ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এম শহিদুল ইসলাম

উদ্যোক্তা যখন নিজ ব্যবসার প্রচারক

প্রকাশিত: ০৯:২১, ১ ডিসেম্বর ২০১৯

  উদ্যোক্তা যখন নিজ ব্যবসার প্রচারক

যারা নতুন উদ্যোক্তা, কিছু শুরু করবেন বলে ভাবছেন অথবা কোন ব্যবসা শুরু করেছেন, তাদের জন্য এই লেখা। প্রচারেই প্রসার এই প্রবাদ বাক্যটি নতুন উদ্যোক্তা এবং সব ব্যবসায়ীদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। একজন উদ্যোক্তা খুব ভাল করেই জানেন, তার ব্যবসার সফলতার জন্য ব্যবসায়িক প্রচার মাধ্যমগুলো বিশেষ করে বিজ্ঞাপন সংস্থা কতটা ভূমিকা পালন করে। একটা ভাল প্রচার ব্যবস্থা খুব দ্রুত শ্রোতাদের যেমন দৃষ্টি আকর্ষণ করে, তেমনি নতুন নতুন শ্রোতা তৈরিতেও সহায়তা করে। যার ফলে উদ্যোক্তারা তাদের ব্যবসার দ্রুত প্রচার-প্রসারের জন্য টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনী সংস্থার সাহায্য নিয়ে থাকে। কিন্তু কথা হলো, আপনার ব্যবসার দ্রুত প্রচার, প্রসার এবং সফলতার জন্য শুধু যে বিজ্ঞাপনী সংস্থাই ভূমিকা রাখবে, এমন কিছু ভাবা ঠিক নয়। মূলত, বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলো টাকার বিনিময়ে ব্যবসার মূল কিছু বিষয়গুলো শ্রোতাদের সামনে উপস্থিত করে। ফলে ব্যবসার অনেক ভাল বিষয়গুলো শ্রোতাদের কাছে অজানাই থেকে যায়। তাই নিজ ব্যবসার প্রচার, প্রসার ও সফলতার জন্য উদ্যোক্তাকেই কাজ করা উচিত। ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে থিওডোর রুজভেল্টের একটি বিখ্যাত উক্তি হলো ‘আপনি কতটা জানেন সে বিষয়ে কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত গুরুত্ব দেবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা না জানবে আপনি তাদের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে এই উক্তিটি সত্যিই প্রমাণিত। কারণ, একজন উদ্যোক্তা যখন নিজ ব্যবসা প্রচার-প্রসারে নিজেই ভূমিকা রাখে তখন উদ্যোক্তা ও শ্রোতাদের মাঝে একটি সংযোগ সেতু তৈরি হয়। এর ফলে ধীরে ধীরে শ্রোতারা উদ্যোক্তার ব্যবসার প্রতি আগ্রহী হয়। ফলে উদ্যোক্তা অর্থ খরচ ছাড়াই শ্রোতাদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করে ব্যবসার প্রচার ও প্রসারের মাধ্যমে সফলতার দিকে ধাপিত হতে থাকেন। এমন কিছু পন্থা আছে যে পন্থাগুলো অনুসরণ করে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে আপনি নিজেকেই নিজের ব্যবসার প্রচারক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন নিজেকে। ইলেক্ট্রনিক, প্রিন্ট মিডিয়ায় নিজের ব্যবসা প্রচারের জন্য কোন মডেলকে ব্যবহার না করে আপনি নিজে মডেল হয়ে নিজের ব্যবসা সম্পর্কে বর্ণনা দিয়ে একটি সাক্ষাতকার প্রচার করুন। আপনার ব্যবসার ভাল দিকগুলো আপনার মুখ থেকে শুনলে শ্রোতারা বেশি আশ্বস্ত হবে। তবে সাক্ষাতকারের আগে সেই সব বিষয় নিয়ে আগেই প্রস্তুতি নিন, যেসব বিষয়গুলো আপনি প্রচার করতে চান। আপনি উদ্যোক্তা হিসেবে সাম্প্রতিক আলোচ্য ঘটনাসমূহ, ব্যবসার উল্লেখযোগ্য ভাল দিকগুলো, কিভাবে ব্যবসা পরিচালনা করেন, শ্রোতাদের কতটা মূল্যায়ন করেন। ব্যবসা ছাড়াও কোন সাময়িক উল্লেখযোগ্য ঘটনা সমূহ তুলে ধরতে পারেন। উদ্যোক্তা হতে আপনাকে কি করতে হয়েছে, ব্যবসার আগে কি করতেন তা বর্ণনা করতে পারেন। কোথাও কোন কাজের পুরস্কার পেয়ে থাকলে তা জানিয়ে দিন শ্রোতাদের। এরপর উদ্যোক্তা হিসেবে আপনি আপনার পূর্বের কর্মক্ষেত্র এবং বর্তমান কর্মক্ষেত্রের ভাল মন্দের মিশ্রণ করে কিছু কথা জানিয়ে দিন শ্রোতাদের। আপনার পূর্বের কোন অভিজ্ঞতা বর্তমান ব্যবসায় কিভাবে কাজে লাগাতে পারছেন সেই বিষয়ও তুলে ধরা যায়। তবে, একজন উদ্যোক্তা শ্রোতাদের উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলতে পারে, নিজের জ্ঞান ও কাজের অভিজ্ঞতার উপর আলোচনা করে। যৌক্তিক ও তথ্য সংবলিত আলোচনা উদ্যোক্তা ও শ্রোতাদের মধ্য সরাসরি সংযোগ ঘটায়। উদ্যোক্তার যৌক্তিক কথায় শ্রোতারা ভরসা পায়, সাহস পায়। ফলে, উদ্যোক্তার প্রতি শ্রোতাদের গ্রহণ যোগ্যতা ও বিশ্বাস বাড়ে। আলোচনার একটা পর্যায়ে এসে উদ্যোক্তা তার মূল উদ্দেশ্য প্রচারের দিকে অগ্রসর হবেন। প্রচারের ক্ষেত্রে অন্য প্রতিষ্ঠান কোন পন্থা অনুসরণ করছে, তার গবেষণা করে আরও নতুন মাত্রা যোগ করে নিজের কাজে লাগাতে পারেন। অন্য প্রতিষ্ঠানের কোন প্রচারণাগুলো বেশি জনপ্রিয় তা উদ্যোক্তকে জানতে হবে। এভাবেই কিছু পন্থা অবলম্বন করে একজন উদ্যোক্তা নিজের অভিজ্ঞতা ও প্রচারের পন্থার মিশ্রণ ঘটিয়ে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেই নিজের ব্যবসার প্রচারক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন।
×