নাচ এমন এক শিল্প যেখানে মুখের ভাষা ছাড়াও সম্পূর্ণভাবে অভিব্যক্তি প্রকাশ পায়। যে কারণে সারা বিশ্বে নাচ যেন সংস্কৃতি ও ভাব আদান প্রদানের অন্যতম মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার ফলে সারা বিশ্বেই নাচ নিয়ে বড় বড় ফেস্টিভ্যাল হয়ে থাকে। তবে সমুদ্রের খোলা হাওয়ায় নাচ দেখতে কেমন লাগবে? ধারণা করা মাত্রই এক ধরনের ভাললাগা কাজ করে। মন জুড়ানো হাওয়া আর চমৎকার নাচ সবমিলিয়ে যেন এক নৈসর্গিক পরিবেশ।
পর্যটননগরী কক্সবাজার প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক নৃত্য উৎসব ‘ওশান ড্যান্স ফেস্টিভ্যাল অফ বাংলাদেশ’। উৎসবে অংশ নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, তাইওয়ান, কোরিয়া ও চীনসহ বিশ্বের ১৫টি দেশের অন্তত দুই শ’ নৃত্যশিল্পী। বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতসহ পর্যটন শিল্পের সঙ্গে পর্যটন সংস্কৃতির মেলবন্ধন রচনা করতে আন্তর্জাতিক নৃত্যশিল্পীদের সংগঠন দ্য ওয়ার্ল্ড ডান্স এ্যালায়েন্স-এশিয়া প্যাসিফিকের (ডব্লিউডিএ-এপি) বাংলাদেশ শাখার ‘নৃত্যযোগ’ প্রথমবারের মতো এ আয়োজন করেছে।
আয়োজকেরা জানান, চার দিনের উৎসবজুড়ে থাকবে বিভিন্ন অয়োজন। প্রতিদিন ভোর থেকে কক্সবাজারের প্যাঁচারদ্বীপ এলাকার মারমেইড বিচ রিসোর্ট সংলগ্ন সৈকতে চলবে বিষয়ভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন, কর্মশালা, সেমিনার। বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে শহরের মোটেল রোডের কক্স-কার্নিভ্যাল মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নৃত্যশিল্পীদের পরিবেশনায় থাকবে নৃত্যানুষ্ঠান। এছাড়াও একই স্থানে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে চলবে দেশের খ্যাতনামা নৃত্যশিল্পীদের পরিবেশনায় লোক নৃত্য, সমসাময়িক নৃত্য, শাস্ত্রীয় নৃত্য ও নৃত্যনাট্য। ফেস্টিভ্যাল অংশ নেয়া নৃত্যশিল্পী এ্যানি আসকার বলেন, এটা আমার জন্য এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা। বাংলাদেশে এই প্রথমবারের আয়োজনে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পেরে খুবই আনন্দিত। সেই সঙ্গে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি এদেশের প্রতিথযশা নৃত্যশিল্পী লায়লা হাসানের প্রতি যিনি আমাকে এই ফেস্টিভ্যালে আসার সুযোগ করে দিয়েছেন। এমন সুন্দর সুন্দর আয়োজন আরও অনেক হওয়া দরকার।
শুক্রবার সকালে কক্সবাজারের অবকাশযাপন কেন্দ্র মারমেইড ইকো রিসোর্টে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দিয়ে শুরু হয় চার দিনের আন্তর্জাতিক দ্বিবার্ষিক-বার্ষিক নৃত্য উৎসব ‘ওশান ড্যান্স ফেস্টিভ্যাল ২০১৯’। ওয়ার্ল্ড ড্যান্স এ্যালায়েন্স, এশিয়া প্যাসিফিকের (ডব্লিউডিএ, এপি) বাংলাদেশ শাখা নৃত্যযোগ প্রথমবারের মতো দেশে আয়োজন করেছে আন্তর্জাতিক এই নৃত্য উৎসব।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডব্লিউডিএ, এপির সভাপতি ঊর্মিমালা সরকার বলেন, আমাদের অনেক দিনের শ্রম ও সাধনার ফসল এই উৎসব। বাংলাদেশে বার্ষিক সভা করার পাশাপাশি এ উৎসবের আয়োজন করতে পারাটা আমাদের জন্য একাধারে আনন্দের এবং গর্বের। দূর-দূরান্ত থেকে এসে আমাদের এই উৎসবে যোগ দেয়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।