ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দক্ষিণ এশিয়ার অলিম্পিকের বর্ণাঢ্য উদ্বোধন

প্রকাশিত: ১১:৩৯, ২ ডিসেম্বর ২০১৯

 দক্ষিণ এশিয়ার অলিম্পিকের বর্ণাঢ্য উদ্বোধন

স্পোর্টস রিপোর্টার, কাঠমান্ডু, নেপাল থেকে ॥ সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার অঙ্গীকার, গ্যালারি উপচেপড়া দর্শকদের উচ্ছ্বাস, সাত দেশের আড়াই হাজারেরও বেশি এ্যাথলেট-কর্মকর্তার দীপ্ত মার্চপাস্ট, মোহনীয় লেজার শো, শ্রুতিমধুর সঙ্গীত, মনোমুগ্ধকর নৃত্য, দৃষ্টিনন্দন আতশবাজি ... অপূর্ব-বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে রবিবার পর্দা উঠল সাউথ এশিয়ান গেমস (এসএ গেমস)-এর। নেপালে অনুষ্ঠেয় এই ক্রীড়া আসর হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসর যা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ত্রয়োদশতমবারের মতো। কাঠমান্ডুর দশরথের রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের স্থায়িত্ব ছিল তিন ঘণ্টারও বেশি। স্টেডিয়ামের সুউচ্চ বেদিতে গিয়ে গেমসের মশাল প্রজ্বালন করেন এসএ গেমসে চারবারের সোনাজয়ী এবং ২০০৮ বেজিং অলিম্পিকে সাবেক তায়কোয়ান্দোকা দীপক বিষ্ঠা। ‘১৩তম এসএ গেমসের উদ্বোধন ঘোষণা করলাম’Ñ নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী বান্দারি এ কথা বলার পরই নিভিয়ে দেয়া হয় স্টেডিয়ামের সব আলো। আতশবাজির ঝলকে আলোকিত হয় স্টেডিয়াম। গ্যালারিতে আসা দর্শকদের মোবাইলের জ¦লে ওঠা আলো মায়াবী এক মুহূর্তের জন্ম দেয়। ফুটবল মাঠের মাঝে তখন মার্চপাস্ট শেষে দাঁড়িয়ে সাত দেশের ক্রীড়াবিদ ও ডেলিগেটরা। সবার আগে মার্চপাস্টে দেখা যায় বাংলাদেশ দলকে। লাল-সবুজবাহিনীকে নেতৃত্ব দেন ২০১৬ এসএ গেমসে জোড়া স্বর্ণজয়ী সাঁতারু মাহফুজা খাতুন শিলা। তার পেছনে এসএ গেমসে বাংলাদেশের শেফ দ্য মিশন আসাদুজ্জামান কোহিনুর ও বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা। মার্চপাস্টে শূটিং, ক্রিকেট, ফুটবল, সাঁতারসহ কাঠমান্ডুতে যেসব ইভেন্ট আছে, সেসব ডিসিপ্লিনের কয়েকজন খেলোয়াড় ছিলেন। বিকেল ৫টা ৫ মিনিট নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী বান্দারি স্টেডিয়ামে প্রবেশ করলে পঞ্চাবদক বাঁশি বাজিয়ে তাকে অভ্যর্থনা জানান। এরপর অর্কেস্ট্রা দল নেপালের জাতীয় সঙ্গীত বাজায়। শুরু হয় মার্চপাস্ট। সবার সামনে ভয়ঙ্কর মুখোশ পওা ভূতের চেহারার এক নৃত্যশিল্পী। তারপর মাসকট ও লোগো হাতে স্থানীয় একদল সুন্দরী রমণী। তাদের পেছনে সাত দেশের পতাকা ও নেপাল অলিম্পিক কমিটির লোগো হাতে পতাকাবাহী এক দল। এরপরই ছিল সাত দেশের ক্রীড়াবিদ ও কর্মকর্তারা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পুরো স্টেডিয়ামের এ্যাথলেটিক ট্র্যাকে সারিবদ্ধ দাঁড়িয়ে ছিলেন নেপালের তিন বাহিনীর চৌকস সদস্যরা। দুই হাতের ব্রেসলেট থেকে আলো বিচ্ছুরণ করছিল। মার্চপাস্ট শুরুর পর শেষ পর্যন্ত সারাক্ষণই বাজনার তালে তালে ছন্দে ছন্দে হাততালি বাজিয়েছেন। এছাড়াও স্কুল ও কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা ছিলেন নৃত্য অনুষ্ঠানে। এর আগে নেপাল ১৯৮৪ ও ১৯৯৯ সালে এসএ গেমসের আয়োজক ছিল। নেপাল অলিম্পিক কমিটির সভাপতি জীবন রাম শ্রেষ্ঠা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরুর ঘোষণা দেন। উদ্বোধনী ভাষণ দেন ন্যাশনাল স্পোর্টস কাউন্সিলের সদস্য সচিব রমেশ কুমার সিলওয়াল। আরও উপস্থিত ছিলেন নেপালের ক্রীড়ামন্ত্রী জগৎ বাহাদুর বিশ্বকর্তা সুনার। নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী বান্দাডরর উদ্বোধনী ভাষণের পরেই সাবেক নেপালী চার তারকা এ্যাথলেট (তারা প্রত্যেকেই ১৯৮০, ৮৪ ও ৮৮ অলিম্পিকে অংশ নিয়েছিলেন) মশাল ব্যাটন নিয়ে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেন। ক্রীড়াবিদদের পক্ষ থেকে শপথবাক্য পাঠ করেন তারকা ক্রিকেটার পরেশ খড়কা এবং কোচদের পক্ষ থেকে রেফারি দীপক থাপা।
×