ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রার্থী বাছাইয়ে দ্বিধায় ভোটাররা

প্রকাশিত: ০৯:১০, ১২ ডিসেম্বর ২০১৯

প্রার্থী বাছাইয়ে দ্বিধায় ভোটাররা

ব্রিটিশ ভোটাররা আজ সাধারণ নির্বাচনে ভোট দেবেন। গত চার বছরের মধ্যে এটি তৃতীয় সাধারণ নির্বাচন। ভোটাররা কাকে বেছে নেবেন তা নিয়ে তারা কঠিন সমস্যার সম্মুখীন, যেখানে দুইজন অজনপ্রিয় নেতা দুই বড় দলের প্রধান। নিক বোলসের মতো একজন সাবেক কনজারভেটিভ এমপি এটিকে একজন নিপীড়নকারী মিথ্যাবাদী ও একজন কর্তৃত্ববাদীর মধ্যে আতঙ্কজনক পছন্দ বলে মতামত ব্যক্ত করেছেন। বিবিসি। এটা যেন ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন যেখানে উভয় প্রধান প্রার্থী ত্রুটিপূর্ণ এবং অবিশ্বস্ত বলে বিবেচিত এবং ওই মার্কিন নির্বাচনের প্রতিচ্ছবিই তিন বছর পরে আটলান্টিকের এপারে ফিরে এসেছে। ইয়ান মনের নর্থ ওয়েলস কেন্দ্রের প্রার্থী ম্যারি রবার্টস এক র‌্যালিতে সমর্থকদের বলেন, জনগণ উন্নাসিক এবং তারা বলছে তারা ভোটের দোরগোড়ায় এসে বিরক্ত হয়ে পড়েছে। জনগণের মধ্যকার ক্যানভাসার এবং কর্মীরাও ওই ধ্বনিরই প্রতিধ্বনি করছে। ভোটাররা ব্রেক্সিট, নির্বাচন, রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার ডঙ্কা এই সবকিছুর অবসান চায়। একটি প্রাক-ক্রিসমাস মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বেশ কিছু ব্রিটিশ ভোটারকে উদ্বিগ্ন মনে হয়েছে। জাতির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ব্রিটিশ ভোটারদের সামনে দাঁড়াতে এটাই জনসনের প্রথম সুযোগ। এই নির্বাচন তিনিই আহ্বান করেছেন। জনগণ তার বিশ্বস্ততা সম্মন্ধে সন্দেহ প্রকাশ করেছে- এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। তবে লেবার পার্টির নেতাও নিজের ব্যক্তিগত সমালোচনা থেকে মুক্ত নন। ব্রেক্সিট সম্পর্কিত তার মিশ্র এবং বিরোধী বার্তাগুলি তার বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণœ করেছে। লেবার পার্টিকে একটি স্পষ্টবাদী দল হিসাবে চালাতে ব্যর্থতাও তার জন্য খারাপ হয়েছে। এদিকে এ নির্বাচনে জনসন অল্প ব্যবধানে জয় পাবেন এবং পূর্ব ধারণা মতো নিরঙ্কুশ জয় পাবেন না বলে জরিপভিত্তিক পূর্বাভাসে ধারণা পাওয়া গেছে। গত দুই সপ্তাহে ব্রিটনের নির্বাচনের দৌড় অনেকটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে মঙ্গলবার প্রকাশিত বিভিন্ন জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে জানিয়েছে বিবিসি। বৃহস্পতিবার ৭ জিএমটিতে নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে ২২ জিএমটিতে শেষ হবে। এ নির্বাচনে জনসনের কনজারভেটিভ পার্টি ২৮ আসনের ব্যবধানে জয় পাবে বলে ব্রিটিশভিত্তিক আন্তর্জাতিক জনমত জরিপ ও তথ্য বিশ্লেষক কোম্পানি ইউগভের অনুমান। দুই সপ্তাহ আগে একই প্রতিষ্ঠান আভাস দিয়েছিল, ক্ষমতাসীন দল ৬৮ আসনের ব্যবধানে বড় ধরনের জয় পেতে যাচ্ছে। ব্যবধান কমার ধারা অব্যাহত থাকলে জনসন নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ব্যর্থ হতে পারেন বলে জানিয়েছে ইউগভ। নির্বাচনের ফলাফলে ইউগভের এই পূর্বাভাস প্রতিফলিত হলে বেক্সিটের অনিশ্চয়তা আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে। ‘এর ভিত্তিতে আমরা ঝুলন্ত পার্লামেন্টের সম্ভাবনা বাতিল করতে পারি না,’ টাইমসকে বলেছেন, ইউগভের পলিটিক্যাল রিসার্চ বিভাগের পরিচালক এ্যান্থনি ওয়েলস। এই সংবাদপত্রই ইউগভের জরিপের ফলাফল প্রকাশ করেছে। মঙ্গলবার সকালে স্বল্প পরিসরের আরেকটি বাজার বিশ্লেষক কোম্পানি ফোকালপয়েন্ট একই ধরনের পূর্বাভাস দিয়েছে। জনসন ২৪ আসনের ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবেন বলে তাদের পূর্বাভাসে দেখানো হয়েছে। গত মাসে তাদের বলা ৮২ আসনের ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে এটি অনেক কম। ঝুলন্ত পার্লামেন্ট হলে ব্রেক্সিট নিয়ে চলা অচলাবস্থার সমাধান কোন দলই করতে পারবে না, এমন ধারণা প্রচলিত থাকায় তা অল্প সময়ের জন্য হলেও ব্রিটেনের অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে খারাপ পরিণতি ডেকে আনবে বলে অনেক বিশ্লেষকের ধারণা। দুই সপ্তাহ আগে প্রকাশিত জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে ইউগভের অনুমান ছিল, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ৬৫০ আসনের মধ্যে রক্ষণশীলরা ৩৫৯ আসনে জিতে ৬৮ আসনের ব্যবধানে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। কিন্তু সর্বশেষ জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে রক্ষণশীলরা ৩৩৯টি আসনে জয় পাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এর অর্থ ২০১৭ সালের নির্বাচনে পাওয়া ৩১৭ আসন থেকে এবার আসন বাড়লেও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না জনসনের দল। প্রধান বিরোধীদল লেবার পার্টি আসন হারাবে বলে ফের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। ২০১৭ সালে লেবার পার্টি ২৬২ আসনে জিতলেও এবার ২৩১ আসন ধরে রাখতে পারবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ইউগভ। স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি ও লিবারেল ডেমোক্রেট পার্টি উভয়েরই অল্প কিছু আসন বাড়বে বলে আভাস দিয়েছে তারা।
×