ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বছরে ৫০ কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

জামালপুরে ব্যান্ডরোলবিহীন বিড়ি বিক্রি

প্রকাশিত: ০৯:৩১, ২৫ নভেম্বর ২০১৯

 জামালপুরে ব্যান্ডরোলবিহীন বিড়ি বিক্রি

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর ॥ জামালপুরের প্রায় প্রতিটি হাট বাজারে নকল ব্যান্ডরোল ও ব্যান্ডরোলবিহীন বিড়িতে সয়লাব হয়ে গেছে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কিছু অসাধু বিড়ি ব্যবসায়ী ও কোম্পানি এসব অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করে লুটে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এক জরিপে দেখা গেছে, জামালপুরে প্রায় ৪৯টি বিড়ি কোম্পানি নামে বেনামে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করেলেও মূলত তিনটি কোম্পানির বৈধতা রয়েছে। বাকি ৪৬টি বিড়ি কোম্পানি বৈধ কোন কাগজপত্র নেই বললেই চলে। এসব নাম সর্বস্ব কোম্পানি গ্রামগঞ্জের হাট-বাজারে নকল ব্যান্ডরোল ও ব্যান্ডরোলবিহীন বিড়ি বিক্রি করে যাচ্ছে সহসাই। সরকার প্রতিটি ব্যান্ডরোল ট্যাক্স ৭ টাকা ৮৩ পয়সা নির্ধারিত করা আছে। আর প্রতিটি বিড়ির প্যাকেট ন্যূনতম ১৪ টাকা বিক্রির জন্য বলা হলেও নামে বেনামের এসব ভুয়া কোম্পানি নকল ব্যান্ডরোলের বিড়ি প্যাকেট বিক্রি করছে মাত্র সাত টাকা থেকে আট টাকা করে। আর এসব অসাধু ব্যবসায়ী ও কোম্পানির কারণে জামালপুর থেকে প্রতিমাসে চার কোটি ও বছরে ৫০ কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এদিকে দেখা গেছে, জামালপুর সদর, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ, ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, বকশীগঞ্জ, সরিষাবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন বাজারে আবাদ বিড়ি, বাদশা-২ বিড়ি, আজিম বিড়ি, জামাল বিড়ি, যমুনা বিড়ি, নবাব বিড়ি, পাখি বিড়ি, আফিজ বিড়ি, মিজান বিড়ি, সাথী বিড়ি, রাঙ্গা বিড়ি, আলম বিড়ি, স্বাধীন বিড়ি, সাইফ বিড়ি, কমল বিড়ি, রবি বিড়ি, আনার বিড়ি, বাদশা বিড়ি-১ , ফ্রেস বিড়ি, রেডিও বিড়ি, তারা বিড়ি, যমুনা বিড়ি, রতনা বিড়ি, ময়না বিড়ি নামে প্রতিটি হাট-বাজারে নকল ব্যান্ডরোল ও ব্যান্ডরোলবিহীন বিড়ি বিক্রি করে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা করে আসছে মালিকরা। এ বিষয়ে জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, প্রতিমাসে এসব অসাধু বিড়ি ব্যবসায়ী ও কোম্পানির কারণে জামালপুর থেকে প্রতিমাসে চার কোটি ও বছরে ৫০ কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এসব দুর্নীতি প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এসব কোম্পানি ক্রেতাদের অধিকার ক্ষুণ্ণ করে বিড়ি নীতিমালার তোয়াক্কা না করে বাজারে নকল ও ভুয়া ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে ব্যবসা করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার পাশাপাশি জনগণের সঙ্গেও প্রতারণা করে আসছে। এ বিষয়ে জামালপুর সার্কেল-১ ও সার্কেল-২ এর বিভাগীয় দফতরের রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল কুদ্দুস বলেন, সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে যে সকল নকল ব্যান্ডরোল ও ব্যান্ডরোলবিহীন বিড়ি কোম্পানি তাদের ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে জামালপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক জনকণ্ঠকে বলেন, নকল ব্যান্ডরোল ব্যবহারকারী ও কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করে অসাধু কোম্পানি ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ সরকারের রাজস্ব আয় ও জনগণের স্বার্থে কাজ করা হবে।
×