ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রেস্ট ক্যান্সার সম্মেলনে জাহিদ মালেক

আট বিভাগীয় শহরে ক্যান্সার সেন্টার স্থাপন করা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৯:৫৪, ৩০ নভেম্বর ২০১৯

 আট বিভাগীয় শহরে ক্যান্সার সেন্টার স্থাপন করা হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে আটটি ক্যান্সার সেন্টার স্থাপন করছে সরকার। দেশেই আন্তর্জাতিকমানের চিকিৎসা প্রদান করতে ও গ্রামের মানুষকে যেন চিকিৎসার জন্য শহরমুখী না হতে হয় সেজন্য এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে স্তন ক্যান্সার মোকাবেলায় বিভিন্ন সরকারী মেডিক্যাল কলেজে অত্যাধুনিক রেডিওথেরাপি যন্ত্র প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। শুক্রবার দেশে তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশ ব্রেস্ট ক্যান্সার সম্মেলন-২০১৯ উদ্বোধন উপলক্ষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ভিডিও ম্যাসেজের মাধ্যমে এসব কথা তুলে ধরেন ও সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। অধ্যাপক ডাঃ কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে দিনব্যাপী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন মোহাম্মদ এবাদুল করিম এমপি, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ। এছাড়া ৮ টি দেশের প্রায় ৪ শতাধিক ডাক্তার উপস্থিত ছিলেন। প্রতি ২ বছর পর পর বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন,দেশে প্রতিবছর নতুন করে প্রায় ১২ হাজার নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে যা প্রায় ১৫ হাজার। তবে এ থেকে নারীদের বাঁচতে হলে সারাবছর নিয়মিত স্কিনিং করতে হবে। এছাড়া যে কোন নারী আক্রান্ত হওয়ার পর প্রাথমিক স্তরে তা ধরা পড়লে চিকিৎসা গ্রহণ সম্ভব হয়। একই সঙ্গে ক্যান্সারের চিকিৎসা প্রদান করেই সুস্থ হওয়া সম্ভব হয়। মন্ত্রী বলেন, দেশেই আন্তর্জাতিকমানের চিকিৎসা প্রদানের জন্যই সরকার শুধু শহরে নয় গ্রামে গিয়েও সরকারী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলোতে ব্রেস্ট ক্যান্সারের অত্যাধুনিক রেডিওথেরাপি যন্ত্র প্রতিস্থাপন করেছে, যাতে রোগীদের শহরগামী না হতে হয়। এছাড়া বিভাগীয় শহরে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট ক্যান্সার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ইতোমধ্যেই সরকার গ্রহণ করেছে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশ স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে একটি শক্ত ভিত গড়ে তুলতে পারে। সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ডাঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, দেশের উন্নতির কারণে মানুষ নানান রোগেও আক্রান্ত হচ্ছেন। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বর্তমান সরকার স্বাস্থ্য খাতেরও বিশাল উন্নয়ন সাধন করেছে। এক সময় ব্রেস্ট ক্যান্সারের কোন চিকিৎসা না থাকলেও এখন বিভাগীয় শহরের পাশাপাশি সকল সরকারী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ব্রেস্ট ক্যান্সার চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। চিকিৎসায় উন্নতির অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি জাতিসংঘ কর্তৃক ভ্যাকসিন হিরো খেতাবে ভূষিত হয়েছে। ব্রেস্ট ক্যান্সার সম্পর্কে মহাপরিচালক বলেন, দেশে ৩০ বছরের বেশি নারী ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। প্রতিবছরের সরকারী হিসাবে সম্পূর্ণ নতুন করে ১২ হাজারের বেশি নারী এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। যা রোধের প্রধান অস্ত্র হচ্ছে অধিক পরিমাণন সচেতনতা তৈরি করা। নারীদের মাঝে ব্রেস্ট ক্যান্সার রোধে করণীয় ঠিক করে তা স্কুল-কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। শুধু অধিক সচেতনতা ও সঠিক সময়ে চিকিৎসায়ই ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে। তিনি বলেন, সরকার ২০০৭ সালে এ নিয়ে প্রথম কাজ শুরু করে। এছাড়া দেশে বিভিন্ন রোগের পাশাপাশি শুধু ক্যান্সার রোগে মৃত্যুর হার শতকরা ২০ ভাগ, যা ভয়ানক। তবে বিভিন্ন প্রকার অস্বাস্থ্যকর খাবার এমনকি শাক-সবজিতেও রাসয়ানিকের মাত্রা বেশি থাকায় ক্যান্সারের সৃষ্টি হতে পারে। সম্মেলনে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ সানোয়ার হোসেন বলেন, প্রথমদিকে ব্রেস্ট ক্যান্সার ধরা পড়লে এ রোগ ভাল হয়। তবে বেশিরভাগ নারী সচেতন না থাকায় ও নিয়মিত স্কিনিং না করায় এ রোগ শেষ পর্যায়ে গিয়ে ধরা পড়ে। ফলে অনেক রোগীর মৃত্যু হয়। তবে এ রোগ প্রতিরোধে সহপাঠী, সহকর্মী, শিক্ষক ও পিতামাতাকেও তা রোধে কাজ করতে হবে। সম্মেলনে বিশেষজ্ঞগণ স্তন ক্যান্সারের ওপর বহির্বিশ্বে চলমান মেডিক্যাল অনকোলজি, রেডিওথেরাপি ও সার্জিক্যাল অনকোলজিসহ নানা ধরনের আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি তুলে ধরেন।
×