ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

জার্মান ব্যান্ডের জ্যাজের সুরে মুগ্ধ ঢাকার শ্রোতা

প্রকাশিত: ১০:৫০, ২ ডিসেম্বর ২০১৯

 জার্মান ব্যান্ডের জ্যাজের সুরে মুগ্ধ ঢাকার  শ্রোতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সুর রসিকদের জন্য হৃদয় রাঙানো এক আয়োজন। ছিল সীমানা পেরোনো সঙ্গীতের আবাহন। ভিন্ন ধারার মেলোডি ছড়িয়েছে ভাল লাগার অনুভব। শোনা হয়েছে পিয়ানোর স্নিগ্ধ বাজনার সঙ্গে বেস গিটার আর ড্রামের সমন্বিত সুরেলা শব্দ ধ্বনি। এমন করেই পশ্চিমা জ্যাজ মিউজিকে মুগ্ধ হলো ঢাকার শ্রোতার। আফ্রো-আমেরিকান সঙ্গীত ধারার জ্যাজ কনসার্টটি অনুষ্ঠিত হলো রবিবার। মূলত যন্ত্রসঙ্গীতে সাজানো ছিল সঙ্গীতাসরটি। হেমন্তে রাতে শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে পরিবেশনাটি উপস্থাপন করে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক এবং জার্মানির বালিনভিত্তিক জনপ্রিয় ব্যান্ডদল লিসবেথ। চার সদস্যের লিসবেথ কোয়ার্টেট এদিন পরিণত হয়েছিল তিন সদস্যের লিসবেথ ট্র্যায়োতে। অসুস্থতার কারণে মঞ্চে ছিলেন না স্যাক্সোফোন বাজানো দলটির সদস্য শার্লোটি গ্রেভ। কনসার্টটির আয়োজন করে ঢাকার জার্মান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গ্যোয়টে ইনস্টিটিউট। পরিবেশনা পর্ব শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত কথনের মাধ্যমে কনসার্টটির উদ্বোধন ঘোষণা করেন গ্যোয়েটে ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের পরিচালক ডক্টর কিরস্টেন হাকেনব্রোক। এরপর সৌভাগ্যবান তিন শ’ শ্রোতা পরিভ্রমণ করেছে ৭০ মিনিটের সুর দরিয়ায়। এই গানপ্রেমীদের কাছে পিয়ানো, গিটার ও ড্রামের সমন্বিত কম্পোজিশনটি যেন হয়ে ওঠে কোন শিল্পীর সুনিপুণ ক্যানভাস। মেলোডিক লাইনের সঙ্গে ক্লিয়ার ফর্ম উচাটন করে তোলে শ্রোতার মনন। মার্ক মুয়েলবাউরের দুর্দান্ত বেসের সঙ্গে ম্যানুয়েল স্মিডেলের ভারময় পিয়ানোর বাজনা আর মরিৎজ বাউমগার্টনারের দ্রুতগতির ড্রামিং সৃষ্টি করেছে ছন্দোময় আবহ। নিউইয়র্ক ও বার্লিনভিত্তিক দল লিসবেথ ইতোমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জ্যাজ সঙ্গীত পরিবেশন করেছে। স্যাক্সোফোন বাদক শার্লোটি গ্রেভের নেতৃত্বাধীন লিসবেথ কোয়ার্টেট বৈচিত্র্যপূর্ণ জ্যাজ সঙ্গীতের সুবাদে ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশে দারুণ সমাদৃত। গ্যোয়টে ইনস্টিটিউটের আমন্ত্রণে ভারতের সাতটি শহর এবং শ্রীলঙ্কার কলম্বো শহরে জ্যাজ সঙ্গীত পরিবেশন শেষে ঢাকায় আসছে দলটি। তাদের পরবর্তী কনসার্টের গন্তব্য পাকিস্তানের করাচি শহর। স্যাক্সোফোন বাদক শার্লোটি গ্রেভের নেতৃত্বে ২০০৯ সালে যাত্রা শুরু করে বার্লিনভিত্তিক লিসবেথ কোয়ার্টেট। মূলত সমসাময়িক জ্যাজ সঙ্গীত পরিবেশন করে থাকে দলটি। লিসবেথের দ্বিতীয় সিডি ‘কনস্ট্যান্ট ট্র্যাভেলার্সের’ জন্য ২০১২ সালে নবাগত সঙ্গীত দল হিসেবে জার্মানির সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার ‘জ্যাজ-ইকো’ সম্মাননায় ভূষিত হয়। এছাড়া শারলোটি গ্রেভ ২০১০ সালে ‘জ্যাজ বাল্টিকা’ প্রতিভা পুরস্কার অর্জন করেন। আালোকচিত্রী আনোয়ার হোসেন স্মরণ দেশের আধুনিক আলোকচিত্র শিল্পের জনক, কিংবদন্তি সিনেমাটোগ্রাফার, চলচ্চিত্র শিক্ষক ও মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেনের প্রথম প্রয়াণবার্ষিকী ছিল রবিবার। এ উপলক্ষে সন্ধ্যায় বা শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে আনোয়ার হোসেন স্মরণ ও স্মৃতিতর্পণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি। পাশাপাশি আনোয়ার হোসেনকে নিয়ে প্রকাশ করা হয় একটি বিশেষ স্মারক পোস্টার। পোস্টারটি অঙ্কন করেছেন শিল্পী সব্যসাচী হাজরা এবং পোস্টারটির প্রকাশনার উদ্বোধন করেন বরেণ্য চলচ্চিত্রকার সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী। স্মরণানুষ্ঠানে আনোয়ার হোসেনের জীবন ও সৃষ্টিকর্ম নিয়ে আলোচনা করে বরেণ্য চলচ্চিত্রকার মসিহউদ্দিন শাকের, চলচ্চিত্র গবেষক অনুপম হায়াৎ, আলোকচিত্র শিল্পী নাসির আলী মামুন, আনোয়ার হোসেনের অনুজ আলি হোসেন বাবু এবং ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি চলচ্চিত্র নির্মাতা ও লেখক বেলায়াত হোসেন মামুন। আলোচনায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের আলোকচিত্র শিল্পকে আন্তর্জাতিক পরিসরে শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠায় পুরোধা ব্যক্তিত্ব আনোয়ার হোসেন। দেশের চলচ্চিত্র আনোয়ার হোসেনের শিল্পসৃষ্টির মাধুর্যের কাছে ঋণী হয়ে আছে। তার হাত ধরেই বাংলাদেশের চলচ্চিত্র আন্তর্জাতিক পরিসরে নিজস্বতায় জানান দিতে শুরু করে। এই শিল্পীর সিনেমাটোগ্রাফিতে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’, ‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী,’ ‘পুরস্কার’, ‘হুলিয়া’, ‘দহন’, চিত্রা নদীর পারে’, ‘চাকা’, ‘অন্য জীবন’, ‘লালসালু’ ‘লালন’ ‘শ্যামল ছায়া’ শিল্পধর্মী চলচ্চিত্রের উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে ইতিহাস হয়ে আছে। অন্যদিকে দেশের আলোকচিত্র শিল্পে আনোয়ার হোসেনের অবদান অশেষ। তা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি হোক আর আধুনিক চিন্তা ও সৃষ্টিনৈপুণ্যের সক্ষমতায় হোক।
×