ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রুটের রেকর্ড গড়া ডাবল সেঞ্চুরি

প্রকাশিত: ১০:০২, ৩ ডিসেম্বর ২০১৯

 রুটের রেকর্ড গড়া  ডাবল সেঞ্চুরি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জাত ব্যাটসম্যানরা চাপ উপভোগ করেন, চাপের মধ্যেই বেশি ভাল খেলেন। দীর্ঘদিন পর ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার হাতে এ্যাশেজ তুলে দিতে হয়েছে ইংল্যান্ডকে। ব্যাটিংয়ে একদমই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি জো রুট। নিউজিল্যান্ড সফরে প্রথম টেস্টে বড় হারের ম্যাচেও ছিলেন ফ্লপ। অনেক কথা হচ্ছিল। সাদা পোশাকের ইংলিশ অধিনায়ক জ্বলে উঠলেন একেবারে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পর। হ্যামিল্টনে তিনদিন পর্যন্ত সমানে-সমান দৌড়ানো সফরকারীদের দারুণ এক ডাবল সেঞ্চুরিতে এগিয়ে দিয়েছেন রুট। খেলেছেন ২২৬ রানের মনোমুগ্ধকার ইনিংস। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কোন ভিনদেশী অধিনায়কের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের রেকর্ড এটি। তাতে হঠাৎই জমে উঠেছে সিরিজ নির্ধারণী দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। প্রথম ইনিংসে ৩৭৫-এর জবাবে ৪৭৬ রান করেছে ইংলিশরা। চতুর্থদিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের স্বোর ৯৬/২। ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ৫ রানে পিছিয়ে স্বাগতিকরা। ক্রিজে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের (৩৭) সঙ্গে আছেন অভিজ্ঞ রস টেইলর (৩১)। শেষ দিনে আজ তাই রোমাঞ্চকর কিছুর আশা করাই যেতে পারে। ৫ উইকেটে ২৬৯ রান নিয়ে দিন শুরু করা ইংল্যান্ডের ইনিংস এগিয়েছে আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান রুট ও অলি পোপের ব্যাটে। দু’জন মিলে ষষ্ঠ উইকেটে যোগ করেন ১৯৩ রান। ধীরে সুস্থে ইনিংস টেনেছেন। সেঞ্চুরিটি ছিল তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ধীরগতির। তবে দুইশ’তে পে্যঁছেছেন তুলনামূলক দ্রুততায়। ম্যাট হেনরির বলে সিঙ্গেল নিয়ে ৪১২ বলে ২২টি চারে ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সময়ের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান। তার ক্যারিয়ারের এটি তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি, অধিনায়ক হিসেবে প্রথম। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সফরকারী অধিনায়কদের মধ্যে সর্বোচ্চ ইনিংসের আগের রেকর্ড ছিল ক্রিস গেইলের ১৯৭, নেপিয়ারে ২০০৮ সালে। অন্যপ্রান্তে রুটকে দারুণ সঙ্গ দেয়া অলি পোপ নিজের প্রথম টেস্ট ফিফটিতে পৌঁছান ১৬৭ বলে। দু’জনের জুটিতে ইংল্যান্ডের লিড যখন তিন অঙ্কের দিকে ছুটছে, তখনই আঘাত হানেন নেইল ওয়েগনার। শর্ট বলে পুল করতে গিয়েছিলেন পোপ। টাইমিংয়ের গড়বড়ে বল গিয়ে জমা পড়ে ডিপ স্কয়ার লেগে থাকা জিত রাভালের হাতে। ২০২ বলে ৭৫ রান করে ফেরেন পোপ। পরের ওভারে মিচেল স্যান্টনারকে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে ডিপ কাভারে হেনরি নিকোলসকে ক্যাচ দেন রুট। ৪৪১ বলের ইনিংসে ২২টি চারের পাশাপাশি ছিল ১টি ছক্কার মার। বলের হিসেবে টেস্টে এটিই রুটের দীর্ঘতম ইনিংস। লোয়ার অর্ডারে ক্রিস ওকস, জোফ্রা আর্চার ও স্টুয়ার্ট ব্রডকে দ্রুত তুলে নিয়ে ইংল্যান্ডকে আর খুব বেশিদূর এগোতে দেননি ওয়াগনার। ২১ রানের মধ্যে শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ড থামে ৪৭৬ রানে। ২০১৭ সালের পর টেস্টে যা তাদের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। ৩৫.৩ ওভারে ১২৪ রানে ৫ উইকেট নিয়ে কিউইদের সবচেয়ে সফল বোলার ওয়েগনার। টেস্টে এই নিয়ে নবমবার ৫ উইকেটের স্বাদ পেলেন এই পেসার। এই বছর ৪ টেস্ট খেলে ৫ উইকেট নিলেন প্রতি টেস্টেই। ১০১ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা নিউজিল্যান্ড ২৮ রানের মধ্যেই হারায় দুই ওপেনার টম লাথাম (১৮) ও জিত রাভালকে (০)। শেষ সেশনের শেষ দুই ঘণ্টায় অবশ্য আর কোন বিপদ হতে দেননি অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ও রস টেইলর। অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৬৮ রান যোগ করেন দু’জনে। স্কোর ॥ নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস- ৩৭৫/১০ (১২৯.১ ওভার; লাথাম ১০৫, উইলিয়ামসন ৪, টেইলর ৫৩ নিকোলস ১৬, ওয়াটলিং ৫৫, মিচেল ৭৩, স্যান্টনার ২৩, সাউদি ১৮, হেনরি ৫*, ওয়েগনার ০; ব্রড ৪/৭৩, আর্চার ১/৭৫, ওকস ৩/৮৩, কুরান ২/৬৩) ও দ্বিতীয় ইনিংস- ৯৬/২ (৩৪ ওভার; লাথাম ১৮, রাভাল ০, উইলিয়ামসন ৩৭*, টেইলর ৩১*; কুরান ১/২৬, ওকস ১/৮)। ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস ৪৭৬/১০ (১৬২.৫ ওভার; বার্নস ১০১, সিবলি ৪, ডেনলি ৪, রুট ২২৬, স্টোকস ২৬, ক্রলি ১, পোপ ৭৫, কুরান ১১*, ওকস ০, আর্চার ৮, ব্রড ০; সাউদি ২/৯০, হেনরি ১/৮৭, ওয়াগনার ৫/১২৪, স্যান্টনার ১/৮৮)। ** চতুর্থদিন শেষে
×