ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আজ প্রধানমন্ত্রীর কাছে ‘রূপকল্প ২০৪১’ উপস্থাপন

প্রকাশিত: ১১:১৪, ২৪ নভেম্বর ২০১৯

আজ প্রধানমন্ত্রীর কাছে ‘রূপকল্প ২০৪১’ উপস্থাপন

ওয়াজেদ হীরা ॥ ভিশন-২১’র পর এবার উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্নপূরণে তৈরি হচ্ছে ‘রূপকল্প-২০৪১’। ইতোমধ্যেই নতুন অর্থনৈতিক রূপরেখা তৈরি করছে সরকার। কেমন হবে ২০৪১ সালের আধুনিক বাংলাদেশ সেই খসড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে উপস্থাপন হচ্ছে আজ। ২০৪১ এর রূপকল্প ‘স্বপ্ন দলিল’ হিসেব দেখছেন সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)। আজ প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে বেলা ১১টায় এই রূপকল্প ২০৪১ উপস্থাপন করবেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শাসসুল আলম। এ সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ, মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তা ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জনকণ্ঠকে বলেন, ২০৪১ এ আমরা কেমন দেশ চাই সে বিষয়ে একটি ধারণা থাকবে। আমাদের অর্থনীতিবিদ কর্মকর্তারা এটি উপস্থাপন করবেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি দেখবেন। পরবর্তীতে এটি অনুমোদন দেয়া হবে। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপনের পর প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ বাস্তবায়ন অনুসারে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ এটিকে অনুমোদন করতে নিয়ে যাবেন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে। আগামী ২০৪১ সাল সামনে রেখেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার সব অর্থনৈতিক কর্মসূচী গ্রহণ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এর সঙ্গে যুক্ত হয় দুর্নীতি কমানো এবং সর্বক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিত করা। মূলত একটি আধুনিক দেশ গড়তে ভবিষ্যত অর্থনৈতিক কর্মসূচী গ্রহণ করবে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর সামনে খড়সা উপস্থাপনের পর কোন সংশোধনী থাকলে তা নিয়ে চূড়ান্ত হবে খসড়াটি। জানা গেছে, রূপকল্প-৪১ বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও বাড়ানো হবে। বিশেষ করে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়গুলোকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বহির্বিশ্বের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক স্থাপনে জোর দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম জনকণ্ঠকে বলেন, ‘ভিশন ২০৪১ রূপকল্প আছে সেটি বাস্তবায়নের জন্য একটি রূপরেখা হয়েছে। ২০২১ অনুসরণ করে এটি প্রণয়ন করা হয়েছে। যার সময় হবে ২০৪১ সাল পর্যন্ত। কিভাবে এটি বাস্তবায়ন হবে খাত ওয়ারি সেটি বলা হয়েছে। সব খাতে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকবে যাতে আমরা উচ্চ আয়ের উন্নত দেশ হতে পারি। এটি একটি স্বপ্ন দলিল। ৪টি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এটি বাস্তবায়ন করা হবে জানান সিনিয়র সচিব ড. শামসুল আলম। আগামীর স্বপ্ন দলিল খ্যাত রূপকল্প ২০৪১ দারিদ্র্য মুক্ত হবে দেশ। সারাদেশ নিয়ে পর্যটনকেন্দ্রিক চিন্তাও থাকছে রূপকল্পে। চলাচলের জন্য দেশের অভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাট হবে উন্নত। থাকবে আধুনিক ট্রেন। শিল্পকারখানা উন্নয়ন তথা ব্যবসা-বাণিজ্যে সম্প্রসারণে সার্বক্ষণিক বিদ্যুত সুবিধা যেন থাকে সে পরিকল্পনাও থাকছে রূপকল্প ২০৪১ এ। এ বিষয়ে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব নুরুল আমিন জনকণ্ঠকে বলেন, একটি আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে এই পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। আজ থেকে বিশ বছর পর দেশটি কোথায় যাবে তার একটি চিত্র পাওয়া যাবে। তখন দারিদ্র্য থাকবে না। সারাদেশ নিয়ে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তুলতে পরিকল্পনা থাকবে। এছাড়াও দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে রূপরেখা থাকবে। শুধু কৃষি নির্ভর নয় কৃষি এবং বাণিজ্য উভয়ভাবেই আমরা যাতে এগুতে পারি তার চিত্র থাকবে। মোট কথা একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের চিত্র উপস্থাপন করা হবে। জানা গেছে, ইতোমধ্যেই প্রায় শতভাগ বিদ্যুতায়নে এগিয়ে গেছে সরকার। বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব নেয়ার পরই রূপকল্প-২১ ঘোষণা করে। এ ঘোষণার মূল লক্ষ্য ছিল- দারিদ্র্য কমিয়ে মধ্যম আয়ের দেশে নিয়ে যাওয়া। একই সঙ্গে জাতিসংঘ ঘোষিত মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল বা এমডিজির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। ঘোষণা অনুযায়ী, এমডিজির অধিকাংশ লক্ষ্যমাত্রা বিশেষ করে শিশু ও মাতৃমৃত্যু হ্রাসে ব্যাপক সফলতা পেয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, শিক্ষা ও স্যানিটেশনে দ্রুত সফলতা এসেছে। বেড়েছে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ও মাথাপিছু আয়।
×