ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মেসি-রোনাল্ডোদের প্রতি রাপিনোর আহ্বান

প্রকাশিত: ১২:২০, ৬ ডিসেম্বর ২০১৯

মেসি-রোনাল্ডোদের প্রতি রাপিনোর আহ্বান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অসাধারণ একটি বছর পার করলেন মেগান রাপিনো। বিশ্বকাপ, গোল্ডেন বল, গোল্ডেন বুট, ফিফার সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ‘দ্য বেস্ট’ জেতার পর সোমবার ব্যালন ডি’অরও নিজের শোকেসে তুললেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই কিংবদন্তি ফুটবলার। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে এক জমকালো অনুষ্ঠানে এই পুরস্কারে ভূষিত করা হয় তাকে। কিন্তু পুরস্কারের মঞ্চে উপস্থিত হতে পারেননি তিনি। তবে এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ৩৪ বছর বয়সী এই তারকা ফুটবলার। ফুটবল মাঠে অপ্রতিরোধ্য মেগান রেফানো। এসব পুরস্কারই প্রমাণ করে তার মাঠের পারফর্মেন্সের শ্রেষ্ঠত্ব। মাঠের বাইরে আমেরিকান এই ফুটবলারের কণ্ঠও বেশ প্রতিবাদী। সমাজের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বরাবরই কথা বলেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের সমকামী আন্দোলন, বর্ণবাদ, বৈষম্যের ব্যাপারে সবসময়ই সোচ্ছার মেগান রেফানো। ব্যালন ডি’অর জয়ের পর ফ্রান্স সাময়িকীকে দেয়া সাক্ষাতকারে আমেরিকান কিংবদন্তি এসব ব্যাপারে আওয়াজ তুলার জন্য আহব্বান জানিয়েছেন বর্তমান ফুটবলের সেরা সব তারকাদের। এই সময়ে লিওনেল মেসি, ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো এবং জøাতান ইব্রাহিমোভিচের কাছ থেকে প্রকাশ্যেই সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে রাপিনো বলেন, ‘আমি চিৎকার করে বলতে চাই, ক্রিস্টিয়ানো (রোনাল্ডো), লিওনেল (মেসি), জøাতান (ইব্রাহিমোভিচ) আমাকে সাহায্য কর।’ এরপরই পুরুষ ফুটবলের মহাতারকাদের সমালোচনা করেন মেগান রাপিনো। তিনি বলেন, ‘পুরুষ ফুটবলে যখন নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয় তখন এসব বড় বড় তারকাদের কোথাও সংশ্লিষ্টতা দেখা যায় না। তারা কী তাহলে সবকিছু হারানোর ভয় পায়? আমার মনে হয় তারা এমনটাই বিশ্বাস করে। কিন্তু তাদের ধারণাটা সত্য নয়। বর্ণবাদ কিংবা নারীদের বৈষম্যের ব্যাপারে যদি কোন বিবৃতি দেয় তাহলে কে মেসি-রোনাল্ডোদের বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলবে?’ মেগান রাপিনো এখন বিশ্বে মেয়েদের ফুটবলের অন্যতম মুখ। তাকেই নেতা মানছেন সকলে। ছেলেদের বিশ্বকাপের সঙ্গে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন মেগান। তার গলার সুর ধরেই বিশ্বকাপ ফাইনালের গ্যালারি থেকে আওয়াজ ওঠেছিল, ‘ইক্যুয়াল পে বা সমান বেতনের।’ হল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের আগে লাইনে দাঁড়িয়ে জাতীয় সঙ্গীতে গলা মেলাননি সতীর্থদের সঙ্গে। বিশ্বকাপের শুরু থেকে একই ঘটনা। তা নিয়ে কম আলোচনা-সমালোচনা হয়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গেও বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি। জাতীয় সঙ্গীত না গাওয়ার বিতর্কে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প টুইটে মেগানকে উদ্দেশ্য করে লিখেছিলেন, ‘কথা পরে হবে। নিজের কাজটা আগে করতে হবে।’ আক্ষরিক অর্থে তা করে দেখিয়েছেন মেগান। বিশ্বের সাতটি দেশের ক্লাবে খেলেছেন। অভিজ্ঞতা সমুদ্রে বিচরণ করছেন তিনি। মার্কিন বিখ্যাত নারী এনবিএ তারকা সু বার্ড মেগানের বান্ধবী। চারটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ ও চারটি অলিম্পিক সোনার মালিক সু বার্ডের সঙ্গে দুই বছর ধরে ডেটিং করছেন মেগান। গত বছর ইএসপিএন দুজনের একটি ছবি দিয়ে বলেছিল, ‘তারা আমেরিকার প্রথম একই সেক্সের দম্পতি।’ তবে এসবে কিছু আসে-যায় না মেগানের। বরং নারীদের ফুটবলে তার সমান অর্থের দাবি বিশ্বকে প্রভাবিত করছে। বিশ্ব জয়ের পর মেগান বলেছিলেন, ‘সমান অর্থের দাবি শুধু বিশ্বে প্রতিষ্ঠা করা নয়, বরং আদায় করার চেষ্টা করে যেতে হবে। এটা শুরু, তবে জানি না এর শেষ কোথায়। ফিফাও পারবে না এই দাবি নস্যাৎ করতে।’
×