ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

একুশে গ্রন্থমেলা এখন সাংস্কৃতিক জীবনের অপরিহার্য অঙ্গ ॥ আনিসুজ্জামান

প্রকাশিত: ১১:৩১, ৪ ডিসেম্বর ২০১৯

একুশে গ্রন্থমেলা এখন সাংস্কৃতিক জীবনের অপরিহার্য অঙ্গ ॥ আনিসুজ্জামান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মুক্তিযুদ্ধ থেকে প্রেরণা নিয়ে বাংলা একাডেমির পরিসর এখন সবদিক দিয়ে প্রশস্ত হয়েছে। প্রকাশনা একাডেমির একটা বড় কাজ। একাডেমি থেকে বহু ধরনের অভিধান প্রকাশিত হয়েছে এবং তার অধিকাংশই বিস্ময়করভাবে জনপ্রিয় হয়েছে। অপ্রকাশিত পা-ুলিপি থেকে সম্পাদিত বাংলা সাহিত্যকর্মের প্রকাশ এর আরেকটি কাজের দিক। লোকসংস্কৃতির নমুনা সংগ্রহ ও সম্পাদনায় একাডেমি বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছে। একাডেমি-আয়োজিত অমর একুশে গ্রন্থমেলা এখন বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক জীবনের অপরিহার্য অঙ্গে পরিণত হয়েছে। মঙ্গলযার বাংলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর একক বক্তৃতায় কথাগুলো জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, সমাজকে সংস্কৃতি প্রিয় হতে সাহায্য করে বাংলা একাডেমির মতো প্রতিষ্ঠান। সমাজেও সংস্কৃতির প্রতি ভালবাসার একটা ক্ষেত্র থাকতে হবে, তবেই তার মধ্যে অবস্থিত প্রতিষ্ঠান থেকে সে গ্রহণ করতে সমর্থ হবে। বাংলা একাডেমি নিঃসঙ্গ দ্বীপের মতো নয়। সমাজে তার অবস্থান, সমাজেই তার ভিত্তি। সেই ভিত্তিটা যত শক্ত হয়, উভয়ের ততই মঙ্গল। মঙ্গলবার উৎসবমুখরতায় উদ্্যাপিত হলো বাংলা একাডেমির ৬৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। বিশিষ্টজনদের পদচারণায় একাডেমির সবুজ আঙিনাজুড়ে বিরাজ করেছে প্রাণের কলরব। দিনভর ছিল নানা আয়োজন। সকালে সম্মেলক কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচী শুরু হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। একাডেমির পতাকা উত্তোলন করেন মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। শান্তির প্রতীক পায়রার সঙ্গ বেলুন উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন ঘোষণা করেন আনিসুজ্জামান। এরপর মহান ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদদের স্মৃতির প্রতি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এবং বাংলা একাডেমির স্বপ্নদ্রষ্টা ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্’র সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করা হয়। বিকেলে একাডেমির রবীন্দ্রচত্বরে ‘বাংলা একাডেমি ও আমাদের সমাজ’ শীর্ষক প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর একক বক্তৃতা দেন আনিসুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, একাডেমির সচিব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। সভাপতিত্ব করেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রয়াত ভাষাসংগ্রামী রওশন আরা বাচ্চুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ছয় দশকের পরিক্রমায় বাংলা একাডেমি আজ এক আলোক-বৃক্ষের নাম। বাংলা একাডেমিকে ঘিরে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা এতটাই বিপুল যে আমাদের সীমিত সাধ্যে তা তাৎক্ষণিকভাবে পূরণ করা সম্ভব নয় তবু আমরা বাঙালীর এই প্রাণের প্রতিষ্ঠানকে জাতির মনন- আকাক্সক্ষার উপযুক্ত করে গড়ে তোলার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলা একাডেমি বাঙালী জাতির বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষ এবং সাংস্কৃতিক অগ্রসরমানতার প্রতীক প্রতিষ্ঠান। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, অধ্যাপক আনোয়ারুল করীম, উজবেকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মসয়ুদ মান্নান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, মোনায়েম সরকার, শিক্ষাবার্তা সম্পাদক এ এন রাশেদা, ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেল, অধ্যাপক হাবিব আর রহমান, ড. ইসরাইল খান প্রমুখ। সুরভিত সন্ধ্যায় শীর্ষক সাংস্কৃতিক পর্বে বিতর্ক প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি এবং সঙ্গীত পরিবেশনায় অংশ নেন বাংলা একাডেমির কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
×