ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবিতে শিবচর রণক্ষেত্র

প্রকাশিত: ০৯:৩১, ১১ ডিসেম্বর ২০১৯

প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবিতে শিবচর রণক্ষেত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ১০ ডিসেম্বর ॥ মাদারীপুর জেলার শিবচরের কুতুবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেনের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়দের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে শিবচর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিবচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধরা। সোমবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে বিক্ষোভ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এলাকায় র‌্যাব, পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। রাতে ঘটনাস্থল ও আশপাশ থেকে ২২জনকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া, প্রবেশপত্র ও সনদ বিতরণের সময় টাকা নেওয়া, নিয়োগে দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবি জানায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। এর আগে শনিবার সকালে বিদ্যালয়ে বিক্ষোভ-মানববন্ধন করে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করে শিক্ষার্থীরা। ওই সময় বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেয় উপজেলা প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে কোন সুরাহা না হওয়ায় সোমবার বিকেলে আবার আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় জনগণ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিকেলে কুতুবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ নিয়ে আলোচনায় বসেন শিবচর উপজেলা চেয়ারম্যান সামসুদ্দিন খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামানসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা। এ সময় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করে দিলে প্রতিবাদ জানায় শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে স্লোগান দেয়। এক পর্যায়ে বর্তমান শিক্ষার্থী, সাবেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও দুটি গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধরা। শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এক পর্যায়ে পুলিশ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ফাঁকা গুলি ছুড়লে হট্টগোল শুরু হয়। দৌড়াদৌড়ি করতে গিয়ে বিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষার্থী আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। রাতে মাদারীপুর পুলিশ লাইন থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। ঘটনাস্থলে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী জানান, হঠাৎ করেই শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তারা ইউএনও এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়ি ভাঙচুর করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলিবর্ষণ করেন। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
×