ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আজিজুল ইসলামের বাঁশির সুরে মুগ্ধ শ্রোতা

প্রকাশিত: ১৩:৪৪, ৮ ডিসেম্বর ২০১৯

আজিজুল ইসলামের বাঁশির সুরে মুগ্ধ শ্রোতা

সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ শাস্ত্রীয় সঙ্গীতসাধক একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী আজিজুল ইসলামের বাঁশির সুরে মুগ্ধ চট্টগ্রামের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের শ্রোতা। আইইবি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরিন আখতার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মোহাম্মদ রফিকুল আলম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. শিরিন আখতার বলেন, উপমহাদেশীয় হিন্দুস্তানী সঙ্গীতের পিতৃ-মাতৃভূমি খ্যাত ভারতে এখন যেমন আছে বাঁশিতে হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া, ঠিক তেমনই আমাদের কাছে আছে ওস্তাদ আজিজুল ইসলাম, যিনি বিশে^র সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সঙ্গীত সম্মেলন ডোবারলেন মিউজিক কনফারেন্সে একমাত্র বাংলাদেশী হিসেবে পারফর্ম করার সুযোগ লাভে ধন্য হন যা শিল্পীর জন্য যেমন গৌরবের তেমনই আমাদের জন্যও অত্যন্ত গৌরবের। প্রথাগত শিক্ষা নয়, কেবল আত্ম অনুসন্ধানের ভঙ্গিতেই সত্য ও সুন্দরের সাধনা অবিরাম সেখানে বাঁশির সুরে নিবেদিত একজন শিল্পীসত্তা এবং শিল্পের উৎকর্ষ লাভের আকাক্সক্ষায় যার শিল্পীজীবন উৎসর্গীকৃত হয়েছে, তিনি এদেশের একজন শিল্প-সম্পদ এ কথা আজ নিঃসন্দেহে বলা যায়। কেবল গুরুমুখী বিদ্যায় কিছু দিনের সাধনায় নয়, প্রায় অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে সঙ্গীতে আমাদের মতো রস-গ্রহীতাদের শুদ্ধ সঙ্গীতের অমিয়ধারা ও স্বর্গীয় পুলক অনুভূতির মার্গে তথা উচ্চ স্তরে পৌঁছে দেয়ার নিমিত্ত ক্রমে হয়ে উঠেছেন এক আত্মপ্রত্যয়ী সুরস্রষ্টা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইইবি, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের এডমিন, প্রফেশনাল এ্যান্ড এসডব্লিউওর ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার দে। আইইবি, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সম্মানী সম্পাদক প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিকের পরিচালনা ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সিকান্দার খান, বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. সরোজ কান্তি সিংহ হাজারী, চিটাগং ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. মাহফুজুল হক চৌধুরী, প্রমুখ। শিল্পীর প্রথম পরিবেশনায় ছিল রাগ- ‘শ্রী’। ‘শ্রী’ মানেই সুন্দর, আর এই সুন্দরের পূজারী হন শিল্পী-সাধক কবিগণ। কেননা এই সুন্দরের সাধনা করতে গিয়েই পরম সুন্দরের নৈকট্য লাভ করার দুর্লভ সুযোগ পায়। কারণ সৃষ্টিকর্তা নিজে সুন্দর তাই তিনি সুন্দরকেই পছন্দ করেন। এতে স্রষ্টার কাছে যাওয়া ও তাঁকে আপন করে পাওয়া সম্ভবপর হয়। উপমহাদেশের কিংবদন্তি তবলাবাদক প-িত সমর সাহার তবলার তালের চমৎকারিত্বে ওস্তাদ আজিজুল ইসলামের বাঁশির মোহনীয় সুরের ঝঙ্কারে বিমোহিত উপস্থিত হাজার শ্রোতার মুহুর্মুহু করতালিতে নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের অডিটরিয়াম হল ছিল বিপুলসংখ্যক শিল্পী, সঙ্গীতবোদ্ধা ও সঙ্গীতপ্রিয় সমজদার শ্রোতাম-লীর উপস্থিতিতে মুখরিত। ধ্রুপদী বাঁশি শিল্পী তার সুরের ইন্দ্রজাল বিস্তার করে রাগ- হংস ধ্বনি ও চন্দ্রকোষ বাজানোর অব্যবহিত পর ঝিঞ্ঝটি রাগে ভাটিয়ালি ধুনে বাঁশিতে অপূর্ব সুরের ছোঁয়ায় উপস্থিত সকলকে মুগ্ধ করে। আরও যা বলার তা হলো ভাটির টানে বাঁশির সুরের মোহনীয় তানে উপস্থিত দর্শক শ্রোতাদের যখন চিত্ত আন্দোলিত হতে থাকে ঠিক তখনই ধ্রুপদী বাঁশি শিল্পীর পরিবেশনার ইতি অতৃপ্ত এক সুরের রেশ রেখে যায়।
×