ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হস্তান্তরের আগেই বেহাল

গুচ্ছ গ্রাম প্রকল্পের ঘর নির্মাণে অনিয়ম

প্রকাশিত: ১১:৫৩, ৭ ডিসেম্বর ২০১৯

গুচ্ছ গ্রাম প্রকল্পের ঘর নির্মাণে অনিয়ম

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, পটুয়াখালী, ৬ ডিসেম্বর ॥ চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চর রায়সাহেব-১ গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের অধীনে সরকারের ১ কোটি ১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা ব্যয়ে ৬০টি ঘর, ১টি মাল্টিপারপাস হল রুম, ৬০টি টয়লেট, ৬টি টিউবওয়েল স্থাপনসহ ২শ’ ৭৫ মেট্রিক টন চাল দিয়ে প্রকল্পের মাটি ভড়াট কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘরগুলো হস্তান্তরের আগেই বেহাল অবস্থায় পরিণত হয়েছে। টিনের চালা, বেড়া, এ্যাঙ্গেল ও টয়লেট ভেঙ্গে গেছে। প্রকল্পের সভাপতি হলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিজুস চন্দ্র দে। জানা গেছে, তেঁতুলিয়া নদীবেষ্টিত উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের হতদরিদ্রত ভূমিহীন পরিবারের বসবাসের জন্য চর রায়সাহেবের উত্তর সীমানায় ৩ একর ২০ শতাংশ জমির ওপর ওই সব ঘর নির্মাণ করা হয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, ৪ সারিতে দোচালা টিন দিয়ে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। প্রত্যেকাট ঘরের সঙ্গে ১টি করে টয়লেট ও ১০টি ঘরের জন্য ১টি করে মোট ৬টি টিউবওয়েল স্থাপন করার কথা থাকলেও স্থাপন করা হয়েছে ৪টি টিউবওয়েল। ঘরের চালা ও বেড়ায় ব্যবহার করা হয়েছে নি¤œমানের টিন ও লোহার এ্যাঙ্গেল । নিয়মানুযায়ী ঘরগুলো করা হয়নি। টিনের ছাউনিতে ৫ এমএম ও বেড়ায় ৩ এমএম লোহার এ্যাঙ্গেল এবং ছাউনির নিচে ফোম দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হয়নি। ঘরের ছাউনিতে দশমিক ৪৬ এমএম ও বেড়ায় দশমিক ৩৬ এমএম টিন ব্যবহার করার কথা থাকলেও কোন ঘরেই ওই নিয়ম মানা হয়নি এবং রড ও সিমেন্ট দিয়ে তৈরি খুঁটির অবস্থাও নাজুক। অধিকাংশ ঘরের খুঁটি ভেঙ্গে গেছে। কোন কোন খুঁটিতে ফাটল ধরেছে। অধিকাংশ ঘরের টিনের ছাউনির চালা ও বেড়া ইতোমধ্যে ছুটে গেছে ও ভেঙ্গে গেছে। অধিকাংশ টয়লেটের উপর টিনের চালা নেই। রিংস্লাব ভেঙ্গে গেছে। কোন ঘরের মেঝে মাটি দেয়া হয়নি। মাল্টিপারপাস হল রুমের কাজেও ফাঁকিবাজি করা হয়েছে। এই হলরুমটি নির্মাণের জন্য ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। হলরুমে আলমিরা, টেবিল ও বসার জন্য বেঞ্চ দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হয়নি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিজুস চন্দ্র দে নিজের মতো করে এ প্রকল্পের কাজ করেছেন। ১৮-১৯ অর্থবছরে এই প্রকল্পের কাজ ফেব্রুয়ারি মাসে সমাপ্ত হলেও এখন পর্যন্ত তা সুবিধাভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়নি। তবে ৬০টি ঘরের মধ্যে ৪৫ ঘরে মানুষ বসবাস করছেন। তাদের মধ্যে আবার অনেক পরিবার রয়েছে ভোলা জেলার বিভিন্ন উপজেলার। বাকি ১৫টি ঘর খালি রয়েছে। যার মেঝেতে কোন মাটি নেই। বেড়ার টিন ছুটে পড়ছে। টয়লেটে ছাউনি ও বেড়া নেই। ইদ্রিস মৃধা নামের এক ব্যক্তি জানান, তাদের কাউকেই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘর হস্তান্তর করা হয়নি। তারা যে যার মতো করে পরিবার পরিজন নিয়ে থাকছেন। তিনি অভিযোগ করেন, ঘরগুলোর অবস্থা খুবই নাজুক। ঝড় বন্যার সময় থাকার মতো উপযোগী নয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঘরের মালিকানার কাগজপত্র (দলিল) তৈরি না হওয়ায় ঘরগুলো হস্তান্তর করা হয়নি। এ বিষয়ে প্রকল্পের সভাপতি ইউএনও পিজুস চন্দ্র দে বলেন,‘নিয়মানুযায়ী সব কিছু করা হয়েছে।’
×