ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দাশেরকান্দি প্রকল্প পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী তাজুল

ঢাকাকে দৃষ্টিনন্দন করার মহাপরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৯:৩৩, ১২ ডিসেম্বর ২০১৯

ঢাকাকে দৃষ্টিনন্দন করার মহাপরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানী ঢাকাকে কিভাবে বিশ্বের অন্যন্য দেশের ন্যায় দৃষ্টিনন্দন করা যায় তার মহাপরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। এছাড়া রাজধানীর বর্জ্য সঠিক উপায়ে নিষ্কাশনের জন্য দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্প ছাড়াও আরও চারটি স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে ও একইসঙ্গে রাজধানীতে উন্নয়ন কাজের জন্য বিভিন্ন সড়কে প্রায়ই খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চলে। এখন থেকে অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ি রোধে মাস্টার প্ল্যানের মাধ্যমে সমন্বয় করে উন্নয়ন কাজ করা হবে বলেও জানান তিনি। বুধবার রাজধানীর আফতাবনগর সংলগ্ন দাশেরকান্দি এলাকায় চলমান দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্প পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এ সময় স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ জহিরুল ইসলাম, ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিন এ খানসহ মন্ত্রণালয় ও ওয়াসার উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তাজুল ইসলাম বলেন, সরকারের ভাল কাজ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে। মানুষের সমর্থন আমাদের উৎসাহ জোগাবে। জনগণের সমর্থন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবিরাম কাজ করছেন। বঙ্গবন্ধু অনেক স্বপ্ন নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন, কিন্তু তিনি তার স্বপ্নপূরণ করতে পারেননি। ঘাতকরা সপরিবারে তাকে হত্যা করে। তাই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে তারই কন্যা শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, রাজধানীর বর্জ্য সঠিক উপায়ে ধ্বংস করতে দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্প ছাড়াও আরও চারটি সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্যান্ট স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। এজন্য দাশেরকান্দি ছাড়া পাগলা, মিরপুর, উত্তরা ও রায়েরবাজারে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছি। এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে ৩ হাজার ৩১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে দাসেরকান্দি পয়:শোধনাগার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। শীঘ্রই নারায়ণগঞ্জের পাগলা, রায়ের বাজার উত্তরা ও মিরপুরের কাজও শুরু করা হবে। তিনি বলেন, সঠিক উপায়ে স্যুয়ারেজ ব্যবস্থাপনা না করলে ভবিষ্যতে ঢাকা শহর পরিবেশ ও নদীদূষণে অযোগ্য হয়ে যাবে। এ প্রকল্প চালু হলে পয়ঃবর্জ্য পুড়িয়ে ফেলা হবে ও তরল পরিশোধিত বর্জ্য খালের মাধ্যমে নিষ্কাশন করা হবে। এর ফলে পরিবেশ দূষণ ও নদী দূষণ বর্তমানের চেয়ে অনেক কমে আসবে। সে লক্ষ্যে নেটওয়ার্ক পাইপলাইন স্থাপনের কাজও শীঘ্রই শুরু হবে। এছাড়া ঢাকায় খুব বায়ুদূষণ হয়, এর দায়িত্ব আমরা এড়াতে পারি না। এসব বিষয়েও পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। সরকারের উন্নয়ন ও ভাল কাজগুলো মানুষের কাছে তুলে ধরতে গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, আমাদের ভাল কাজ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে। তারা যদি উন্নয়ন দেখে সরকারকে সমর্থন করে, তাদের মানসিক সমর্থন আমাদের উৎসাহ যোগাবে। জনগণের মানসিক সমর্থন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ এসেতে আর প্রকল্পে কাজ করবে না, তাদের সরকার বলবে না কাজ কর, তারা যদি উন্নয়ন দেখে সরকারকে সমর্থন করে, তাদের মানসিক সমর্থন আমাদের উৎসাহ যোগাবে। জনগণের মানসিক সমর্থন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ঢাকার যে বায়ুদূষণ, সরকার দায়িত্ব এড়াতে পারবে না। সেটি মোকাবেলায় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এখন ঢাকা ওয়াসা ৯০ শতাংশ মানুষকে সুপেয় পানি দিচ্ছে। হাইকোর্টের একটি আদেশে ৩৬টি এলাকার পানি পরীক্ষার মাধ্যমে ২৬টি এলাকাতেই সুপেয় পানি পাওয়া গেছে। এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, কীভাবে ঢাকা শহরকে দৃষ্টিনন্দন করা যায়, আমরা তার মহাপরিকল্পনা নিয়েছি। এই অপরিকল্পিত শহরকে দূষণমুক্ত করা কঠিন কাজ। তারপরও মহাপরিকল্পনা তৈরি করে সমন্বয় করে উন্নয়ন কাজ করা হবে। তাহলে খোঁড়াখুঁড়ির যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবে জনগণ। বায়ু দূষণ কমে আসবে। উল্লেখ্য ২০১৫ সালে শুরু হওয়া দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্প ২০২২ সালে সম্পন্ন হবে। এ প্রকল্পে চীনের এক্সিম ব্যাংক ঋণ সহায়তা দিবে ২ হাজার ১৮৪ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার ও ঢাকা ওয়াসা যোগান দিবে ১ হাজার ১৩৪ কোটি টাকা।
×