ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারী চাকুরেদের দুদিন বিলম্বে উপস্থিতির জন্য একদিনের বেতন কাটা যাবে

প্রকাশিত: ১১:১৯, ৮ ডিসেম্বর ২০১৯

সরকারী চাকুরেদের দুদিন বিলম্বে উপস্থিতির জন্য একদিনের বেতন কাটা যাবে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া সরকারী কর্মচারীরা অনুপস্থিত থাকলে এক দিনের বেতন কাটার বিধান রেখে নতুন বিধিমালা জারি করেছে সরকার। এতে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি ছাড়া কোন সরকারী কর্মচারী নিজ কর্মে অনুপস্থিত থাকতে পারবে না। কোন কর্মচারী অনুমতি ছাড়া অফিসে অনুপস্থিত থাকলে উপর্যুক্ত কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে কারণ দর্শানোর নোটিস করবে। যুক্তিসঙ্গত কারণ না থাকলে কর্মচারীর প্রতিদিনের অনুপস্থিতির জন্য একদিনের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ কেটে নিতে পারবেন। এতে আরও বলা হয়েছে, উপর্যুক্ত কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি ছাড়া কোন সরকারী কর্মচারী অফিস ত্যাগ করতে পারবেন না। তবে শর্ত থাকে যে, জরুরী প্রয়োজনে অফিস ত্যাগের ক্ষেত্রে সহকর্মীকে অবগত করে অফিস ত্যাগ করা যাবে। সংরক্ষিত রেজিস্ট্রারে অফিস ত্যাগের কারণ, সময়, তারিখ ইত্যাদি লিপিবদ্ধ করতে হবে। সরকারী চাকুরেদের অফিসে নিয়মিত উপস্থিতির বিষয়ে নতুন এই বিধিমালা জারি করছে সরকার। গত ২ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ‘সরকারী কর্মচারী (নিয়মিত উপস্থিতি) বিধিমালা, ২০১৯’ জারি করেছে। ৫ ডিসেম্বর এটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। মূলত ‘গণকর্মচারী শৃঙ্খলা (নিয়মিত উপস্থিতি) অধ্যাদেশ, ১৯৮২’ পরিমার্জন করে নতুন বিধিমালা করা হয়েছে। ‘সরকারী চাকরি আইন-২০১৮’ এর আওতায় সরকারী কর্মচারী (নিয়মিত উপস্থিতি) বিধিমালা করা হয়েছে। ১৯৮২ সালের গণকর্মচারী শৃঙ্খলা (নিয়মিত উপস্থিতি) অধ্যাদেশ আদালতের রায় অনুযায়ী বাতিল হয়ে গেছে। এখন ওই অধ্যাদেশটি যুগোপযোগী করে নতুন বিধিমালাটি প্রণয়ন করা হয়েছে। মূলত অধ্যাদেশের বিষয়গুলোই বিধিমালায় এসেছে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে। বিধিমালায় বলা হয়েছে, কোন সরকারী কর্মচারী যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া দেরিতে অফিসে উপস্থিত হতে পারবেন না- উল্লেখ করে বিধিমালায় বলা হয়েছে, এই বিধান লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে কারণ দর্শানোর সুযোগ দেয়া হবে। জবাব সন্তোষজনক না হলে প্রতি দু’দিনের বিলম্বে উপস্থিতির জন্য একদিনের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ কাটা যাবে। এছাড়া কোন সরকারী কর্মচারী ৩০ দিনের মধ্যে একাধিকবার বিনা অনুমতিতে অফিসে অনুপস্থিতি, অফিস ত্যাগ ও দেরিতে অফিসে উপস্থিত হলে ওই কর্মচারীর আরও অতিরিক্ত সাতদিনের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ কাটা যাবে। বিধিমালা অনুযায়ী, কোন সরকারী কর্মচারীর বেতন কাটা হলে তিনি তিন কার্যদিবসের মধ্যে উপর্যুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করতে পারবেন। পুনর্বিবেচনার কোন আবেদন করা হলে, আদেশ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ, সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে শুনানির যুক্তিসঙ্গত সুযোগ দেয়া হবে। শুনানির ওপর ভিত্তি করে বেতন কর্তনের আদেশ সংশোধন বা বাতিল রাখতে পারবে। পুনর্বিবেচনার আবেদন শুনানির ক্ষেত্রে সাক্ষ্যের সংক্ষিপ্তসার, প্রাপ্ত তথ্যাদি এবং সিদ্ধান্ত লিপিবদ্ধ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্মচারীর মাসিক বেতন বিল থেকে দ-ের অর্থ কেটে আদায় করতে হবে। ওই কর্মচারী নিজের বিল নিজে উত্তোলনকারী হলে, তাকে বেতন বিল থেকে দ-ের অর্থ কাটার নির্দেশ দিতে হবে। নির্দেশের কপি হিসাবরক্ষণ অফিসে পাঠাতে হবে। ওই কর্মচারী বেতন বিল থেকে দ-ের অর্থ কর্তন না করলে হিসাবরক্ষণ অফিস তা কেটে বিল পাস করবে বলে সরকারী কর্মচারী (নিয়মিত উপস্থিতি) বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্মচারী নিজের বিল নিজে উত্তোলনকারী না হলে তার বেতন থেকে দ-ের অর্থ কাটার লিখিত নির্দেশ দিতে হবে এবং নির্দেশের কপি সংশ্লিষ্ট হিসাব শাখায় পাঠাতে হবে।
×