ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আজ নেপালকে হারালেই ফাইনালে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১১:৫৩, ৮ ডিসেম্বর ২০১৯

আজ নেপালকে হারালেই ফাইনালে বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার, কাঠমান্ডু, নেপাল থেকে ॥ কি ভাবা হয়েছিল, আর কি হচ্ছে! যেখানে এবারের এসএ গেমসে ভারত না থাকায় সবাই বাংলাদেশকেই সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ধরে নিয়েছিলেন, এখন তারাই অবাক হয়ে লক্ষ্য করছেন ফাইনালে নাম লেখানোই মুশকিল হয়ে পড়েছে লাল-সবুজ বাহিনীর জন্য! এসএ গেমস ফুটবলে গ্রুপের শেষ ম্যাচে আজ দশরথের রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে স্বাগতিক নেপালের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় শুরু হবে ম্যাচটি। এই আসরে প্রথম ম্যাচে ভুটানের কাছে ০-১ গোলে হেরে হোঁচট খায় বাংলাদেশ। পরের ম্যাচে মালদ্বীপের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে আরও বেকায়দায় পড়ে যায় জেমি ডের শিষ্যরা। তৃতীয় ম্যাচে অবশ্য ১-০ গোলে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে পদকের লড়াইয়ে নিজেদের টিকিয়ে রাখে জামালরা। কিন্তু এদিকে ঘটে চলেছিল অন্য ঘটনা। নেপাল ও ভুটান বাংলাদেশের চেয়ে ভাল খেলে নিজেদের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দল হিসেবে ক্রমশ প্রতিষ্ঠত করে তুলছিল। নিয়ম অনুযায়ী লীগভিত্তিক এই আসরের সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট পাওয়া শীর্ষ দুই দল খেলবে ফাইনালে। শনিবার নেপাল ২-১ গোলে মালদ্বীপকে এবং ভুটান ৩-০ গোলে শ্রীলঙ্কাকে হারালে বাংলাদেশের জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে। কেননা ভুটানের ৪ খেলায় ৯ ও নেপালের ৩ খেলায় দাঁড়ায় ৭ পয়েন্ট। তৃতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ খেলায় মাত্র ৪ পয়েন্ট! সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বর্ণ জয়ের মিশনটা এক কঠিন ও অসম্ভব সমীকরণের মারপ্যাঁচে পড়ে যায়। চারদিকে রটে যায়, তাই ফাইনালে খেলতে হলে বাংলাদেশকে শুধু নেপালকে হারালেই চলবে না, জিততে হবে কমপক্ষে ৫-০ গোলের বড় ব্যবধানে। এই গুঞ্জনে স্বভাবতই হতাশ হয়ে পড়েন এখানকার বাংলাদেশীরা। কেননা রবিবার নেপালকে হারানো এমনিতেই কঠিন হবে বাংলাদেশের জন্য। আর যদি হারানোও যায়, তাহলে তাদের জালে এতবার বল পাঠানো মোটেও সম্ভব নয়। তাই ফাইনালে যাওয়ার আশাও সুদূর পরাহত। কিন্তু না, কিছুক্ষণ পরেই নতুন একটি খবরে বদলে যায় গোটা দৃশ্যপট। আয়োজক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায় আসল খবর। সেটা হচ্ছে বাংলাদেশ জিতলেই ফাইনালে চলে যাবে। যদিও জিতলে তাদের নেপালের সমান পয়েন্ট হবে (৭)। তখন গোল ব্যবধানে (এখন গোল তফাতে অবশ্য এগিয়ে নেপালই, +৫, বাংলাদেশ ০) পিছিয়ে থাকলেও হেড টু হেডে জেতার সুবাদে ফাইনালে নাম লেখাবে লাল-সবুজরা। এই অপ্রত্যাশিত আপডেট নিউজে উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে মিডিয়া সেন্টারে কর্মরত বাংলাদেশী সাংবাদিক এবং স্টেডিয়ামের বাইরে অপেক্ষারত বাংলাদেশীদের মাঝে। স্বাগতিক নেপালকে পরপর দুই দিনে খেলতে হচ্ছে দুটি ম্যাচ। বাংলাদেশকেও এই ঝামেলায় পড়তে হয়েছিল শুরুর দিকে। তবে লঙ্কানদের হারিয়ে দেয়ার পর প্রায় তিন দিনের বিশ্রাম পেয়েছেন জামাল-সুফিলরা। এটাই আজ প্লাস পয়েন্ট হতে পারে বাংলাদেশের জন্য। অন্যদিকে আগেরদিন মালদ্বীপের সঙ্গে খেলে পরদিনই বাংলাদেশের মুখোমুখি হতে হচ্ছে নেপালকে। যে কারণে ক্লান্ত থাকবে স্বাগতিক দলটি। আর সেই সুযোগটাই কাজে লাগাতে চায় লাল-সবুজরা। দলীয় অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিতে দলের সবার আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। সবাই জানে নেপাল ম্যাচটা আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তাদের হারাতে পারলে ফাইনালে খেলার সুযোগ থাকছে। নেপাল শনিবার একটি ম্যাচ খেলেছে। আজ আমাদের সঙ্গে খেলবে। এক ম্যাচ খেলে ওরা ক্লান্ত থাকবে। আমরা সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে চাই।’ দলের কোচ জেমি’ডেও আশাবাদী ম্যাচ জিততে, ‘আমাদের সামনে এখনও সুযোগ আছে। নেপালের বিপক্ষে অবশ্যই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে চাই। ছেলেরা আগের ম্যাচগুলোতে দুর্দান্ত খেলেছে।’ এর আগে এসএ গেমসে কয়েকবার মুখোমুখি হয়েছে নেপাল বাংলাদেশ। ১৯৮৪ সালে প্রথম আসরেই ফাইনালে নেপালের কাছে ৪-২ গোলে হেরেছিল লাল-সবুজরা। ১৯৯১ সালে ২-০ গোলে নেপালকে হারিয়ে ব্রোঞ্জজয়ের পর ১৯৯৯ সালে ফাইনালে ১-০ গোলে হারিয়ে স্বর্ণ জিতেছিল বাংলাদেশ দল। বাজে রেফারিং নিয়ে কিছুটা চিন্তিত বাংলাদেশী অধিনায়ক, ‘প্রথম ম্যাচেই আমরা বাজে রেফারিংয়ের শিকার হয়েছিলাম। সেটা সবাই দেখেছে। তবে এটা আমাদের হাতে নয়। তবে আশাকরি রবিবার ভাল রেফারিং হবে।’
×