অরক্ষিত রেলগেট বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সারাদেশের রেল ক্রসিংয়ে গেটম্যান নিয়োগের পাশাপাশি অরক্ষিত গেট বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়েছে। এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট নিয়োগের নির্দেশনা চেয়ে আরেকটি রিট দায়ের করা হয়েছে। অন্যদিকে ফলে রাসায়নিক শনাক্ত করতে বন্দরে ‘কেমিক্যাল টেস্টিং ইউনিট’ বসানোর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ফলে কি কি রাসায়নিক থাকে ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে তা পরীক্ষা করে জানাতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সারাদেশের জেলা ও উপজেলায় পৃথক পরীক্ষার হল নির্মাণের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। সাতটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় নির্ধারিত আসনের ১০ গুণ বেশি শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে পারবে না বলে জারি করা শর্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। রবিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান করেছে। সারাদেশের রেল ক্রসিংয়ে গেটম্যান নিয়োগের পাশাপাশি অরক্ষিত গেট বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়েছে। রবিবার সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী একলাস উদ্দিন ভূঁইয়া রিটটি করেন। রিটের বিবাদীরা হলেন-মন্ত্রিপরিষদের সচিব, সড়ক ও জনপদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি)। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চে চলতি সপ্তাহে রিট আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে। রিটে উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমানে বাংলাদেশে রেল বিভাগে এক হাজার ৪১২টি লেভেল ক্রসিং আছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে ২৩৫টি দুর্ঘটনায় ২৪৪ জন মারা গেছে। এসময় ২২৮ জন মারাত্মকভাবে আহত হয়। ২০১৭ সালে ২১১টি দুর্ঘটনায় ২২৯ জন মারা যায় এবং ১৫৫ জন আহত হয়। ২০১৬ সালে ১০ মাসে ৫৬টি দুর্ঘটনায় ৫৯ জন মারা যায় এবং ৪৬ জন আহত হয়। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বর-কনেসহ ১০ জন মারা যায় এবং পাঁচজন গুরুতর আহত হয়। রিটকারীর ভাষ্য, বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রকাশিত আগস্ট, ২০১৮ ডাটাবেজ অনুযায়ী, এক হাজার ২৪২টি রেল ক্রসিংয়ের মধ্যে ৪৬৬টিতে গেটম্যান আছে এবং ৪৯৬টি ক্রসিং অরক্ষিত অবস্থায়। তার মধ্যে রেলওয়ে ইস্ট জোনে ৪৩৪টি রেল ক্রসিংয়ের মধ্যে ২৫৫টিতে গেটম্যান রয়েছে, বাকিগুলো অরক্ষিত অবস্থায়। অথচ ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে আইন, ১৮৯০’ এর ১৩, ১৪ এবং ১২৮ ধারায় রেলওয়েতে নিরাপত্তা নিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। রিট আবেদনে আরও বলা হয়, প্রতিদিন বহুলোক নিহত ও আহত হওয়ার ফলে সুখময় রেলযাত্রা ব্যাহত ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পতিত হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের রেলওয়ে ডিভিশন এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরসহ ৯টি ডিপার্টমেন্ট বৈধ ও অবৈধ রেলক্রসিং সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এত দুর্ঘটনার পরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অন্যদিকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কাউন্সিলর (পরামর্শক) ও ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট নিয়োগের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। রবিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইনজীবী ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া এই রিট দায়ের করেন। ফলে কি কি রাসায়নিক থাকে ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে তা পরীক্ষা করে জানাতে নির্দেশ ॥ বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) উদ্দেশে আদালত বলে, ব্যবসায়ীরা ফলে কি রাসায়নিক মেশাচ্ছে আল্লাহ জানেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা যথেষ্ট নয়। মানুষের কিডনি-লিভার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এদিকে, ফলে রাসায়নিক শনাক্ত করতে বন্দরে ‘কেমিক্যাল টেস্টিং ইউনিট’ বসানোর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। জেলা-উপজেলায় পৃথক পরীক্ষার হল কেন নয় ॥ সারাদেশের জেলা ও উপজেলায় পৃথক পরীক্ষার হল নির্মাণের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। শিক্ষা সচিব, গণপূর্ত সচিব, জেলা প্রশাসকসহ বিবাদীদের আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। রবিবার জনস্বার্থে করা একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈতবেঞ্চ এ আদেশ দেয়।