ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মিলনমেলায় অভিভূত সাবেকরা

প্রকাশিত: ১০:৩২, ২৩ নভেম্বর ২০১৯

 মিলনমেলায় অভিভূত সাবেকরা

স্পোর্টস রিপোর্টার, কলকাতা থেকে ॥ কলকাতার মহারাজ খ্যাত, ভারত ক্রিকেট বোর্ডের নতুন সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী এমন এক আয়োজন করলেন; তাতে অভিভূত হয়েছেন ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকর, অনীল কুম্বলে, ভিভিএস লক্ষণ, বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার, মোহাম্মদ রফিক, খালেদ মাসুদ পাইলটরা। প্রথমবারের মতো উপমহাদেশে হয় দিবারাত্রির টেস্ট। সেই টেস্টে যে তারা উপস্থিত থাকতে পেরেছেন। সম্মান, সংবর্ধনা পেয়েছেন। ভারতের মাটিতে প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টটি বাংলাদেশের ভারত সফরের শেষ ম্যাচটি আবার হয় কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে। তা আগে থেকেই নিশ্চিত হয়। কিন্তু দিবারাত্রির খেলা হবে ম্যাচটি। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ও ভারত গোলাপি বলে দিবারাত্রির টেস্ট খেলবে তা নিশ্চিত ছিল না। কিন্তু গাঙ্গুলী ভারত ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হতেই দিবারাত্রি টেস্ট করানোর উদ্যেগ নেন। বিসিবির কাছে প্রস্তাব দেয়া হয়। বিসিবিও রাজি হয়। তাই শুক্রবার থেকে গোলাপি বলে দিবারাত্রির টেস্টও শুরু হয়। আর এই টেস্টকে ঘিরে হয় মহা আয়োজন। সেই আয়োজনে ভারত ও বাংলাদেশের সাবেক ক্রিকেটাররাও উপস্থিত থাকেন। ২০০০ সালে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট ম্যাচের প্রতিপক্ষ থাকে ভারত। এবার ভারতের মাটিতে প্রথম দিবারাত্রির টেস্টের প্রতিপক্ষ দল থাকে বাংলাদেশ। সেবার বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট খেলে। টেস্ট অঙ্গনে নিজেদের নাম লেখায়। এবার ভারতে প্রথম টেস্ট হয়। সেই ইতিহাসে জড়িয়ে থাকে বাংলাদেশ। ভারতের সব সাবেক টেস্ট অধিনায়কদের ইডেন টেস্টে আমন্ত্রণ জানানো হয়। শচীন টেন্ডুলকর, অনীল কুম্বলে, ভিভিএস লক্ষণ, হরভজন সিং, এমনকি আজহারউদ্দিনও উপস্থিত থাকেন। আর ২০০০ সালে ভারতের বিরুদ্ধে যে বাংলাদেশ দলটি টেস্ট খেলে, তাদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়। আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও আল শাহরিয়ার রোকন উপস্থিত থাকেননি। তবে বাকিরা ঠিকই থাকেন। শুক্রবার টেস্ট শুরু হওয়ার আগে ২০০০ সালে প্রথম টেস্ট খেলা দলের ক্রিকেটাররা মাঠেও উপস্থিত থাকেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাঠে উপস্থিত হওয়ার পর তারাও থাকেন। সেই টেস্টের অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয়, আকরাম খান, মোহাম্মদ রফিক, খালেদ মাসুদ পাইলট, মেহরাব হোসেন অপি, হাসিবুল হোসেন শান্ত, বিকাশ রঞ্জন দাসরা উপস্থিত থাকেন। টেন্ডুলকর, লক্ষণ, কুম্বলেদের সঙ্গে একসঙ্গে বসে খেলাও দেখেন। স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শক। টেস্ট ম্যাচে এমনটি একেবারেই দেখা যায় না। তা উপভোগ করার চেষ্টা করেন। যখন প্রথম সেশন হয়, তখন বিশেষ টক শোতে হাজির হন টেন্ডুলকর, লক্ষণ, কুম্বলে, হরভজন। টেন্ডুলকর বলেন, ‘কেমন আছ কলকাতা, ভাল আছ?’ তখন স্টেডিয়াম ‘শচীন, শচীন’ ধ্বনিতে ফেটে পড়ে। হরভজন ইডেনে টেস্ট খেলার স্মৃতিগুলো মন্থন করেন। হ্যাটট্রিক, ৫ উইকেট নেয়ার কথা বলতে গিয়ে আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েন। লক্ষণ তার ক্যারিয়ার সেরা ২৮১ রানের ইনিংসটির কথা মনে করেন। ইডেন গার্ডেন্সেই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভারতের নিশ্চিত হারা ম্যাচ জেতানোর সেই ইনিংসটি খেলেন লক্ষণ। কুম্বলেও কত স্মৃতিচারণ করতে থাকেন। সবচেয়ে গাঙ্গুলীকে ধন্যবাদ দেন। সবাইকে যে এক করেন গাঙ্গুলীই। বাংলাদেশের হাবিবুল বাশার বলেন, ‘অসাধারণ আয়োজন। মুগ্ধতা ছড়িয়েছে। উৎসবের আমেজ এনে দিয়েছে। দাদা (সৌরভ গাঙ্গুলী) পারেনও।’ মোহাম্মদ রফিক বলেছেন, ‘দাদাকে (গাঙ্গুলী) ধন্যবাদ না দিলেই নয়। তিনিই এমন আয়োজন করেছেন। যে জন্য আমরা ২০০০ সালে টেস্ট খেলা ক্রিকেটাররা এক হতে পেরেছি।’ পাইলট বলেন, ‘অসম্ভব ভাল লাগছে। দাদা আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তাকে ধন্যবাদ। আমাদের যে সম্মান দিয়েছেন তিনি, তা স্মৃতিতে অমলিন হয়ে থাকবে।’ হাসিবুল হোসেন শান্ত বলেন, ‘আমরা শত কাজে ব্যস্ত থাকি। এক হতে পারি না। সবাই যার যার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। ক্রিকেটের সঙ্গেই আছি। কিন্তু সবাই এক হওয়া কঠিন। দাদার জন্য তা হয়েছে। তাকে ধন্যবাদ। তিনি যে আয়োজন করেছেন, তাতে অভিভূত না হয়ে উপায় নেই।’
×