ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিভিন্ন শিল্প গ্রুপের বিশেষ আমদানির পেঁয়াজ বাজারে ঢুকছে

প্রকাশিত: ১০:৩৫, ২৯ নভেম্বর ২০১৯

 বিভিন্ন শিল্প গ্রুপের  বিশেষ আমদানির  পেঁয়াজ বাজারে ঢুকছে

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ বিভিন্ন শিল্প গ্রুপের বিশেষ আমদানির পেঁয়াজের চালান বৃহস্পতিবার থেকে বাজারে আসা শুরু হয়েছে। প্রথমে চট্টগ্রাম এবং এরপর দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রাকে ট্রাকে পেঁয়াজের চালান চলে যাচ্ছে। এ জাতীয় পেঁয়াজ পাইকারদের কাছে কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের আড়তদারদের কাছে বিক্রি হয়েছে। তবে খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজের মূল্য এখনও সহনীয় পর্যায়ে আসেনি। সমুদ্র পথে চট্টগ্রামের বিএসএম গ্রুপ, ঢাকার মেঘনা গ্রুপ, আকাশ পথে চট্টগ্রামের এস আলম গ্রুপের পেঁয়াজ বাজারে আসা শুরু হওয়ায় পেঁয়াজের দাম যে আকাশচুম্বী হয়েছিল তা এখন দ্রুত কমতে শুরু করেছে। এছাড়া মিয়ানমার থেকে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে টনে টনে পেঁয়াজের চালান প্রতিদিন দেশে এসে পৌঁছাচ্ছে। বর্তমানে দেড়লাখ টন পেঁয়াজের চালান আমদানির পাইপ লাইনে রয়েছে বলে বাজার সূত্রে জানানো হয়েছে। এসব পেঁয়াজ আসছে মিয়ানমার, চীন, মিসর ও তুরস্ক থেকে। আকাশ পথে আমদানির প্রথম চালানটি এসেছে পাকিস্তান থেকে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ ঘোষণার পর বাংলাদেশে পেঁয়াজের বাজার মূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে এ দাম থমকে গিয়ে কিছুটা হ্রাস পায়। কিন্তু পরবর্তীতে আবারও বাজারমূল্যে তেজিভাব সৃষ্টি হয়। দেশের ইতিহাসে প্রতিকেজি পেঁয়াজের মূল্য আড়াই শ’ টাকার ওপরে চলে যাওয়ার ঘটনা একটি রেকর্ড হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে গত দু’দিন ধরে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে মিয়ানমারের পেঁয়াজের পাইকারি মূল্য কেজিপ্রতি ১৪৫ থেকে ১৫০, চীনা পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকা এবং তুরস্ক ও মিসরের পেঁয়াজ ১শ’ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাজার সূত্র জানিয়েছে, চাহিদার সমপরিমাণ পেঁয়াজ না আসা পর্যন্ত বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না। এ অবস্থায় বিভিন্ন শিল্প গ্রুপের আমদানির বিশেষ পেঁয়াজ বাজারে আসা শুরু হওয়ায় পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে। বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, তাদের আমদানির পেঁয়াজ এসেছে চীন থেকে। বৃহস্পতিবার থেকে পাইকারি পর্যায়ে বিক্রিও শুরু হয়েছে। শুধু চট্টগ্রাম নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকারদের কাছে তারা চালান সরবরাহ করছে, যাতে করে দেশের আনাচে-কানাচে পেঁয়াজ পৌঁছে যায়। বাজার সূত্র জানিয়েছে, এস আলম শিল্প গ্রুপের পেঁয়াজ এককভাবে সরকারী উদ্যোগে টিসিবির মাধ্যমে বিক্রি অব্যাহত রাখা হয়েছে। অপর শিল্প গ্রুপের আমদানির বিশেষ পেঁয়াজ তাদের নিজেদের উদ্যোগে বিক্রি কার্যক্রম চলবে। এদিকে, মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ ইতোপূর্বেকার তুলনায় আরও বেড়েছে। টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন টনে টনে পেঁয়াজ খালাস হচ্ছে। টেকনাফ থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকাররা পেঁয়াজ কিনে নিজেদের আড়তে নিয়ে যাচ্ছে। মিয়ানমারের পেয়াজ আমদানিতে নষ্টের পরিমাণ সাধারণত কম থাকে। কিন্তু চীন, মিসর, তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ দেশে পৌঁছাতে সময় নেয় বিধায় কিছু অংশ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে আমদানির পেঁয়াজ বন্দরে খালাস হয়ে যতদ্রুত বাজারে পৌঁছান যায় ততই আমদানিকারকদের জন্য মঙ্গল। এ প্রক্রিয়ায় বিএসএম গ্রুপ মেঘনা গ্রুপ সমদ্র পথে তাদের আমদানির পেঁয়াজ বাজারে সরবরাহ করছে। জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ অনুরোধে এসব গ্রুপ পেঁয়াজ নিয়ে আসছে। মূলত এসব গ্রুপ পেঁয়াজ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয়। কিন্তু পেঁয়াজের বাজারমূল্য উর্ধগতি ঠেকাতে মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে যারা পেঁয়াজ আমদানি করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, দিন দিন পেঁয়াজের মূল্য কমতে থাকবে। যদিও বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষদিনে পেঁয়াজের বাজার বুধবারের তুলনায় তেমন একটা কমেনি। তবে আগামী কয়েকদিনে আরও কমে যেতে পারে বলে বাজার সূত্রে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে।
×