ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সৌদি থেকে দুদিনে আরও ২৩৮ জন ফিরেছেন

প্রকাশিত: ০৯:৩৯, ২৪ নভেম্বর ২০১৯

সৌদি থেকে দুদিনে আরও ২৩৮ জন ফিরেছেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সৌদি আরব থেকে বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দিনে আরও ২৩৮ জন বাংলাদেশী কর্মী দেশে ফিরেছেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টায় সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি ৮০৪ উড়োজাহাজযোগে দেশে ফেরেন তারা। এ নিয়ে নবেম্বর মাসেই ২ হাজার ৬১৫ বাংলাদেশী দেশে ফিরলেন। বিমানবন্দরে স্থাপিত প্রবাসীকল্যাণ ডেস্ক ও ব্র্যাকের মাইগ্রেশন বিভাগ এ তথ্য জানিয়েছে। তাদের হিসাবে এ বছরের ১০ মাসে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন ২১ হাজারের বেশি বাংলাদেশী কর্মী। মন্ত্রণালয় বলছে, কর্মীরা কোন অপরাধ না করলে সৌদি কর্তৃপক্ষ তাদের দেশে ফেরত পাঠাবে না। সৌদি আইনে তারা অবৈধ বলেই দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব সেলিম রেজার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, সৌদি থেকে কাউকে বিনা কারণে ফেরত পাঠানো হচ্ছে না। কোন না কোন অপরাধ বা ত্রুটি থাকার কারণেই সৌদি আইন অনুযায়ী তাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে। মিডিয়াতে এসব নিয়ে নেতিবাচক লেখালেখির কারণে সৌদিরা বিরক্ত হচ্ছেন। এমনকিছু করা উচিত হবে না যে সৌদিদের মন খারাপ হয়। মিডিয়ায় যেসব খবর প্রকাশ হচ্ছে তা নিয়ে তারা ইতোমধ্যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। সৌদি আরব হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় বাজার। এই বাজারটি বন্ধ হলে দেশের জন্য অনেক ক্ষতি হবে। সৌদি কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে দক্ষ কর্মী চেয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের সৌদি আরব থেকে ২০ হাজার ৬৯২ বাংলাদেশী দেশে ফিরেছেন। বৃহস্পতি ও শুক্রবারও দেশে ফিরেছে ২৩৮ জন কর্মী। প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় তাদের নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ব্র্যাক অভিবাসন বিভাগ জানিয়েছে, দেশে ফেরা এই কর্মীদের অনেকেরই অভিযোগ, আকামা বা কাজের অনুমতি তৈরির জন্য কফিলকে টাকা দেয়া হলেও কফিল আকামা করে দেননি। পুলিশের হাতে প্রেফতারের পর কফিলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি গ্রেফতার হওয়া কর্মীদের দায়দায়িত্ব নেননি। বরং তিনি প্রশাসনকে তাদের ভিসা বাতিল করে দেশে পাঠিয়ে দিতে বলেছেন। যারা কয়েক মাস আগে সৌদি গিয়েছিলেন তাদের কেউই খরচের টাকা তুলতে পারেননি। এখন ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। যেসব জনশক্তি রফতানিকারকদের মাধ্যমে সৌদি গিয়েছিলেন তারা এখন কোন দায়িত্ব নিচ্ছে না। ফলে তাদের পাশে সবার দাঁড়ানোর এখন আর কেউ নেই। শূন্য হাতেই বেশিরভাগ কর্মী দেশে ফিরেছেন। ব্র্যাক অভিবাসন বিভাগের প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ২২ হাজার বাংলাদেশী কর্মী সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন। আসলে এই কর্মীরা নিজেদের ইচ্ছায় দেশে ফেরেননি। তাদের জোর করে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। নবেম্বর মাসেই ২ হাজার ৬১৫ জন কর্মীকে দেশে পাঠিয়ে দিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। এই কর্মীরা একেবারেই খালি হাতে ফিরেছেন। যারা কয়েকমাস আগে গিয়েছিলেন, তাদের কেউই খরচের টাকা তুলতে পারেননি। তারা সবাই ভবিষ্যতে কি করে চলবেন সেই চিন্তায় পড়েছেন। তিনি বলেন, আমরা আশা করছি, তিনদিন পর সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের যে যৌথ বৈঠক হবে, সেখানে নারী কর্মীদের পাশাপাশি পুরুষদের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হবে। বিশেষ করে ফ্রি ভিসার নামে প্রতারণা বন্ধ করতে কাজ করতে হবে দুই দেশকেই। এটা না করতে পারলে তথাকথিত জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিকরা প্রতারণার কাজটি চালিয়েই যেতে থাকবে।
×