ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কিশোর-কিশোরীদের সঙ্গে সংলাপ

শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যত গড়তে মেয়র আতিকের পরিকল্পনা

প্রকাশিত: ১১:৪৬, ৫ ডিসেম্বর ২০১৯

শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যত গড়তে মেয়র আতিকের পরিকল্পনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শহরে বসবাসরত শিশুদের সুন্দর আগামী গড়তে পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্তের কথা জানালেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম। মেয়র শিশুদের সংস্কৃতি চর্চা করতে ডিএনসিসির কোন গানের স্কুল বা ড্যান্স ক্লাবে কোন প্রকার ফি ছাড়াই নাচ গান শেখার বিশেষ সুবিধা প্রদানের ঘোষণা দেন। এখন থেকে কোন খেলার মাঠে মেলা পরিচালনা বন্ধ করে শিশুদের খেলার জন্য মাঠ খোলা রাখা হবে। বনানী মাঠ শুধুমাত্র নারী ও শিশুদের জন্য খোলা রাখা ও কিশোরীদের কৈশরকালীন স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানতে মাতৃসদনে বিশেষ কর্নার চালু করা, নারী স্বাস্থ্য সেবা নির্বিঘœ করতে ডিএনসিসি এলাকায় শতভাগ নারী দ্বারা পরিচালিত কোন ফার্মেসিকে হোল্ডিং টেক্স মওকুফ করা ও শিশুদের যে কোন সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধানে স্থানীয় কাউন্সিলরকে অভিযোগ প্রদান ও ৩৩৩-এ কল করার আহ্বান জানান মেয়র। শিশুদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা শেষে তাদের মনের কথা শুনে এসব সিদ্ধান্তে উপনীত হন তিনি। রাজধানী ঢাকাকে শিশুবান্ধব শহর গড়ার লক্ষ্যে বুধবার বেলা ১২টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত গুলশানে ডিএনসিসির নগর ভবনে কিশোর-কিশোরীদের সঙ্গে কিশোর কিশোরীদের আমরাও বলতে চাই শীর্ষক এক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এতে মেয়র শিশুদের মতামত শুনে এসব পরিকল্পনার কথা জানান। ডিএনসিসির বিভিন্ন এলাকা থেকে বিশেষ করে সুবিধা বঞ্চিত কিশোর-কিশোরীগণ এ সংলাপে অংশগ্রহণ করে। সংলাপটির আয়োজন করে ডিএনসিসি স্বাস্থ্য বিভাগ এবং সার্বিক সহযোগিতায় ছিল ইউনেসেফ বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানে কিশোর-কিশোরীরা পরিবেশ দূষণ, শিশুশ্রম, খেলার মাঠ, নিরাপত্তাহীনতা, কৈশোর স্বাস্থ্যসেবা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নিরাপদ পানি, বস্তির আবাসন, সংস্কৃতি চর্চা, নির্বিঘেœ চলার নিরাপত্তাসহ নানা বিষয়ে মেয়রের কাছে দাবি তুলে ধরেন। মেয়রও তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন। অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ হাসান নামে একজন কিশোর সিটি কর্পোরেশনে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ নেই এবং যা আছে সেগুলোও মেলার কারণে দখল হয় জানালে মেয়র বলেন, সিটি কর্পোরেশনের কোন মাঠে কোন ধরনের মেলা হবে না। আমরা এর অনুমতি দেব না। এগুলো শিশু-কিশোররা ব্যবহার করবে। যদি কোথাও কেউ সমস্যা করে, তোমাদের খেলতে না দেয়, তাহলে ৩৩৩-এ কল করে বলবে, আমার খেলার মাঠে আমাকে খেলতে দেয়া হচ্ছে না। আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব। এ সময় কিশোরীরা তাদের খেলাধুলা এবং মাঠ ও পার্কে যাওয়ার নিরাপদ পরিবেশ দাবি করলে মেয়র বলেন, আমরা ২৪টি খেলার মাঠ ও পার্কের সংস্কার ও উন্নয়ন করছি, যার ১৭টিতেই সিসি টিভি ক্যামেরা এবং এলইডি লাইট থাকবে। বনানী ১৮ নম্বর রোডের মাঠে শুধু নারী ও শিশুরা খেলবে। আর বাকিগুলোতে ও একটি নির্দিষ্ট সময়ে বা একটি নির্দিষ্ট জায়গা কিশোরীদের জন্য আলাদা করে দেয়া যায় কি না আমরা দেখব। মেয়র বলেন, তোমরা সংস্কৃতি ক্লাবের সদস্য হও। ঘরে বসে থেকে বিষণœ না হয়ে সংস্কৃতি চর্চা করো, কিশোর-কিশোরী ক্লাব করো। এজন্য আমাদের ৫টি সঙ্গীত স্কুল রয়েছে। এতে কোন প্রকার ফি ছাড়াই তোমরা নাচ গান কবিতা আবৃতি শিখতে পারবে। মেয়র এক কিশোরীর প্রশ্নের জবাবে কড়াইল বস্তির ড্রেনেজ ব্যবস্থা আরও উন্নয়ন করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। মরিয়ম আক্তার মেঘলা নামের এক কিশোরী সিটি কর্পোরেশনের কাছে হাসপাতাল ও ফার্মেসিগুলোতে নারী চিকিৎসক এবং ফার্মাসিস্ট চান। মেঘলা বলেন, আমাদের কিশোরীদের অনেক ধরনের সমস্যা থাকে, কিন্তু আমরা সেগুলো হাসপাতালে বা ফার্মেসিতে বলতে পারি না কারণ সেখানে পুরুষ বেশি। এ বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডাঃ মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, সিটি কর্পোরেশনের মাতৃসদন হাসপাতালগুলোতে নারী চিকিৎসক আছেন, সেখানে কিশোর-কিশোরী কর্নার আছে। তোমরা সেখানে আসতে পার। আমাদের স্বাস্থ্য কর্মীরাও ভিজিটে তোমাদের কাছে যাবে। এ বিষয়ে মেয়র বলেন, আমি ঘোষণা দিচ্ছি যেসব ফার্মেসিতে শতভাগ নারী কর্মী থাকবেন তাদের থেকে কোন ধরনের কর নেবে না সিটি কর্পোরেশন। মেয়র বলেন, শিশুদের আজকের মতোই সাহস করে কথা বলতে হবে।
×