ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ফেনীর নবনির্মিত বিদ্যুত কেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে যোগ হলো ১১৪ মেগাওয়াট

প্রকাশিত: ১১:১৫, ২৪ নভেম্বর ২০১৯

ফেনীর নবনির্মিত বিদ্যুত কেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে যোগ হলো ১১৪ মেগাওয়াট

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফেনী ২৩ নবেম্বর ॥ ফেনীতে নবনির্মিত বিদ্যুত প্লান্টে উৎপাদন শুরু হয়েছে। শনিবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেনীর ১৩২ কেভি গ্রিডে লাইনের জাতীয় গ্রিডে ১১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুত সংযোগ দেয়া হয়েছে। এর আগে বুধবার দুপর থেকে ৪ দিন বিরিতিহীনভাবে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করে সদর থানার কাশিমপুরে নির্মিত শ্রীলঙ্কার মালিকানাধীন ১১৪ মেগাওয়াট ফেনী-লঙ্কা পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি। বিদ্যুত উৎপাদনের নীতিমালা অনুযায়ী এখানে উৎপাদিত বিদ্যুত ফেনী ১৩২ কেভি গ্রিড স্টেশনের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত করা হয়েছে। পুনরায় জাতীয় গ্রিড থেকে ফেনী ৩৩ কেভি গ্রিড লাইনের মাধ্যমে ফেনী, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ ও চট্টগ্রামের বারইয়ারহাট, এলাকার সাব-স্টেশানে সরবরাহ করা হবে। ফলে এসব এলাকার পিডিবির ৬৫ হাজার ও পল্লী বিদ্যুতের সাড়ে ৩ লাখ বিদ্যুত গ্রাহক লোডশেডিং এর ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাবে। ফেনীর লঙ্কা পাওয়ার জেনারেশন প্রজেক্ট ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম জানান, শ্রীলঙ্কার মালিকানাধীন ফেনী লঙ্কা-বাংলা পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি ফেনী সদর থানার কাশিমপুর এলাকায় ফার্নেস অয়েলে চালিত ১১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করেছে। পিডিবির সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ১৫ বছর নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য ১২ একর জায়গার ওপর স্থাপন করা এ প্রকাল্পে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৮শ’ কোটি টাকা। প্রায় ৯ মাসের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে এ প্রকল্পের কাজ। বর্তমানে এ প্লান্ট থেকে ৭ জেনেরেটরে প্রতি ঘণ্টায় ২৪ মেট্রিকটন ফার্নেস অয়েল পুড়িয়ে ১১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুত জাতীয় গ্রিডে সরবরাহের কথা চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে। তবে এর উৎপাদন নির্ভর করবে পিডিবির চাহিদার ওপর। পিডিবি ফেনী নির্বাহী প্রকৌশলী (বিতরণ) সহিদুল ইসলাম জানান, ১৩২ কেভি ফেনী গ্রিড স্টেশনের আওতাধীন পিডিবি ও পল্লীবিদ্যুতের প্রায় সাড়ে ৪ লাখ গ্রহকের পিক আওয়ারে ২৪০ মেগাওয়াট এবং অফ-পিক আওয়ারে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। জাতীয় গ্রিড থেকে সব সময় চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় মানুষকে লোডশেডিং এর ভোগান্তি পোহাতে হয়। বিশেষ করে সেচ মৌসুমে সেচ পাম্পে বিদ্যুত দেয়ার কারণে লোডশেডিং এর তীব্রতা বেড়ে যায়। বর্তমানে কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে উৎপাদিত বিদ্যুত ফেনী জেলাসহ নোয়াখালীর কোম্পনীগঞ্জ ও চট্টগ্রামের বারাইয়ারহাট এলাকায় ফেনী গ্রিড স্টেশনের মাধ্যমে বিদ্যুত বিতরণ করা হচ্ছে। এ প্লান্ট থেকে ১১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন শুরু হওয়ায় কুমিল্লাাসহ অন্য স্থানের উৎপাদিত বিদ্যুত ফেনীর আওতাধীন এলাকার জন্য প্রয়োজন হবে না। ফলে গ্রিড লাইনে ওভারলোডিং হবে না এবং গ্রাহকগণ পুরোপুরি ভোল্টেজসহ উন্নতমানের বিদ্যুত পাবেন। ফেনী বিসিক শিল্পনগরী ও ফেনী পল্লী বিদ্যুত সমিতির সাবেক সভাপতি আবদুল মোতালেব জানান, ফেনীর উৎপাদিত বিদ্যুত ফেনীর আওতাধীন এলাকার গ্রহকদের চাহিদা মিটিয়ে অন্য এলাকায় বিতরণ করা যাবে। দেশের অর্থনীতিতে যোগ হবে বাড়তি রাজস্ব আয়। তবে পিডিবির সারাদেশের বিদ্যুত বিতরণ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ নতুন তেলচালিত বিদ্যুত কেন্দ্রগুলো থেকে যদি বিদ্যুতের চাহিদা না থাকার কথা উল্লেখ করে তাদের উৎপাদিত বিদ্যুত ব্যবহার না করে থাকে, তা হলে চুক্তি অনুযায়ী উৎপাদনকারী কোম্পানিকে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট প্রদান করতে হবে পিডিবিকে। তাই এ খাতে সরকারকে মোটা অংকের ভর্তুকি প্রদান করতে হবে। যা সরকারের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
×