ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অভিযোগ ঠিক নয় ॥ ট্রাস্ট

নিরাপত্তা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর এরিকের চিঠি

প্রকাশিত: ১১:১৫, ২৪ নভেম্বর ২০১৯

নিরাপত্তা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর এরিকের চিঠি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর চিঠি দিয়েছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ছেলে এরিক এরশাদ। একই চিঠির অনুলিপি দেয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের আইজিপি, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতিকে। শনিবার চিঠিটি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এরিকের মা ও প্রয়াত এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা এরশাদ। গত কয়েকদিন ধরেই এরিককে নিয়ে বিদিশা ও জিএম কাদের দু’পক্ষের মধ্যে টানাপড়েন চলছে। এদিকে এরিকের বক্তব্যের জবাবে শনিবার জাপা চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্টের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মেজর অব. খালেদ আখতার। তিনি বলেছেন, দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে এরিকের আনা অভিযোগ সত্য নয়। এরশাদের বাস ভবন প্রেসিডেন্ট পার্কে বিদিশাকে অনুপ্রবেশকারী হিসেবেও মন্তব্য করেন খালেদ। চিঠিতে এরিক অভিযোগ করে বলেছেন, ‘আমার বাবা এরশাদের মৃত্যুর পর থেকে চাচা (জিএম কাদের) ও তার অনুগতরা বিভিন্নভাবে আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছে। নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে তারা কৌশলে আমার বাবার লাশ পর্যন্ত আমাকে দেখতে দেয়নি। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মায়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম অপবাদ দিয়ে মা-ছেলের সম্পর্ককে ছিন্ন করেছিলেন। কখনও কখনও আমাকে রাখা হতো অনাহারে, অর্ধাহারে। এমনকি আমার বাড়িতে কর্মরত ড্রাইভার ও কাজের বুয়াদের দিয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হতো। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী আমি একজন অসহায় পিতৃহারা শারীরিক প্রতিবন্ধী বালক। অন্যের সহযোগিতা ছাড়া ঠিকমতো চলতেও পারি না। আমি যেহেতু প্রাপ্তবয়স্ক, আমার স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। তাই আমার মাকে নিয়ে নিজ বাড়িতে সুন্দরভাবে বসবাস করতে চাই।’ প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়ে এরিক বলেছেন, ‘আপনি আমাদের আমার অর্থ ও সম্পদলোভী চাচা জিএম কাদেরের হাত থেকে রক্ষা করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করলে চিরকৃতজ্ঞ থাকব।’ এদিকে, শুক্রবার সন্ধ্যায় বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কে সংবাদ সম্মেলনে এরিক বলেন, তিনি বাসা থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছেন। বলেন, আমার সম্পদের ওপর চাচার লোভ আছে। আমরা ভয়ে বাসার বাইরে যেতে পারছি না। বাসা থেকে বের হলে আর প্রবেশ করতে পারব কিনা, এমন ভয় পাচ্ছি।’ সংবাদ সম্মেলনে বিদিশা বলেন, আমার সন্তান এরিক এরশাদের অধিকার কোনভাবেই ছাড়ব না। তিনি বলেন, আমি ঠিকানা বদল করার জন্য এখানে আসিনি। গতকাল দেখলাম জাতীয় পার্টির অনেকে আমি কেন এরিকের বাসায় এ বিষয়ে ইনকোয়ারি করার দাবি জানিয়েছেন। তাদের দাবি, আমি সশস্ত্র অবস্থায় এখানে এসেছি। কিন্তু আমি এখানে আমার বাচ্চার জন্য এসেছি। আমি আসার পর বাচ্চাটাকে জঘন্য অবস্থায় পেয়েছি। বিদিশা অনুপ্রবেশকারী জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসায় বিদিশা সিদ্দিক অবৈধভাবে প্রবেশ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্টের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মেজর (অব.) খালেদ আখতার। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট পার্কে বিদিশা সম্পূর্ণ অন্যায় ও অবৈধভাবে প্রবেশ করেছেন। তিনি অনুপ্রবেশকারী। এ নিয়ে গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে জাতীয় পার্টির বনানী অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন তিনি। এ সময় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব হাসিবুল ইসলাম জয়, ট্রাস্টের সদস্য জাহাঙ্গীর আলমসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। খালেদ আখতার আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট পার্কের ফ্ল্যাটসহ প্রয়াত এরশাদের সকল স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি এখন ট্রাস্টের অধীনে। যা এরশাদপুত্র এরিকের ভরণ পোষণ ও জনকল্যাণে গঠিত হয়েছে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর প্রেসিডেন্ট পার্ক যথারীতি ট্রাস্টের অধীনে পরিচালিত হেচ্ছে। ট্রাস্টের ওই বাসায় গত ১৪ নবেম্বর প্রয়াত এরশাদের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিক সম্পূর্ণ অন্যায় ও অবৈধভাবে প্রবেশ করেন। এখানে বিদিশার প্রবেশ করার আইনগত কোন অধিকার নেই। একজন অনুপ্রবেশকারী হিসেবে অবস্থান করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের সম্পর্কে মানহানিকর বক্তব্য দিয়ে আসছেন। শুধু তাই নয়, তিনি এরিক এরশাদকে প্রভাবিত করে তাকে দিয়েও অনাকাক্সিক্ষত বক্তব্য প্রচার করে আসছেন।
×