ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রোনাল্ডো, ভার্জিলকে টপকে মেসির ষষ্ঠ ব্যালন ডি’অর জয়

প্রকাশিত: ১৩:০৪, ৪ ডিসেম্বর ২০১৯

রোনাল্ডো, ভার্জিলকে টপকে মেসির ষষ্ঠ ব্যালন ডি’অর জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোকে প্যারিসে জমকালো অনুষ্ঠানে না দেখেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল, লিওনেল মেসি তাকে টপকে যাবেন সেটা চোখের সামনে দেখতে পারবেন না বলেই কি সোমবার রাতের ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠান এড়িয়ে গেলেন পর্তুগাল তারকা। ফিফার বর্ষসেরা হওয়ার পরে এবারের ব্যালন ডি’অরেও অনেকেই এগিয়ে রেখেছিলেন মেসিকে। আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি প্রত্যাশা মতোই ষষ্ঠবার এই সম্মান জিতলেন। দ্বিতীয় ভার্জিল ফন ডাইক, তৃতীয় রোনাল্ডো। মহিলাদের বিভাগে বর্ষসেরা হলেন বিশ্বকাপ জয়ী মার্কিন তারকা মেগান রাপিনো। তিনিও অনুষ্ঠানে ছিলেন না। তবে উচ্ছ্বসিত মার্কিন ফুটবলার বার্তা পাঠান, মাঠে এবং মাঠের বাইরে আজ আমি যা হয়ে উঠতে পেরেছি তারজন্য আমার সতীর্থরা কোচ ও আমার ফেডারেশনকে ধন্যবাদ দেব। এ বছর ওখানে থাকতে পারলাম না। আগামী বছর নিশ্চয়ই চেষ্টা করব যাওয়ার। বর্ষসেরা গোলকিপার হন ব্রাজিল ও লিভারপুলের তারকা এ্যালিসন বেকার। গত আগস্টে মেসি ও রোনাল্ডোকে হারিয়ে উয়েফা বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হন হল্যান্ডের ভার্জিল ফন ডাইক। পরের মাসে এই ডাচ ডিফেন্ডার ও পর্তুগীজ তারকা রোনাল্ডোকে পেছনে ফেলে প্রথমবারের মতো ‘দ্য বেস্ট ফিফা মেনস প্লেয়ার’ পুরস্কারটি জিতে নেন বার্সিলোনা তারকা। তাহলে ব্যালন ডি’অর জিতবে কে? প্রশ্নটিকে ঘিরে শুরু হয় নানা গুঞ্জন। এবার তার উত্তর মিলল। প্যারিসে এক জমকালো অনুষ্ঠানে লিওনেল মেসির হাতে তুলে দেয়া হয় ফরাসী সাময়িকী ‘ফ্রান্স ফুটবল-এর পুরস্কারটি ব্যালন ডি’অর ২০১৯। রেকর্ড ষষ্ঠবারের মতো পুরস্কারটি জিতলেন আর্জেন্টাইন তারকা। এতদিন সমান পাঁচবার করে পুরস্কারটি জয়ের রেকর্ড ছিল মেসি ও রোনাল্ডোর। বরাবরের মতো গত মৌসুমটাও দারুণ কাটে মেসির। বার্সিলোনাকে লা লিগা জেতাতে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। কাতালান ক্লাবটির চ্যাম্পিয়ন্স লীগের সেমিফাইনালে ও কোপা দেল’রের ফাইনালে উঠাতেও বড় অবদান ছিল আর্জেন্টাইন তারকার। ক্লাব পর্যায়ে ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে আরও বেশি উজ্জ্বল ছিলেন বার্সিলোনা অধিনায়ক। লা লিগায় সর্বোচ্চ ৩৬ গোল করে একইসঙ্গে জিতে নেন পিচিচি ট্রফি ও ইউরোপিয়ান গোল্ডেন সু। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে করেন সর্বোচ্চ ১২ গোল। ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে গেল মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৫৮ ম্যাচ খেলে ৫৪ গোল করেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি মেসি। জাতীয় দলের হয়ে মৌসুমটা অবশ্য ভাল কাটেনি তার। কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে ব্রাজিলের কাছে হেরে যায় তার দেশ আর্জেন্টিনা। টুর্নামেন্টজুড়ে ছিলেন নিষ্প্রভ। তবে বর্ষসেরা স্বীকৃতি পেতে তা বাধা হতে পারেনি। চলতি মৌসুমের শুরুতে চোটের কারণে বেশ কয়েক ম্যাচ বাইরে ছিলেন তিনি। তবে মাঠে ফিরে এরই মধ্যে স্বরূপে ফিরেছেন বার্সিলোনা অধিনায়ক। আসরে এখন পর্যন্ত করেছেন সর্বোচ্চ ৯ গোল। সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন পাঁচটি গোল। ২০০৯ সালে প্রথম বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছিলেন মেসি। ফিফার বর্ষসেরা ও ফ্রান্স ফুটবল সাময়িকীর ব্যালন ডি’অর পুরস্কার শুরুতে আলাদাভাবে দেয়া হতো। সে বছর দুটিই জিতেছিলেন তিনি। ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ছয় বছর দুটি পুরস্কার একীভূত হয়ে নাম হয় ফিফা ব্যালন ডি’অর। পরপর তিন বছর ওই পুরস্কার জিতেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। এর পরের দুই বছর পর্তুগীজ সুপারস্টার রোনাল্ডো জেতার পর ২০১৫ সালে আবারও পুরস্কারটি জিতে নেন মেসি, জিতেন ওই সময়ের রেকর্ড পঞ্চমবারের মতো। ২০১৬ সাল থেকে আবার আলাদাভাবে দেয়া হচ্ছে পুরস্কার দুটি। ২০১৬ ও ২০১৭ সালে ফিফা বর্ষসেরা ও ব্যালন ডি’অর জিতেন রোনাল্ডো। আর ২০১৮ সালে সবকটি পুরস্কার জিতেন লুকা মড্রিচ। এ বছরের বিজয়ী নির্বাচনে গত ২১ অক্টোবর ৩০ জনের তালিকা প্রকাশ করেছিল ফ্রান্স ফুটবল ম্যাগাজিনটি। এবার তার মধ্য থেকে বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের ভোটে সেরা নির্বাচিত হলেন লিওনেল মেসি। সেরা-১০ প্রথম : লিওনেল মেসি (বার্সিলোনা, আর্জেন্টিনা)। দ্বিতীয় : ভার্জিল ফন ডাইক (লিভারপুল, নেদারল্যান্ডস)। তৃতীয় : ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো (জুভেন্টাস, পর্তুগাল)। চতুর্থ : সাদিও মানে (লিভারপুল, সেনেগাল)। পঞ্চম : মোহাম্মদ সালাহ (লিভারপুল, মিসর)। ষষ্ঠ : কিলিয়ান এমবাপে (পিএসজি, ফ্রান্স)। সপ্তম : এ্যালিসন বেকার (লিভারপুল, ব্রাজিল)। অষ্টম: রবার্ত লেভানডোস্কি (বায়ার্ন মিউনিখ, পোল্যান্ড)। নবম : বের্নার্দো সিলভা (ম্যানচেস্টার সিটি, পর্তুগাল)। দশম: রিয়াদ মাহরেজ (ম্যানচেস্টার সিটি, আলজেরিয়া)।
×