয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করে। যার পরিণামে মোট ৭১ জনের মৃত্যু ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের হিসাব মতে, ১৯৯৬ সালে সারাদেশে মোট ৫ হাজার ৩৭৬টি অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটে। যার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৬৩ কোটি টাকা। এরপর পর্যায়ক্রমে ১৯৯৭ সালে ৫ হাজার ৮০২টি, ১৯৯৮ সালে ৫ হাজার ৩টি, ১৯৯৯ সালে ৫ হাজার ২০৭টি অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটে। এছাড়া ২০০০ সালে ৫ হাজার ৩১৫টি, ২০০১ সালে ৫ হাজার ৯৭১টি, ২০০২ সালে ৫ হাজার ৪০৪টি অপরদিকে ২০০৩ সালে তা বেড়ে গিয়ে ৬ হাজার ২৮৯ টি, পরের বছর ২০০৪ সালে তা আরও বেড়ে গিয়ে ৭ হাজার ১৪০টিতে দাঁড়ায়। কিন্তু এর পরের বছর ২০০৫ সালে ৫ হাজার ৪৭৫টি অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটে। তবে এই দশ বছরে অগ্নি দুর্ঘটনায় হতাহতের কোন তথ্য দিতে পারেনি সংস্থাটি। পরবর্তীতে ২০০৬ সালে ৯ হাজার ৫৪২টি অগ্নি দুর্ঘটনায় আহত ৮৭৩ জন, নিহত ৯১ জন। একই বছর আহত হন ৪৮ জন ও আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে গিয়ে প্রাণ হারান একজন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী। ২০০৭ সালে ৯ হাজার ১৯৬টি অগ্নিকাণ্ডে আহত হন ১ হাজার ৪৫৫ জন ও নিহত হন ১৬০ জন। ২০০৮ সালে ৯ হাজার ৩১০টি অগ্নিকাণ্ডে নিহত হন ২২৯ জন, আহত হন ১ হাজার ৩৫৬ জন। এরপর ২০০৯ সালে ১২ হাজার ১৮২টি অগ্নিকাণ্ডে নিহত হন ১১৮ জন। ২০১০ সালে ১৪ হাজার ৬৮২টি অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারান ৬৩ জন। এছাড়া ২০১১ সালে ১৫ হাজার ৮১৫টি অগ্নিকাণ্ডে নিহত হন ৩৬৫ জন। পরের বছর ১৭ হাজার ৫০৪টি অগ্নি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ২১০ জন। ২০১৩ সালে অগ্নি দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৭ হাজার ৯১২তে। নিহত হন ১৬১ জন। পরের বছর ১৭ হাজার ৮৩০টি অগ্নি দুর্ঘটনায় ৭০ জন প্রাণ হারান। ২০১৫ সালে ১৭ হাজার ৪৮৮টি অগ্নি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ৬৮ জন। পরের বছর ১৬ হাজার ৮৫৮টি অগ্নি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ৫২ জন। ২০১৭ সালে ১৮ হাজার ১০৫টি অগ্নি দুর্ঘটনায় মারা যান ৪৫ জন। পরের বছর সর্বোচ্চ ১৯ হাজার ৬৪২টি অগ্নি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ১৩০ জন। তবে এসব রেকর্ড ভেঙ্গে যায় ২০১৯ সালে। চলতি বছরের প্রথম ১১ মাসে ২২ হাজার ২৮৩টি অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটে। যা সর্বকালের সর্ব রেকর্ড ভঙ্গ করে। এভাবে অগ্নি দুর্ঘটনা চলতে থাকলে দেশে প্রতিবছরই মৃত্যু সংখ্যা বাড়তে থাকবে। বর্তমানে প্রতিটি অগ্নিকা- মানেই কোটি কোটি টাকার ক্ষতি। অগ্নিকান্ডের কারণ হিসাবে জানা গেছে, নিয়ম না মেনে ভবন বা শিল্পপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা, কোন স্থাপনা নির্মাণ করার পর অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটতে পারে যেসব কারণে তার কোন প্রকার পরিকল্পনা না থাকা এমনকি কোন কোন প্রতিষ্ঠান শুরুর পর থেকে কর্মরতদের কখনও আগুন লাগলে কিভাবে তা প্রতিরোধ করতে হবে বা কোন কোন পদ্ধতিতে সহজেই অগ্নি দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব তার সামান্যটুকু প্রশিক্ষণ পর্যন্ত প্রদান করেনি। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীগণ নিয়মিত বিভিন্ন ভবনে অগ্নি মহড়া প্রদান করলেও এসব প্রতিষ্ঠান মালিকগণ তেমন একটা গুরুত্বও পর্যন্ত দেন না। ফলে অগুন লাগলেই এসব বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানে ঘটে মহাবিপত্তি। ফলে আগুনে পুড়ে কোটি কোটি টাকার ক্ষতির শিকার হয় ও বেঘোরে হারায় কত তরতাজা প্রাণ। ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, অগ্নি আইন না মানার কারণে এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ কোন প্রতিষ্ঠানের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের বা জরিমানা আদায় করতে দেখা যায় নি। ফলে ভবন মালিকরা সহজে অগ্নি আইন মানতে আগ্রহ দেখায় না। যার পরিণাম জীবন দিয়ে ভোগ করতে হয় সাধারণ নাগরিকদেরকে। ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, তারা প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন স্থানে অগ্নি মহড়ার সংখ্যা ও জনসচেতনতা কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করেছে। কিন্তু চাহিদার সঙ্গে সঙ্গে অতি দ্রুত পাল্লা দিয়ে বিশাল আকৃতির ভবন বা স্থাপনা নির্মাণ করা হলেও অগ্নি দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর তেমন কোন ব্যবস্থাই নেয়া হয় না। এমনকি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য ফায়ার সার্ভিসের অনুমতি নেয়াও বাধ্যতামূলক নয় অগ্নি আইনে। ফলে নিজ ইচ্ছামতোই অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা রাখা হয়। ফলে যে কোন সুউচ্চ ভবনে স্বয়ংক্রিয় অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকায় রাজধানীর এফ আর টাওয়ারের মতো আগুন লাগলেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। অগ্নি আইনের কঠোরতা ও নাগরিকদের অগ্নিসংশ্লিষ্ট উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদান, ফায়ার সার্ভিসের জনবল বৃদ্ধি, উচ্চতর প্রশিক্ষণ প্রদান, রাস্তার পাশে ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপন করা, শহর ও গ্রাম পর্যায়ে অগ্নি প্রতিরোধে আলোচনা সভা সেমিনারের আয়োজন ও সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অগ্নিনিরোধক আধুনিক যন্ত্রপাতির সংযোজন ও এর সঠিক ব্যব্হারই পারে এমন দুর্ঘটনার হার কমাতে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন জনকণ্ঠকে বলেন, অগ্নি দুর্ঘটনা রোধে নাগরিকদের মাঝে অধিক পরিমাণে সচেতনতা বৃদ্ধি করাই মূল কাজ। অন্যথায় অগ্নি দুর্ঘটনা কোনক্রমেই রোধ করা সম্ভব হবে না। কারণ প্রতিনিয়তই আমাদের লোকজন প্রতিটি ভবন অগ্নি ঝুঁকিতে রয়েছে কি না তা পরীক্ষা করছেন। একসময় সারাদেশে মাত্র ৩০ জনের মতো ওয়্যারহাউস পরিদর্শক থাকলেও বর্তমান সরকারের সহায়তায় তা ২শ’ ৬৮ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া যে কোন প্রকার অগ্নি দুর্ঘটনায় কাজ করতে ফায়ার সার্ভিসের জনবলও বর্তমান সরকার বাড়িয়েছে। যদিও তা পর্যাপ্ত নয়। আগুন লাগার ও নানা প্রকার দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশে দ্রুত উন্নয়ন ঘটছে। ছোট বড় বহুতল স্থাপনা ও ভবন নির্মাণও বাড়ছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অগ্নি দুর্ঘটনাও বাড়ছে। এক সময় নিয়ম মেনে ভবন তৈরি করা হলেও বর্তমানে অনেক ভবন দুর্বল ও নিম্নমানের ক্যাবল দিয়ে ঘরের ওয়্যারিংয়ের কাজ করা হয়। এছাড়া যে কোন ভবনেরই স্বাভাবিক ক্ষমতার চেয়ে বেশি লোডের বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করাও আগুন লাগার অন্যতম কারণ। এছাড়া গ্যাসের চুলা ব্যবহার করার পর তা ভালভাবে বন্ধ না করা, দাহ্য পদার্থ দিয়ে ভবনের ভেতরে ডেকোরেশন করায় আগুন লাগলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এসবের ব্যবহার কমাতে হবে। এছাড়া আমরা বর্তমান অগ্নি বিধিমালাটিকেও যুগোপযোগী করতে কাজ করছি। এছাড়া অগ্নি নির্বাপণ আইনের সর্বোচ্চ ব্যবহার করার জন্য সরকারের ও অগ্নি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে কাজ করছি। তবে অগ্নি দুর্ঘটনা রোধে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধি ও ভবন বা স্থাপনা নির্মাণের পর অগ্নিরোধে ব্যবস্থা নেয়া ও যন্ত্রপাতি স্থাপন করা, নিয়মিত মহড়া দেয়া ও আগুন লাগার কারণ চিহ্নিত করে তা দ্রুত নেভাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে দুর্ঘটনা বর্তমানের তুলনায় অনেকাংশে কমে আসবে।
×