ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মিরপুরে প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্মিত হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী কাল ‘সুবর্ণ ভবন’ উদ্বোধন করবেন

প্রকাশিত: ১১:২৭, ৪ ডিসেম্বর ২০১৯

প্রধানমন্ত্রী কাল ‘সুবর্ণ ভবন’ উদ্বোধন করবেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রতিবন্ধীদের জন্য রাজধানীর মিরপুরে এক শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ‘সুবর্ণ ভবন’ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) ভবনটির উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা, চিকিৎসা, প্রশিক্ষণ, পুনর্বাসন ও আবাসন সুবিধা দিতে ‘সুবর্ণ ভবন’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়। সমাজ কল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ মঙ্গলবার তথ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। এ সময় সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদসহ মন্ত্রণালয়য়ের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, মিরপুর জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন চত্বরে অবস্থিত সুবর্ণ ভবন নামে ১৫ তলা ভবনটি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ভবনটিতে ৩শ’ ছেলে ও ৩শ’ মেয়ে প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা দেয়া ও থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। সুবর্ণ ভবনে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য রয়েছে ডিজএ্যাবল কেয়ার ইউনিট, ইন-পেশেন্ট ডিপার্টমেন্ট, অটিজম রিসোর্স সেন্টার, নিউরো ডেভেলপমেন্টাল সমস্যাযুক্ত ব্যক্তির থেরাপিভিত্তিক সেবা ও কাউন্সিলিং, কারিগরি ও সাধারণ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য স্পেশাল স্কুল ফর চিলড্রেন উইথ অটিজম, অন্যান্য প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ইনক্লু¬সিভ স্কুল, ডে-কেয়ার সেন্টার। ভবনে শিশুদের খেলাধুলার ব্যবস্থা, ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা কর্মচারীদের দাফতরিক কক্ষ, লাইব্রেরি, মাল্টিপারপাস হল, কনফারেন্স রুম, ক্যাফেটেরিয়া, নামাজের স্থান, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রীর প্রদর্শন ও বিক্রয় ব্যবস্থা। মঙ্গলবার উদযাপিত প্রতিবন্ধী দিবসে প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘অভিগম্য আগামীর পথে’। প্রতিবছরের মতো এ বছরও সারাবিশ্বের সঙ্গে এক যোগে দিবসটি পালন করা হয়েছে। সরকার ১২ ধরনের প্রতিবন্ধী নিয়ে কাজ করছে। দেশে প্রায় ১৭ লাখ প্রতিবন্ধী রয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে প্রায় শতভাগ প্রতিবন্ধীকে ভাতার আওতায় আনা হয়েছে। প্রতিবন্ধী আইনের খসড়া আইন মন্ত্রণালেয় ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। তারা মতামত দিলে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করে মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে। মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারই ১৯৯৯ সালে ‘জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করে। ফাউন্ডেশন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের ক্যাম্পাসে ২০১০ সালের ২ এপ্রিল ‘অটিজম রিসোর্স সেন্টারে’র উদ্বোধন করেন। একইসঙ্গে সেখানে একটি করে প্রতিবন্ধী কর্মজীবী পুরুষ ও মহিলা হোস্টেল, প্রতিবন্ধী শিশু নিবাস ও অটিস্টিক স্কুলও চালু করেন। এছাড়া অটিজম-বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশুদের অভিভাবকগণকে শিশুর প্রাত্যহিক লালন পালনের প্রশিক্ষণদানসহ নানা রকম সেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফাউন্ডেশন-ক্যাম্পাসে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শ্রবণ, বুদ্ধি ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য বিদ্যালয়ও চালু রয়েছে। বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর জন্য আবাসিক সুবিধা রয়েছে। এমনকি ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে সারাদেশে ৬৩টি বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ও ১১টি স্পেশাল স্কুল ফর চিলড্রেন উইথ অটিজমও পরিচালিত হচ্ছে, যেখানে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শিক্ষালাভ করছে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এ দিবসটি প্রতিবছরের মতো জেলাপর্যায়ে পালন করলেও এবারই প্রথম এর ব্যাপ্তি উপজেলা পর্যায়েও ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ২০১৪ সালের ২ এপ্রিল জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ভুক্ত একটি অধিদফতরে রূপান্তরের জন্য ‘প্রতিবন্ধী উন্নয়ন অধিদফতর’ হিসেবে ঘোষণার পর এর নামফলকও উন্মোচন করেন। প্রতিবন্ধী উন্নয়ন অধিদফতর প্রতিষ্ঠিত হলে প্রতিবন্ধী সংক্রান্ত কার্যক্রমসমূহ প্রতিটি উপজেলাপর্যায়ে বিস্তার লাভ করবে এবং প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর সেবাদানের বিষয়টি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করবে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে অনুপ্রাণিত করাসহ তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে সাভারে আন্তর্জাতিকমানের একটি বহুমুখী ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণে ১২ দশমিক ১ একর জমি বরাদ্দ করা হয়েছে।
×