ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাজশাহীতে ১০ মাসে ১৯৫ নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার

প্রকাশিত: ০৯:৩০, ২৭ নভেম্বর ২০১৯

রাজশাহীতে ১০ মাসে ১৯৫ নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ চলতি বছরের গেল ১০ মাসে রাজশাহীতে ১৯৫ নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত রাজশাহী জেলাজুড়ে এসব সহিংসতার ঘটনা ঘটে। ‘নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ, বর্তমান প্রেক্ষাপট ও মিডিয়ার ভূমিকা’ শীর্ষক এক মোবিলাইজেশন সভায় এ তথ্য উঠে এসেছে। বেসরকারী সংস্থা ব্র্যাকের সহযোগিতায় রাজশাহীর উন্নয়ন ও মানবাধিকার সংস্থা এ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট (এসিডি) এর আয়োজন করে। রবিবার সকালে এসিডির কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এই সভায় এক প্রেজেন্টেশনে রাজশাহী জেলাজুড়ে নারী ও শিশু নির্যাতনের এই চিত্র তুলে ধরা হয়। পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দেন এসিডির মনিটরিং এ্যান্ড ডকুমেন্টেশন অফিসার রুহুল আমিন। এতে দেখানো হয়, গত ১০ মাসে রাজশাহীতে সংগঠিত ১৯৫টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনার মধ্যে ১০৬টিই ঘটনা ঘটে নারীর ক্ষেত্রে। আর শিশুর ক্ষেত্রে ঘটে ৮৯টি। ১০৬টি নারী নির্যাতনের ঘটনার মধ্যে ১০টি হত্যা, হত্যার চেষ্টা ২১টি, রহস্যজনক মৃত্যু ৩টি, ৮টি ধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টা ৪টি, আত্মহত্যা ২৪টি, আত্মহত্যার চেষ্টা ১১টি, অপরহরণ ৫টি, যৌন হয়রানি ১৫টি, নিখোঁজ ১টি, ১টি এসিড নিক্ষেপ এবং অন্য ঘটনা ঘটে ৩টি। আর ৮৯টি শিশু নির্যাতনের ঘটনার মধ্যে হত্যা ৭টি, হত্যার চেষ্টা ৩টি, ধষর্ণ ১৭টি, ধর্ষণের চেষ্টা ১২টি, অপহরণ ১৭টি, আত্মহত্যা ৮টি, আত্মহত্যার চেষ্টা ৫টি, যৌন হয়রানি ১১টি, নিখোঁজ ৬টি এবং ৩টি অন ঘটনা ঘটে। এসিডির নিজস্ব তথ্য সংগ্রহ এবং পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসিডির নির্বাহী পরিচালক সালীমা সারোয়ার বলেন, বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু নারী ও শিশু নির্যাতনের পৈশাচিকতা কমছে না। পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজ ব্যবস্থায় নারী ও শিশুর প্রতি সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত প্রয়োজন। আর গণমাধ্যম কর্মীরাই তাদের লেখনীর মাধ্যমে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারেন। বর্তমানে নারী-শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে তাই গণমাধ্যমকর্মীদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন অত্যন্ত প্রয়োজন। সংস্থার মিডিয়ার ম্যানেজার আমজাদ হোসেন শিমুলের উপস্থাপনায় মোবিলাইজেশন সভায় ব্র্যাকের পক্ষ থেকে তথ্যচিত্র প্রদর্শন করেন ব্র্যাকের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক রায়হানুল ইসলাম। ব্র্যাকের পক্ষ থেকে দেশের নারী ও শিশু নির্যাতনের ভয়াবহতা এবং এই সহিংসতা প্রতিরোধে গণমাধ্যম কী ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে সেই বিষয়ে পাওয়ার পয়েন্টে বিস্তারিত তুলে ধরেন সংস্থাটির টেকনিক্যাল ম্যানেজার মেহেদী হাসান। এ সময় এসিডির প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর মেরাজ উদ্দিন তালুকদার, ব্র্যাকের সেক্টর স্পেশালিস্ট কৌশিক বিশ্বাস সাগর এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার ১৫ গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন। মুক্ত আলোচনায় তারা নারী ও শিশু নির্যাতন সম্পর্কিত বেশি বেশি ফলোআপ সংবাদ প্রকাশের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
×