ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বে ওভালে রেকর্ডময় একদিন

প্রকাশিত: ০৯:৫০, ২৫ নভেম্বর ২০১৯

 বে ওভালে রেকর্ডময় একদিন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিকেটে অবিশ্বাস্য বলে কোন শব্দ নেই, এ জন্যই এটি গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। ইংল্যান্ডের ৩৫৩ রানের জবাবে ১২৭ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসেছিল নিউজিল্যান্ড। সেই তারাই শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ৬১৫ রানের পাহাড় গড়ে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে। ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান বিজে ওয়াটলিং (২০৫)। আট নম্বরে নেমে প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছেন স্পিনিং অলরাউন্ডার মিচেল স্যান্টনার (১২৬)। সপ্তম উইকেটে গড়েছেন ২৬১ রানের জুটি। দু’জনে মিলে রেকর্ডবইয়ের অনেক পরিসংখ্যানই এলোমেলো করে দিয়েছেন। তিনদিন সমানে এগোনো বে ওভাল টেস্টের নিয়ন্ত্রণ এখন স্বাগতিক কিউইদের হাতে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ভীষণ বিপদে ইংল্যান্ড। ইনিংস হার এড়াতেই আরও ২০৭ রান চাই সফরকারীদের। ৭ রান নিয়ে ক্রিজে আছেন জো ডেনলি। শেষদিনে আজ তার সঙ্গী হবেন অধিনায়ক জো রুট। সবমিলিয়ে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে হার এড়াতে কঠিন পরীক্ষাই দিতে হবে ওয়ানডের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। ৬ উইকেটে ৩৯৪ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করে কিউইরা। ১১৯ রানে নেমেছিলেন ওয়াটলিং, স্যান্টনার ৩১। লাঞ্চ পর্যন্ত স্কোরবোর্ডে যোগ হয় মাত্র ৫৮ রান। বিরতির আগেই অবশ্য ফিফটিতে পৌঁছে যান স্যান্টনার। ১৭০ বলে ছোঁয়া ফিফটিতে চারটি চারের পাশাপাশি ছিল একটি ছক্কা। দ্বিতীয় সেশনে ইংল্যান্ড বোলারদের ওপর চড়াও হন দু’জনে। দ্রুত রান তোলার পথে গড়েন একের পর এক রেকর্ড। বেন স্টোকসের বলে পুল করে নেয়া দুটি রানে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিতে পৌঁছান স্যান্টনার। পরের বলেই মারেন চার। স্যাম কুরানের করা পরের ওভারে টানা দুই বলে চার ও ছক্কা। তবে বড় শট খেলতে গিয়েই শেষ পর্যন্ত আউট হয়েছেন। কুরানকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন লং-অনে। ১২৬ রানের ইনিংস ১১টি চার ও ৫ ছক্কায় সাজানো। গড়েন নিউজিল্যান্ডের হয়ে আট নম্বরে নেমে সবচেয়ে বেশি বল (২৬৯) খেলার রেকর্ড। ওয়াটলিংয়ের সঙ্গে তার জুটি থামে ২৬১ রানে। সপ্তম উইকেটে নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ জুটি এটিই। পেছনে পড়ে যায় ২০০৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ক্রিস কেয়ার্নস ও জ্যাকব ওরামের ২২৫ রানের জুটি। শুধু তাই নয়, জুটিতে দু’জন মিলে খেলেছেন ৫০০ বল। সপ্তম উইকেটে এরচেয়ে বেশি বল টেস্ট ইতিহাসে খেলেছে কেবল একটি জুটি। ২০০১ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে পাকিস্তানের মোহাম্মদ ইউসুফ ও সাকলায়েন মুশতাক খেলেছিলেন ৫৬৯ বল। অকেশনাল জো রুটকে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে ঠেলে তুলে নেন ডাবল সেঞ্চুরি। নাম লেখান ইতিহাসে। কিউইদের হয়ে প্রথম তো বটেই, ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও কোন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানের ডাবল সেঞ্চুরির প্রথম কীর্তি এটিই। ওয়াটলিং শেষ পর্যন্ত থামেন জোফ্রা আর্চারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। ৪৭৩ বলে ২৪টি চার ও একটি ছক্কায় সাজানো তার ২০৫ রানের ইনিংস। এক ওভার পরই ৬১৫ রানে ইনিংস ঘোষণা করে কিউইরা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের আগের দলীয় সর্বোচ্চ ছিল ১৯৭৩ সালের লর্ডস টেস্টে ৯ উইকেটে ৫৫১ রান। স্কোর ॥ ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস- ৩৫৩/১০ (১২৪ ওভার; বার্নস ৫২, সিবলি ২২, ডেনলি ৭৪, রুট ২, স্টোকস ৯১, পোপ ২৯, বাটলার ৪৩, কুরান ০, আর্চার ৪, লিচ ১৮*, ব্রড ১; বোল্ট ১/৯৭, সাউদি ৪/৪, ডি গ্র্যান্ডহোম ২/৪১, ওয়াগনার ৩/৯০) ও দ্বিতীয় ইনিংস- ৫৫/৩ (২৭.৪ ওভার; বার্নস ৩১, সিবলি ১২, ডেনলি ৭*, লিচ ০; স্যান্টনার ৩/৬)। নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস- ৬১৫/৯ ডিক্লেঃ (২০১ ওভার; রাভাল ১৯, লাথাম ৮, উইলিয়ামসন ৫১, টেইলর ২৫, নিকোলস ৪১, ওয়াটলিং ২০৫, গ্র্যান্ডহোম ৬৫, স্যান্টনার ১২৬, সাউদি ৯, ওয়াগনার ১১*, বোল্ট ১*; আর্চার ১/১০৭, কুরান ৩/১১৩, লিচ ২/১৫৩, স্টোকস ২/৭৪, রুট ১/৬৭)। ** চতুর্থদিন শেষে
×