ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চুয়াডাঙ্গায় আবর্জনায় আগুন ধরাতে গিয়ে দগ্ধ স্কুলছাত্রী

প্রকাশিত: ১১:৪৫, ৭ ডিসেম্বর ২০১৯

 চুয়াডাঙ্গায় আবর্জনায়  আগুন ধরাতে  গিয়ে দগ্ধ  স্কুলছাত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা, চুয়াডাঙ্গা, ৬ ডিসেম্বর ॥ সদর উপজেলার উজলপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত আবর্জনায় আগুন ধরাতে গিয়ে মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়েছে তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী সিন্থিয়া (৮)। অগ্নিদগ্ধের ঘটনাটি বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার পর ঘটলেও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রিজিয়া খাতুন ওই দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামান কামালকে ঘটনাটি জানালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হয়। সে সময় দগ্ধ ছাত্রীটির সঙ্গে নানি ও খালা ছিল। উজলপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রিজিয়া খাতুন জানান, বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত আবর্জনায় কয়েক ছাত্র-ছাত্রীকে আগুন জ্বালিয়ে দিতে বলা হয়। এ কথা বলে অন্য শিক্ষকসহ তিনি অফিস কক্ষে বসে আলাপচারিতায় ব্যস্ত ছিলেন। এ সময় সিন্থিয়া আগুন ধরাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হলে তারা তাকে সঙ্গে সঙ্গে দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌর শহরের একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ছাত্রীকে ফিরিয়ে দেয়া হলে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তিনি ছাত্রীটির চিকিৎসা ব্যয় সংগ্রহের জন্য সেখান থেকে চলে আসেন। তারপর থেকে ছাত্রীটির খোঁজ নেয়া হয়নি বলে তিনি জানান। তিনি দাবি করেন, টাকা সংগ্রহ করে ঢাকায় চলে যাবেন। তবে মারাত্মকভাবে দগ্ধ ছাত্রী কোথায় চিকিৎসা নিচ্ছে তা তিনি জানেন না। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামান কামাল বলেন, ছাত্রীটি এতটাই দগ্ধ হয়েছে তাকে বাঁচানোই মুশকিল। কারণ, বিদ্যালয়ে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটলেও ঘটনাটি চেপে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু সেটা সম্ভব না হওয়ায় রাতে তাকে ঘটনাটি জানানো হয়। মেয়েটির পরিবার এতটাই অস্বচ্ছল যে, চিকিৎসার জন্য টাকা সংগ্রহ করাও তাদের জন্য দুরূহ। ছাত্রীটির চিকিৎসা করানোর জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঘটনাটি অমানবিক। শুক্রবার দুপুরে আমরা সদর হাসপাতালে উপস্থিত থেকে ছাত্রীটিকে চিকিৎসার জন্য কিছু টাকাসহ ঢাকাতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। তার চিকিৎসার জন্য আমরা সার্বিক সহযোগিতা করব। শনিবার এ বিষয়ে একজন সহকারী শিক্ষা অফিসার তদন্ত করবে। তদন্তে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতার প্রমাণ মিললে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার শামীম কবির জানান, ছাত্রীটির নিম্নাঙ্গের সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। তার অবস্থা ভাল না। সে জন্য তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ বার্ন ইউনিটে প্রেরণ করা হয়েছে।
×