ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিপিএলে ফিক্সিংয়ের কথা স্বীকার পাকি জামশেদের

প্রকাশিত: ১২:২২, ১১ ডিসেম্বর ২০১৯

বিপিএলে ফিক্সিংয়ের কথা স্বীকার পাকি জামশেদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে (বিপিএল টি২০) ফিক্সিং করেছেন তা স্বীকার করে নিয়েছেন পাকিস্তানের ব্যাটসম্যান নাসির জামশেদ। ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারের এক আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছেন এই বাঁহাতি ওপেনার। তিনি পাকিস্তান সুপার লীগেও (পিএসএল) ফিক্সিং করার কথা স্বীকার করেছেন। ম্যাচ ফিক্সিং এবং ম্যাচ ফিক্সিংয়ের উদ্দেশে ঘুষ নেয়ার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন সাবেক পাকিস্তানী এ ব্যাটসম্যান। তদন্তে উঠে এসেছে বিপিএলে একবার নয়, দুইবার ফিক্সিংয়ের চেষ্টা করেছিলেন তিনি। যদিও সফল হতে পারেননি জামশেদ। ২০১৬ বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের হয়ে খেলার সময় ফিক্সিংয়ের চেষ্টা করেছিলেন তিনি। ব্যাটে একটি নির্দিষ্ট রঙের গ্রিপ লাগিয়ে মাঠে নামার কথা ছিল তার। যদিও সেই শর্ত পূরণ করতে পারেননি এই পাকিস্তানী। একই আসরে বরিশাল বুলসের বিরুদ্ধে একটি ম্যাচে ফিক্সিংয়ের কথা ছিল তার। তবে একাদশ থেকে বাদ পড়ায় সেবারও সফল হতে পারেননি জামশেদ। এই দুই ম্যাচেই ফিক্সিংয়ের জন্য অগ্রিম টাকা নিয়েছিলেন তিনি। ম্যাচ ফিক্সিংয়ের এই পরিকল্পনায় জামশেদের সঙ্গে জড়িত ছিলেন ইউসুফ আনোয়ার ও মোহাম্মদ ইজাজও। দুজনই পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। বিপিএলে টাকা নিয়ে ফিক্সিং করে ব্যর্থ হওয়ার পর ২০১৭ পিএসএলে পরিকল্পিতভাবে ফিক্সিং করতে পারেন জামশেদ। সেবার ইসলামবাদ ইউনাইটেড ও পেশোয়ার জালমির একটা ম্যাচে তার সঙ্গে শর্ত ছিল প্রথম দুই বলে কোন রান করতে পারবেন না তিনি। এটাই করে দেখিয়েছিলেন জামশেদ। ফিক্সিংয়ের অভিযোগে আটক হওয়া ইউসুফ আনোয়ার জবানবন্দীতে বলেছেন, এক দশকেরও বেশি সময় ফিক্সিংয়ের সঙ্গে জড়িত তিনি। এমনকি ২০১৬ বিপিএলে ৬ জন ক্রিকেটার ফিক্সিংয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি। ফিক্সিংয়ের অভিযোগে ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে আটক হন জামশেদ। এরপর তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে ইংল্যান্ডের আদালত। গত বছর পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) তাকে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের বিভিন্ন অভিযোগে ১০ বছরের নিষেধাজ্ঞা দেয়। প্রথমে সব অভিযোগ অস্বীকার করলেও মঙ্গলবার সব দোষ স্বীকার করে নিজের জবানবন্দী দেন জামশেদ। ফিক্সিংয়ের জন্য সতীর্থকে ঘুষ দেয়া এবং নিজে অন্যদের কাছ থেকে অর্থ নেয়ার অভিযোগ স্বীকার করেছেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ফিক্সিংয়ের ঘটনায় আটক দুই ব্রিটিশ নাগরিক জানিয়েছেন, টাকার বিনিময়ে বাজে পারফর্মেন্স করেছেন জামশেদ। প্রাথমিকভাবে অস্বীকার করলেও খুব বেশিদিন নিজের অবস্থানে অনড় থাকতে পারেননি জামশেদ। আদালতে জেরার একপর্যায়ে ঠিকই স্বীকার করে নিয়েছেন নিজের ম্যাচ ফিক্সিংয়ের কথা এবং ম্যাচ ফিক্সিং করতে সতীর্থ খেলোয়াড়দের ঘুষ দেয়ার কথা। সতীর্থ খেলোয়াড়দের ফিক্সিংয়ের জন্য ঘুষ প্রদানের অপরাধেই আসলে আনুষ্ঠানিক শুনানির ব্যবস্থা করে ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার ক্রাউন কোর্ট। শুনানির প্রথম দিনেই দেয়া প্রাথমিক বক্তব্য পাল্টে মঙ্গলবার সব দোষ স্বীকার করে নেন জামশেদ। নাসিরের এই ফিক্সিংয়ে সরাসরি সহায়তা করেছিলেন পাকিস্তানের আরেক ওপেনার শারজিল খান। যিনি পিসিবি কর্তৃক পেয়েছিলেন ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা। পিএসএলের এক ম্যাচে পেশোয়ার জালমির বিপক্ষে ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম দুই বল ডট খেলেন শারজিল। যা তাকে শিখিয়ে দিয়েছিলেন নাসির। একইভাবে বিপিএলেও নাসির-শারজিল মিলে করেছিলেন ফিক্সিংয়ের পরিকল্পনা। নাসির জামশেদসহ, ইউসুফ আনোয়ার ও মোহাম্মদ ইজাজকে কারাদ- দিতে যাচ্ছে ম্যানচেস্টার ক্রাউন কোর্ট। তবে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জানানো হবে।
×