নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা ৬ ডিসেম্বর ॥ গাইবান্ধার টেলিগ্রাম ও পিসিও অফিস ভবনটির এখন জরাজীর্ণ। অথচ এক সময় সরকারী টেলিফোন ও টেলিগ্রাম বিভাগের আওতাধীন পিকে বিশ্বাস রোডে গাইবান্ধা প্রধান ডাকঘর সংলগ্ন এই অফিসটি ছিল দ্রুত যোগাযোগ মাধ্যমের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ অফিস। গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ততম সড়কের পাশে টেলিগ্রাম ও পিসিও অফিসটি অযত্ন অবহেলায় এখন গণশৌচাগার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। গোটা ভবনটি নানা আগাছায় পরিপূর্ণ হয়ে প্রাচীন কোন পরিত্যক্ত ভবনের রূপ ধারণ করেছে। এমনকি অফিসের দরজা-জানালাসহ আসবাবপত্র খোয়া যাচ্ছে। মূল্যবান অফিস ভবনটিতে শ্যাওলা জন্মে এখন তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সেদিকে কোন নজর নেই। মোবাইল টেলিফোন এবং ইন্টারনেট সার্ভিস চালু হওয়ার আগে একসময় মানুষের যোগাযোগের মাধ্যম ছিল ডাকযোগে প্রেরিত চিঠি এবং দ্রুত খবরা-খবর আদান প্রদানের জন্য টরে টক্কা মোস কোডে পাঠানো টেলিগ্রাম। সে সময় শুধু জেলা ও মহুকুমা পর্যায়েই এই টেলিগ্রাম অফিস ছিল। ওই অফিসে টেলিগ্রামের নির্দিষ্ট ফরমে ইংরেজীতে বার্তাটি লিখে দিয়ে বার্তার সংখ্যা অনুযায়ী ফি জমা দিতে হতো। ওই বার্তাটি টরে টক্কা মোস কোডে প্রাপকের মহুকুমা টেলিগ্রাম অফিসে প্রেরণ করা হতো। মহুকুমা অফিস থেকে শুধুমাত্র শহর এলাকায় তাদের নিজস্ব পিয়ন দিয়ে কাগজে ছাপানো ওই বার্তাটি বিলি করা হতো। আর মহুকুমার বাইরে ডাকযোগে প্রাপকের ঠিকানায় প্রেরণ করা হতো।
পরবর্তীতে টিএ্যান্ডটির আওতায় টেলিফোন সার্ভিস চালু হওয়ার পর টেলিগ্রামের পাশাপাশি সরকারী পিসিও (পাবলিক কল অফিস) হিসেবেও ব্যবহৃত হতে থাকে। তখন ওখান থেকে এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে টেলিফোনে কথা বলার সময় অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি জমা দিয়ে বাইরে এ্যান্ডডাব্লিউডি কল এবং স্থানীয় পর্যায়ে লোকাল কল করা যেত। ফলে যোগাযোগ মাধ্যমের একমাত্র অফিস হিসেবে এই টেলিগ্রাম ও পিসিও অফিসটি মানুষের কাছে ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ঘরে ঘরে সরকারী টেলিফোন সার্ভিস চালু হওয়ার পর থেকেই এই অফিসটির গুরুত্ব কমতে থাকে। পরবর্তী পর্যায়ে মোবাইল ও টেলিফোন চালু হলে এই টরে টক্কা টেলিগ্রাম সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি সরকারী টেলিফোন সার্ভিসও মানুষের কাছে এখন প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। তদুপরি ডাকযোগে চিঠিপত্র লেখা তো বন্ধ হয়েই গেছে। সেই থেকে এই টেলিগ্রাম ও পিসি অফিসটি বন্ধ এবং পরিত্যক্ত হয়ে যায়।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: