ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

খুলনা অঞ্চলের ৯ পাটকলে ২৭০ কোটি টাকার পাটপণ্য মজুদ

প্রকাশিত: ১১:৪১, ১ ডিসেম্বর ২০১৯

 খুলনা অঞ্চলের  ৯ পাটকলে ২৭০ কোটি টাকার পাটপণ্য মজুদ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ খুলনা-যশোরের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলে বর্তমানে ৩০ হাজার ৪৬২ টন পাটপণ্য মজুত রয়েছে। যার বাজার মূল্য ২৭০ কোটি টাকা। সুদানে রফতানি বন্ধ থাকার কারণে এ পরিমাণ পণ্য মজুদ রয়েছে। আর পাটকল শ্রমিকদের ১০-১১ সপ্তাহের মজুরি, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চার মাসের বেতন বাবদ ৫৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। মূলধন না থাকায় পাটকলগুলোয় কাঁচা পাটের মজুদ নেই। ফলে উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে উৎপাদন ক্ষমতার ২০ ভাগ উৎপাদন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশনের (বিজেএমসি) অদক্ষতায় মিলগুলোতে মূলধনের অভাব সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। বিজেএমসি খুলনা অঞ্চলের লিয়াজো কর্মকর্তা বনিজ উদ্দিন মিয়া বলেন, খালিশপুরের ক্রিসেন্ট জুট মিলে ৮ হাজার ১৩০ টন, প্ল্যাটিনাম জুট মিলে ৬ হাজার ১১৭ টন, খালিশপুর জুট মিলে ৬ হাজার ৫৯৪ টন ও দৌলতপুর জুট মিলে ৯৭৮ টন, স্টার জুট মিলে ১ হাজার ১১৬ টন, আলিম জুট মিলে ১ হাজার ৪৭৪ টন ও ইস্টার্ন জুট মিলে ২ হাজার ৫৭ টন, যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রিতে (জেজেআই) ৩ হাজার ৩৯৬ টন ও কার্পেটিং জুট মিলে ৬০০ টন পণ্য মজুত রয়েছে। খুলনার শ্রম অধিদফতরের পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, শ্রমিকদের বকেয়াসহ সার্বিক সঙ্কটাপন্ন অবস্থা সম্পর্কে অধিদফতরের মহাপরিচালক ও শ্রম সচিবকে অবহিত করা হয়েছে। বিজেএমসির কোনও তহবিল না থাকায় বকেয়া পরিশোধে উদ্বেগ রয়েছে। মজুত পাটপণ্য বিক্রি না হওয়ার ফলে এ সঙ্কট আরও বেড়েছে। প্ল্যাটিনাম জুট মিল সিবিএ সভাপতি শাহানা শারমিন বলেন, কাজ করেও শ্রমিকরা নিয়মিত মজুরি পাচ্ছেন না। এ কারণে শ্রমিক পরিবারে চরম আর্থিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তাছাড়া মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন নিয়েও টালবাহানা করছে কর্তৃপক্ষ। দাবি আদায়ে অসহায় শ্রমিকরা এখন মরিয়া হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ পাটকল সিবিএ-ননসিবিএ সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক সরদার হামিদ জানান, খুলনা অঞ্চলের ৯টি পাটকলের শ্রমিকরা ২৫ নবেম্বর ভুখা মিছিল করেছে। সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী এমনকি সুইপাররাও পে-কমিশনের আওতায় বেতন পাচ্ছেন। অথচ শ্রমিকদের মজুরি কমিশন বাস্তবায়নে টালবাহানা চলছে। ক্রিসেন্ট জুট মিল সিবিএর সাবেক সভাপতি মুরাদ হোসেন বলেন, বকেয়াসহ ১১ দফা দাবিতে আন্দোলনে রয়েছে শ্রমিকরা। ২৭ নবেম্বর সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শ্রতিটি মিল গেটে প্রতীকী অনশন পালিত হবে। ৩ ডিসেম্বরের ধর্মঘটের সমর্থনে ২ ডিসেম্বর বিক্ষোভ মিছিল, ৩ ডিসেম্বর সকাল ৬টা থেকে ২৪ ঘণ্টার ধর্মঘট শুরু হবে। ৪ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় নিজ নিজ মিল গেটে সভা, ১০ ডিসেম্বরের আমরণ অনশনের সমর্থনে ৮ ডিসেম্বর সব মিলে একযোগে গেট সভা এবং আমরণ অনশন সফলের শপথ গ্রহণ হবে। খালিশপুর জুট মিলের সভাপতি দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, পাটকল শ্রমিকরা নিয়মিত মজুরি না পেয়ে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়াসহ নিত্যদিনের ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে।
×