ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঠিকানা গড়মিলে ভাতাবঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধার পরিবার ॥ তদন্ত দাবি

প্রকাশিত: ১১:৪৪, ২৮ নভেম্বর ২০১৯

  ঠিকানা গড়মিলে ভাতাবঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধার পরিবার ॥  তদন্ত দাবি

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর, ২৭ নবেম্বর ॥ দীর্ঘদিন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ভোগ করার পরও গেজেটভুক্ত হতে পারেননি মুক্তিযোদ্ধা মহসীন আলী সরকার। মুক্তিযোদ্ধা মহসীনের স্ত্রী মঞ্জুয়ারা অভিযোগ করেন, মহসীনের নাম সেনাবাহিনীর গেজেটে অন্তর্ভুক্ত থাকলেও পিতার নাম ও স্থায়ী ঠিকানার মিল নেই। ওই গেজেটে নাম এর মিল থাকলেও ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার জোড়াগাছার সোনা উল্লা আকন্দের ছেলে মহসীন আলী আকন্দ। তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়েও সেনাগেজেটে মুক্তিযোদ্ধার সব সুবিধা ভোগ করছেন। তদন্ত সাপেক্ষে তার স্বামীর নাম গেজেটভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন তিনি। মঞ্জুয়ারা জানান, তার স্বামীর বাবার নাম আব্দুর রহিম সরকার। তার বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বিরাহীমপুর এলাকার জাহাঙ্গীরাবাদ এলাকায়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি ছিলেন ছাত্র। কিন্তু দেশমাতৃকার স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি আর বসে থাকতে পারেননি। তিনি ৩নং বেঙ্গল রেজিমেন্টে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। দেশ স্বাধীন হলে তিনি এসএসসি পাস করে ১৯৭৪ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। ২০০০ সালের ৯ অক্টোবর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বগুড়ার ৩নং বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক কর্তৃক তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রত্যয়নপত্র প্রদান করে। ওই প্রত্যয়নপত্রের গ্রাধিকার বলে তাকে প্রধানমন্ত্রী স্বাক্ষরিত মুক্তিযোদ্ধা সনদপত্র প্রদান করা হয়, যা ৪১০৬৮নং ক্রমিকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ২০০১ সালের ২২ এপ্রিল প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু ২০০৩ সালের ১৩ অক্টোবর তিনি মারা যান এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার দাফন সম্পন্ন হয়। তার মৃত্যুর পর ২০০৬ সাল থেকে মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা উত্তোলন করছেন স্ত্রী মঞ্জুয়ারা বেগম দুলি। তবে এত কিছুর পরও ওই মুক্তিযোদ্ধার নাম গেজেটভুক্ত হয়নি। ২০১৬ সালে তার স্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা গেজেটে স্বামীর নাম অন্তর্ভুক্ত করতে লিখিত আবেদন করে ব্যর্থ হন। এ কারণে তিনি ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টে লিখিত আবেদন করেন। কিন্তু মহসীন আলী সরকার স্বেচ্ছায় অবসর নেয়ার অজুহাত দেখিয়ে ওআইসি রেকর্ড সাফ জানিয়ে দেয় তাদের কাছে কোন তথ্য নেই। এরপর স্ত্রী মঞ্জুয়ারা নানা জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর জানতে পারেন মহসীনের নাম সেনাবাহিনীর গেজেটে অন্তর্ভুক্ত থাকলেও পিতার নাম ও স্থায়ী ঠিকানার মিল নেই। ওই গেজেটে নাম এর মিল থাকলেও ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার জোড়াগাছার সোনা উল্লা আকন্দের ছেলে মহসীন আলী আকন্দ। তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়েও সেনাগেজেটে মুক্তিযোদ্ধার সকল সুবিধা ভোগ করছেন বলে দাবি করেছেন ওই এলাকার মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ। মহসীন আলী সরকারের স্ত্রী মঞ্জুয়ারা বেগম দুলি জানান, বিষয়টি তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে। তাই তদন্ত সাপেক্ষে অমুক্তিযোদ্ধা মহসীন আলী আকন্দের নাম সেনাগেজেট থেকে বাদ দিয়ে মহসীন আলী সরকারের নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
×