ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ফুটবলে আজ বাংলাদেশ- ভুটান লড়াই

এসএ গেমসের বর্ণিল উদ্বোধন

প্রকাশিত: ১০:২২, ২ ডিসেম্বর ২০১৯

এসএ গেমসের বর্ণিল  উদ্বোধন

রুমেল খান কাঠমান্ডু নেপাল থেকে ॥ ভেন্যু প্রস্তুতিতে যতই অদক্ষতা-দীর্ঘসূত্রিতা থাকুক না কেন, একটি জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে নেপাল। ১৩তম সাউথ এশিয়ান গেমসের পর্দা উঠল রবিবার, কাঠমান্ডুর দশরথের রঙ্গশালায়। মজার ব্যাপার- ১৯৮৪ সালে এখানেই আয়োজিত হয়েছিল এসএ গেমসের প্রথম আসরটি। সেই অর্থে বলা যায় জন্মভূমিতেই আবারও ফিরে এল এসএ গেমস। নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারি গেমসের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। আর নেপালের অলিম্পিয়ান ও তায়কোয়ানদোতে চারবারের এসএ গেমস স্বর্ণজয়ী দীপক বিস্টা মশাল প্রজ্জ্বলন করেন। এর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো এসএ গেমসের এবারের আসর। এই মশাল জ¦লবে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার ৭ দেশের আড়াই হাজারেরও বেশি এ্যাথলেট ২৭ ডিসিপ্লিনে ১১১৩ পদকের জন্য লড়বেন। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় শুরু হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। প্রথমে সাউথ এশিয়ান গেমসের ইতিহাস ও প্রতিটি আসরের খুঁটিনাটি বিষয় তুলে ধরা হয়। এরপর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারি স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেন। পঞ্চবাদকের পারফরম্যান্সের মধ্য দিয়ে তাকে স্বাগত জানানো হয়। এরপর নেপালের সেনাবাহিনীর অর্কেস্ট্রা দল বাদ্যযন্ত্রে নেপালের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন। তাদের সঙ্গে গোটা স্টেডিয়াম গলা মিলিয়ে গায়। নেপালের সুরেলা জাতীয় সঙ্গীত ২৫ হাজার স্থানীয় দর্শকের মুখে প্রতিধ্বনিত হয়ে অন্যরকম এক পরিবেশ তৈরি করে। জাতীয় সঙ্গীত শেষ হওয়ার পর শুরু হয় মার্চপাস্ট। এ্যালফাবেটিক অর্ডার অনুযায়ী সর্বপ্রথম মাঠে প্রবেশ করে বাংলাদেশ দল। তাদের সামনে ছিল এসএ গেমসের এবারের আসরের মাসকট ব্ল্যাকবাক। দুটি মাসকট নেচে নেচে সামনে এগুচ্ছিল। তাদের পেছনেই এসএ গেমসের আকর্ষণীয় একটি লোগো নিয়ে ছিলেন স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিহিত কয়েকজন রমণী। তাদের পেছনে নেপালের উপজাতীয় ঐতিহ্য তুলে ধরতে ভিন্নরকম সাজে একজন নেচে নেচে আসছিলেন। পুরোটা সময় জুড়েই বাদ্যের তালে তালে নাচছিলেন তারা। এরপর ছিলেন অলিম্পিক, এসএ গেমস ও দক্ষিণ এশিয়ান অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনের পতাকা বহনকারীরা। তাদের পেছনে এবারের এসএ গেমসে অংশ নেয়া দলগুলোর পতকা নিয়ে ছিলেন একটি দল। তাদের পেছনে ছিল বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেন গত এসএ গেমসে সাঁতারে স্বর্ণ পদক জেতা মাহফুজা খাতুন শিলা। তার পেছনে ছিলেন কাঠমান্ডুতে যে ১৯ ইভেন্ট হবে সেটাতে অংশ নিতে যাওয়া বাংলাদেশের এ্যাথলেটরা। বাংলাদেশের পেছনে ছিল ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, পাকিস্তান, নেপাল ও শরণার্থী দল। মার্চপাস্ট শেষ হতেই স্টেডিয়াম এলাকার আকাশ রাঙিয়ে তোলে আতশবাজির ঝলকানি। সেটা শেষ হওয়ার পর নেপালের অলিম্পিক কমিটি, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তা ও মন্ত্রী বক্তব্য দেন। এরপর রাষ্ট্রপতি তার স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এরপর এসএ গেমসের মশাল প্রজ্জ্বলন করা হয়। নেপালের হয়ে যেসব এ্যাথলেট গেল ২৫-৩০ বছরে অলিম্পিকে অংশ নিয়েছেন তাদের হাত ঘুরে সবশেষ দীপক বিস্টার হাতে যায় মশাল। তিনি স্টেডিয়ামের উত্তর-পশ্চিম কোণে উঁচুতে তৈরি করা বেদিতে মশাল প্রজ্জ্বলন করেন। এরপর শুরু হয় বিভিন্ন বাহিনীর মার্চপাস্ট। তারপর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে নেপালের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতির নানাদিক তুলে ধরে হয় নানান আয়োজনের মধ্য দিয়ে। মাঝে লেজার শো এর মাধ্যমে গেমসের বিভিন্ন ডিসিপ্লিন ও উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো প্রদর্শন করা হয়। এরপর গেমসে অংশ নেয়া সাতটি দেশের গানের সঙ্গে পারফরম্যান্স করা হয়। বাংলাদেশের সময় বাজানো হয় ‘মাগো, ভাবনা কেন, আমরা তোমার শান্তিপ্রিয় শান্ত ছেলে....গানটি।’ এরপর নেপালের জনপ্রিয় শিল্পী গান পরিবেশন করে দর্শকদের মাতান। সবশেষ নগর কাঁপানো আতশবাজির শব্দ ও ঝলকানির মধ্য দিয়ে শেষ হয় ৩ ঘণ্টা ১৪ মিনিটের জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। ফুটবলে ২০ বছর পর আবারও পয়মন্ত ভেন্যুতে সোনা জয়ের স্বপ্ন দেখছে জামাল ভুঁইয়ারা। সেই লক্ষ্যে আজ তাদের দিতে হবে প্রথম পরীক্ষা। পরীক্ষার নাম ভুটান। কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় দুপুর সোয়া ১টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
×