ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বুড়িগঙ্গা থেকে স্যুয়ারেজ লাইন সরাতে ৬ মাস সময় দিল হাইকোর্ট

প্রকাশিত: ১২:৫০, ৯ ডিসেম্বর ২০১৯

বুড়িগঙ্গা থেকে স্যুয়ারেজ লাইন সরাতে ৬ মাস সময় দিল হাইকোর্ট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বুড়িগঙ্গা নদীতে পড়া ওয়াসার সকল স্যুয়ারেজ লাইন সরাতে ঢাকা ওয়াসাকে ছয় মাস সময় দিয়েছে হাইকোর্ট। ওয়াসার ছয় মাস সময় চেয়ে করা আবেদনে এ আদেশ দেয়া হয়েছে। এই আদেশ বাস্তবায়নের বিষয়ে আগামী এক মাসের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আদালত আগামী ৮ জানুয়ারি পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছে। অন্যদিকে যত দ্রুত সম্ভব চট্টগ্রাম বন্দর কর্মচারী পরিষদের নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে শ্রম অধিদফতরকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। রবিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চগুলো এ আদেশ প্রদান করেছে। বুড়িগঙ্গা নদীতে পড়া ওয়াসার সকল স্যুয়ারেজ লাইন সরাতে ঢাকা ওয়াসাকে ছয় মাস সময় দিয়েছে হাইকোর্ট। এদিকে বুড়িগঙ্গায় ঢাকা ওয়াসার কোন স্যুয়ারেজ পতিত হয়নি বলে গত ১৮ জুন ওয়াসার পক্ষ থেকে লিখিতভাবে দেয়া অসত্য তথ্যের জন্য হাইকোর্টের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)। তবে আদালত এ আবেদন রেখে দিয়েছে। আদালত বলেছে, স্যুয়ারেজ লাইন সরানোর ওপর নির্ভর করে এ বিষয়ে আদেশ দেয়া হবে। এছাড়া পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ছাড়া বুড়িগঙ্গার দুই তীরে গড়ে ওঠা শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং যেসব শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে বর্জ্য বুড়িগঙ্গায় পড়ছে সেইসব প্রতিষ্ঠান আগামী এক মাসের মধ্যে বন্ধ করতে পরিবেশ অধিদফতরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা দাখিল করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আদালত আগামী ৮ জানুয়ারি পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছে। বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল রবিবার এ আদেশ দেন। আদালতে বুড়িগঙ্গায় পড়া স্যুয়ারেজ লাইন সরাতে ছয় মাস সময় চেয়ে ওয়াসার করা এক আবেদনে এ আদেশ দেয় আদালত। গতকাল ওয়াসার পক্ষে সময়ের আবেদন করেন এ্যাডভোকেট উম্মে সালমা। পরিবেশ অধিদফতরের পক্ষে ছিলেন এ্যাডভোকেট আমাতুল করিম। গত ১৮ জুন ওয়াসার দেয়া এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বুড়িগঙ্গায় ওয়াসার কোন স্যুয়ারেজ লাইন নেই। কিন্তু গত ২ ডিসেম্বর দেয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, বুড়িগঙ্গায় ৬৭ স্থান দিয়ে বর্জ্য পড়ছে। তার মধ্যে ওয়াসার লাইন ১৬টি। ওয়াসার এই দুই ধরনের প্রতিবেদনে ক্ষোভ প্রকাশ করে হাইকোর্ট। এ অবস্থায় ওয়াসা ওইদিন তাদের ২ ডিসেম্বর দেয়া প্রতিবেদন প্রত্যাহার করে নেয় এবং গতকাল নতুন করে জবাব দাখিল করে। এই জবাবে ১৮ জুনের প্রতিবেদনের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া হয়। একইসঙ্গে স্যুয়ারেজ লাইন সরাতে ছয় মাস সময় চাওয়া হয়। এ প্রেক্ষাপটে আদালত উল্লেখিত আদেশ দেয়। মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস এ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা এক রিট মামলায় হাইকোর্ট ২০১১ সালে এক রায়ে বুড়িগঙ্গা নদীর তীর থেকে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেয়। এছাড়া নদীর পানি যাতে দূষিত না হয় সেজন্য সব ধরনের বর্জ্য ফেলা বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়। এই রায়ের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। কিন্তু এখনও কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে তরল বর্জ্য নদীতে ফেলা হচ্ছে। যা নদীর পানিকে দূষিত করছে। যা এইচআরপিবির পক্ষ থেকে আদালতের নজরে আনা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় শুনানি চলছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্মচারী পরিষদের নির্বাচন দ্রুত দেয়ার নির্দেশ যত দ্রুত সম্ভব চট্টগ্রাম বন্দর কর্মচারী পরিষদের নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে শ্রম অধিদফতরকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি শেখ হাসান আরিফের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ লিখিতভাবে এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও এ্যাডভোকেট রাফসান আল আলভী। এর আগে চট্টগ্রাম বন্দর কর্মচারী পরিষদের নির্বাচন দ্রুত দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে সংগঠনটির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুর রহমান সিকদার রিট দায়ের করেন।
×