ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হ্যামিল্টন টেস্ট ড্র, সিরিজ নিউজিল্যান্ডের

প্রকাশিত: ১৩:০৬, ৪ ডিসেম্বর ২০১৯

হ্যামিল্টন টেস্ট ড্র, সিরিজ নিউজিল্যান্ডের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রস টেইলরের ভাগ্য বলতে হবে। হ্যামিল্টনে তখন গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি। যে কোন সময় খেলা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সাবেক কিউই অধিনায়কের নামের পাশে ৮৯। অন্যপ্রান্তে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ততক্ষণে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। বল করতে আসলেন অকেশনাল জো রুট। প্রথম বলে রান নেই। পরের তিন বল থেকে এলো ১৬। প্রথমে চার, পরে টানা দুই ছক্কা। তাতেই সেঞ্চুরি হয়ে গেল টেইলরের। ওই ওভারের পরই খেলা বন্ধ করে দেন আম্পায়াররা। বল আর মাঠে গড়ায়নি। রোমাঞ্চের ইঙ্গিত দেয়া টেস্ট নিষ্প্রাণ ড্র। দুর্দান্ত ডাবল সেঞ্চুরিতে ম্যাচসেরা ইংল্যান্ড অধিনায়ক রুট (২২৬)। মাউন্ট ম্যাঙ্গানুইয়ে প্রথম টেস্টে এগিয়ে থাকায় ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতল স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। দুই ম্যাচের তিন ইনিংসে ১৩ উইকেট নিয়ে সিরিজসেরা স্বাগতিক পেসার নেইল ওয়েগনার। টেস্ট হারলেও পাঁচ ম্যাচের টি২০ ৩-২এ জিতেছিল সফরকারী ইংলিশরা। এই সিরিজটা যদিও আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত নয়। উল্লেখ্য, টম লাথামের (১০৫) সেঞ্চুরির ওপর ভর করে প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ড করে ৩৭৫, দ্বিতীয় ইনিংসে বৃষ্টির আগে ২ উইকেটে ১৪১। আর অধিনায়ক রুটের (২২৬) দারুণ ডাবল সেঞ্চুরি ও ওপেনার জো বার্নসের (১০১) সেঞ্চুরির সৌজন্যে প্রথম ইনিংসে ৪৭৬ রান করে সফরকারী ইংল্যান্ড। মঙ্গলবার শেষদিন সেঞ্চুরির পথে নিউজিল্যান্ডের মাত্র দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ৭ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন টেইলর। শীর্ষে থাকা স্টিভেন ফ্লেমিংকে ছুঁতে তার প্রয়োজন আর কেবল ১০০ রান। উইলিয়ামসন ও টেইলরের জুটি জমে গিয়েছিল আগেরদিনই। তারপরও শেষদিন তাদের অপেক্ষায় ছিল পরীক্ষা। প্রথম সেশনে দ্রুত উইকেট হারালে ইংল্যান্ডের সামনে সৃষ্টি হতে পারত জয়ের পথ। সেটি হতে দেননি কিউইদের সেরা দুই ব্যাটসম্যান। দু’জনের দারুণ ব্যাটিংয়ে প্রথম সেশনে উইকেট হারায়নি নিউজিল্যান্ড। ম্যাচের ভাগ্য অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায় তাতেই। ইংল্যান্ড অবশ্য জুটি ভাঙ্গার সুযোগ পেয়েছিল। ৬১ রানে উইলিয়ামসন ক্যাচ দিয়েছিলেন জোফ্রা আর্চারের বলে। জো ডেনলি যে ক্যাচটি ছাড়লেন এরচেয়ে সহজ সুযোগ কমই আসে ক্রিকেটে। ৯৬ রান নিয়ে লাঞ্চে যান কিউই অধিনায়ক উইলিয়ামসন, ৮৪ রান নিয়ে টেইলর। লাঞ্চের পরপরই জো রুটের বলে বাউন্ডারি মেরে উইলিয়ামসন সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ২৩১ বলে। বাতাসে তখন বৃষ্টির ছোঁয়া। অভিজ্ঞ টেইলরও নিজের করণীয় বুঝে গিয়েছিলেন। রুটের পরের ওভারেই ৮৯ থেকে টানা তিন বলে এক চার ও দুই ছক্কায় পৌঁছে যান তিন অঙ্কে। ১৮৪ বলে ছুঁয়ে ফেলেন সেঞ্চুরি। দুই বল পরই বৃষ্টি এসে থামায় খেলা। ভাগ্য বলতেই হবে। আর শুরু হতে পারেনি। ডাবল সেঞ্চুরির জন্য ম্যাচের সেরা হয়েছে ইংলিশ অধিনায়ক রুট। তার ক্যারিয়ারের এটি তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি, অধিনায়ক হিসেবে প্রথম। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সফরকারী কোন অধিনায়কদের মধ্যে সর্বোচ্চ ইনিংসের আগের রেকর্ড ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ তারকা ক্রিস গেইলের ১৯৭, নেপিয়ারে ২০০৮ সালে। ২ টেস্টে ১৩ উইকেট নিয়ে সিরিজের সেরা কিউই বাঁহাতি পেসার নিল ওয়েগনার। স্কোর ॥ নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস- ৩৭৫/১০ (১২৯.১ ওভার; লাথাম ১০৫, উইলিয়ামসন ৪, টেইলর ৫৩ নিকোলস ১৬, ওয়াটলিং ৫৫, মিচেল ৭৩, স্যান্টনার ২৩, সাউদি ১৮, হেনরি ৫*, ওয়েগনার ০; ব্রড ৪/৭৩, আর্চার ১/৭৫, ওকস ৩/৮৩, কুরান ২/৬৩) ও দ্বিতীয় ইনিংস- ২৪১/২ (৭৫ ওভার; লাথাম ১৮, রাভাল ০, উইলিয়ামসন ১০৪*, টেইলর ১০৫* ; কুরান ১/৫৬, ওকস ১/১২)। ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস- ৪৭৬/১০ (১৬২.৫ ওভার; বার্নস ১০১, সিবলি ৪, ডেনলি ৪, রুট ২২৬, স্টোকস ২৬, ক্রলি ১, পোপ ৭৫, কুরান ১১*, ওকস ০, আর্চার ৮, ব্রড ০; সাউদি ২/৯০, হেনরি ১/৮৭, ওয়েগনার ৫/১২৪, স্যান্টনার ১/৮৮)। ফল: টেস্ট ম্যাচ ড্র। ম্যাচসেরা: জো রুট (ইংল্যান্ড)। সিরিজ: দুই টেস্টের সিরিজ নিউজিল্যান্ড ১-০ ব্যবধানে জয়ী। সিরিজসেরা : নেইল ওয়াগনার (নিউজিল্যান্ড)।
×