ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফুটবলে লজ্জার হার দিয়ে শুরু বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ১০:০৫, ৩ ডিসেম্বর ২০১৯

 ফুটবলে লজ্জার  হার দিয়ে শুরু বাংলাদেশের

স্পোর্টস রিপোর্টার, কাঠমান্ডু, নেপাল থেকে ॥ আগের চারবারের সাক্ষাতে তিনটিতেই জয়। ড্র একটিতে। এসএ গেমস ফুটবলে প্রতিপক্ষ ভুটানের বিরুদ্ধে বেশ সন্তোষজনক পরিসংখ্যানই ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু সোমবার এই পরিসংখ্যান হালনাগাদ করে দিল ভুটান। এসএ গেমস ফুটবলে তারা দারুণ এক জয় কুড়িয়ে প্রথমবারের মতো হারিয়ে দিল বাংলাদেশকে, ১-০ গোলে। কাঠমান্ডুর দশরথের রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশই হেসে খেলে জিতবে এমনটাই অনুমেয় ছিল। কিন্তু সব ধারণা ভুল প্রমাণ করে দিল ভুটান। যে আসরে ভারতের মতো শক্তিশালী দল ফুটবল নাম প্রত্যাহার করে নেয়, সে আসরে বাংলাদেশের তো অনায়াসেই স্বর্ণপদক জেতা উচিত। কিন্তু একি হলো? ভুটানের মতো দলের কাছে এমন লজ্জাজনক হার। এর আগে ২০১৬ সালে ভুটানের কাছে যে ম্যাচে বাংলাদেশ ৩-১ গোলে হেরে প্রবল সমালোচিত হয়েছিল, সেটা ছিল এএফসি কাপের বাছাইপর্বের ম্যাচ। ওই কলঙ্কের কথা বাদ দিলে ভুটানের কাছে আর কোন পর্যায়েই হারেনি বাংলাদেশ, কি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ; কি এসএ গেমস ফুটবলে। অথচ সোমবার এসএ গেমস ফুটবলেই ভুটানের কাছে প্রথমবারের মতো হেরে লজ্জার সাগরে নিপতিত হলো জেমি ডে’র সুযোগ্য শিষ্যরা। গ্যালারিতে খেলা দেখতে আসা কিছু বাংলাদেশী দর্শক ক্ষোভে মন্তব্য করেন, ‘জঘন্য ফুটবল খেলেছে বাংলাদেশ। ভুটানের মতো দলের সঙ্গেও পারে না। বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের পদত্যাগ করা উচিত। তিনি কোন্ মুখে বলেন ২০২২ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ খেলবে।’ দুঃস্বপ্নের ম্যাচটি শেষে ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের কোচ জেমি ডে বলেন, ‘ছেলেদের পারফর্মেন্সে আমি হতাশ। কোন অর্ধেই তারা ভাল খেলেনি। গোলের সুযোগগুলো তারা ভালভাবে কাজে লাগাতে পারেনি। এরকম ফলের জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম না। সত্যিই হতাশ হয়েছি।’ ব্রিটিশ এই কোচ আরও বলেন, ‘ভুটানের সঙ্গে গত মাসে দুটি ম্যাচে জয় পেয়েছিলাম আমরা। যদিও তারা ভাল দল। কিন্তু আমাদের চেয়েও আজ তারা ভাল খেলেছে। এখন সামনের ম্যাচটি (প্রতিপক্ষ মালদ্বীপ) আমাদের জন্য আরও কঠিন হবে।’ ম্যাচের প্রথম মিনিটেই আক্রমণ শানায় বাংলাদেশ। থ্রো পায় ভুটানের গোলসীমানার বাঁ প্রান্তে। রবিউল ইসলাম লম্বা থ্রো করেন। বক্সের ভেতরে ফরোয়ার্ড নাবিব নেওয়াজ জীবনের হেড প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। ভুটানের দীর্ঘদেহী ডিফেন্ডার জিগমে শেরিং দরজি হেড করে কর্নার করে দেন। ৬ মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে অধিনায়ক-মিডফিল্ডার জামালের ডান পায়ের হাল্কা লাফানো শট ভুটানী গোলরক্ষক কিনলে তেনজিন দক্ষতার সঙ্গে ধরে ফেলেন। ১৪ মিনিটে ডানপ্রান্ত দিয়ে বাংলাদেশের আক্রমণ। মিডফিল্ডার মোহাম্মদ ইব্রাহিম উঁচু ক্রস করেন। ফরোয়ার্ড সাদ উদ্দিন যদি সেই ক্রসে মাথা ছোঁয়াতে পারতেন, তাহলে গোলটা হয়তো হয়েই যেত। ৬৫ মিনিটে গোল হয়। বাংলাদেশ নয়, গোলের দেখা যায় ভুটান। অনেকটা সময় চাপ সৃষ্টি করে খেলার পর অবশেষে গোলের সন্ধান পায় তারা। বাঁপ্রান্ত দিয়ে আক্রমণে যায় ভুটান। সতীর্থের কাছ থেকে বল পেয়ে ত্বরিত গতিতে বল নিয়ে বক্সের ভেতরে ঢুকে পড়েন বাংলাদেশের ‘ত্রাস’ চেনচো। বল নিয়ে দ্রুত গতিতে ঢুকে পড়েন। সামনে একমাত্র গোলরক্ষক জিকো। এদিকে বিপদ বুঝে সামনে এগিয়ে বাধা দিতে আসেন জিকো। কিন্তু তকে সেই সুযোগ আর দেননি ভুটানের ‘রোনালদো’ খ্যাত চেনচো। বাঁ পায়ের আলতো চিপে কোনাকুনিভাবে বলকে জালে পাঠিয়ে সতীর্থদের সঙ্গে মেতে ওঠেন গোলের আনন্দে। এগিয়ে যায় ভুটান (১-০)। ইনজুরি সময়ে (৯০+১ মিনিট) গোল শোধের জন্য মরিয়া বাংলাদেশের শেষ প্রচেষ্টাও মাঠে মারা যায়।
×