ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সিটিতে নতুন নেতৃত্ব

প্রকাশিত: ০৮:২০, ৩ ডিসেম্বর ২০১৯

সিটিতে নতুন নেতৃত্ব

বর্তমানে সরকারে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনসমূহে নতুন নেতৃত্ব অন্বেষণ ও নতুন কমিটি গঠনের কার্যক্রম চলছে। অনুরূপ চলমান বিভাগীয়, জেলা-উপজেলাসহ ইউনিয়ন পর্যায়েও। বলার কথা এই যে, এতে একেবারে তৃণমূল থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ে নতুন নেতৃত্ব ও কমিটি গঠন সম্ভব হবে। যারা দলকে করবে আরও গতিশীল, যুগোপযোগী, দূরদর্শী সর্বোপরি দলের প্রতি একনিষ্ঠ সৎ, আন্তরিক, নিবেদিত ও যোগ্য। এই কার্যক্রমের অনিবার্য অংশ হিসেবে ইতোমধ্যেই যুবলীগ, মৎস্যজীবী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগসহ আরও দু’একটি অঙ্গ সংগঠনের নতুন নেতৃত্ব ও কমিটি গঠিত হয়েছে। শনিবার হয়েছে ঢাকার দুই মহানগরের নতুন নেতৃত্ব ও কমিটি, অচিরেই যা পূর্ণাঙ্গ রূপ নেবে। উল্লেখ্য, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে। ২০১৫ সালে ঢাকা মহানগরী দুই ভাগে বিভক্ত হওয়ার পর ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল ঘোষণা করা হয় নতুন কমিটি। এরপর পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে গঠিত হলো ঢাকার দুই মহানগরীর নতুন কমিটি। এতে দলে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব আসবে বলেই সর্বস্তরের মানুষের প্রত্যাশা। উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ দেশের প্রধান ও পুরনো রাজনৈতিক দল। তদুপরি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আছে তিন মেয়াদে। সেই প্রেক্ষাপটে দলটির কাছে মানুষের চাওয়া-পাওয়া, আশা-আকাক্সক্ষা এমনকি দাবি-দাওয়াও অনেক বেশি বৈকি। মানুষের সেই আকাক্সক্ষা ও স্বপ্নের জায়গাটিকে নিয়ে ক্ষমতাসীন দলকে নিরন্তর ভাবতে হবে এবং সেসবের সমাধান ও প্রত্যাশা পূরণে পর্যায়ক্রমে হলেও যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। মনে রাখতে হবে যে, বর্তমানে দেশবাসী চলমান প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত শুদ্ধি অভিযান, যা তিনি সূচনা করেছেন যথাসময়ে। বরাবরের মতো এবারও প্রধানমন্ত্রী ঢাকা মহানগরীর নেতাকর্মীদের প্রতি সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে দলটিকে অদূর ভবিষ্যতে ভাবমূর্তির সঙ্কটে পড়তে না হয়। উল্লেখ্য, চলমান শুদ্ধি অভিযানকালে কালো পথে অর্জিত বিপুল অবৈধ অর্থবিত্তের মালিক একাধিক প্রভাবশালী নেতাকর্মী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে জেল জরিমানা-মামলাসহ কারাবাস করছে। বিচক্ষণ বিধায় প্রধানমন্ত্রী শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন নিজ দল ও অঙ্গ সংগঠন থেকেই। পরে অভিযান পরিচালিত হবে অন্যান্য দলে এবং দেশের সর্বত্র। এটাও সত্য যে, কালো টাকা ও অসৎ পথের বাণিজ্যের জন্য বর্তমানে সৎ আদর্শবান ও ত্যাগী নেতৃত্ব প্রায় দুর্লভ হয়ে উঠেছে। আর সে কারণেই প্রধানমন্ত্রী সবিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুর ত্যাগী মনোভাব ও আদর্শ অনুসরণের জন্য, যারা হবেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সৈনিক। বিএনপি-জামায়াত শাসনামলের উদাহরণ টেনে তিনি বলেছেন, তখন বাংলাদেশের বিশ্বে পরিচিতি ছিল সন্ত্রাসী-জঙ্গীবাদের দেশ, দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের দেশ হিসেবে। এরই অংশ হিসেবে ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় তারেক জিয়া দন্ডিত ও সাজাপ্রাপ্ত এবং এতিমের টাকা আত্মসাতের মামলায় খালেদা জিয়া সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে কারাগারে। অতীতের এই জগদ্দল বৃত্ত থেকে দেশ ও জাতিকে বেরিয়ে আসতে হবে যে কোন মূল্যে। আর এর জন্যই রজানীতিতে বর্তমানে সৎ যোগ্য, নিবেদিত প্রাণ ও আদর্শের প্রতি অবিচল নতুন নেতৃত্ব অন্বেষণ এবং কমিটি গঠন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। অস্বীকার করার উপায় নেই যে, বর্তমান সরকার সব রকম দুর্নীতি, মাদক ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে। সেটা যে কোন মূল্যে বাস্তবায়িত করতে সরকার বদ্ধপরিকর এবং দেশ ও জাতির প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ। জাতির পিতা বাংলাদেশের মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘুষ-দুর্নীতিকে কখনই প্রশ্রয় দেননি। তাঁর সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ বিষয়ে অনড় ও অনমনীয়। কথা নয়, কাজেও এর একাধিক প্রমাণ মিলেছে ইতোমধ্যে। যে কোন মূল্যে দেশকে দুর্নীতি, মাদক ও জঙ্গীমুক্ত করতে হবে। ত্রিশ লাখ শহীদ ও লাখ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে রাখতে হবে অমলিন ও কলুষমুক্ত। মুষ্টিমেয় কিছুসংখ্যক দুর্নীতিবাজের জন্য দেশের অর্জন তথা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিকে ভূলুণ্ঠিতে হতে দেয়া যাবে না কোন অবস্থাতেই। বাংলাদেশের স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখার স্বার্থে সেটাই প্রত্যাশিত।
×