ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় পাস না করেই হাইকোর্টের আইনজীবী

প্রয়োজন ছাড়া সিজার করায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট

প্রকাশিত: ১১:১০, ২২ নভেম্বর ২০১৯

প্রয়োজন ছাড়া সিজার করায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির পরীক্ষায় পাস না করেই জুম্মান সিদ্দিকী সরাসরি হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবীর সনদ লাভের প্রজ্ঞাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করা হয়েছে হাইকোর্টে। অন্যদিকে প্রয়োজন ছাড়া সিজার করায় ২৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পৃথক পৃথকভাবে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিটগুলো দায়ের করা হয়েছে বলেছে সংশ্লিষ্ট রিটকারী আইনজীবীরা জানিয়েছেন। এদিকে মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন-১৯৯৯ এর তিনটি (২গ, ৩ ও ৬) ধারা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না মর্মে জারি করা রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। শুনানি শেষে রায়ের জন্য ৫ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেছে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ। প্রসূতি এক নারীকে প্রয়োজন ছাড়া অস্ত্রোপচার করার ঘটনায় শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক ক্ষতির অভিযোগে একটি বেসরকারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ২৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট দায়ের করা হয়েছে। সেই সঙ্গে রিটে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বেআইনী ও অবহেলার কারণে শান্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানার গোরারবাগ গ্রামের জামাল হোসেন বিপুর মেয়ে রিমা সুলতান নিপার পক্ষে সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী মোঃ জে আর খান রবিন এই রিটটি দায়ের করেন। রিটের বিবাদীরা হলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাচিব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ট্রাস্ট ওয়ান হাসপাতালের পরিচালক, সংশ্লিষ্ট ডাক্তার ও অপারেশন থিয়েটারের কর্তব্যরত সহকারীসহ নয় জনকে বিবাদী করা হয়েছে। এদিকে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির পরীক্ষায় পাস না করেই জুম্মান সিদ্দিকী সরাসরি হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবীর সনদ লাভের প্রজ্ঞাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করা হয়েছে হাইকোর্টে। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জনস্বার্থে সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন রিট আবেদনটি দায়ের করেন। রিটে বিবাদীরা হলেন আইন সচিব, বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান, বার কাউন্সিলের সচিব ও সংশ্লিষ্ট আইনজীবী। আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন জানান, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আদেশ ও বিধি লঙ্ঘন করে বাইরে কোন রকম পরীক্ষা ছাড়াই ওই ব্যক্তিকে হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। যা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আদেশ ও বিধির লঙ্ঘন। এ কারণে প্রজ্ঞাপন চ্যালেঞ্জ করে রিটটি দায়ের করা হয়েছে। বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মোঃ খায়রুল আলম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চে এ রিটের শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। আইন অনুযায়ী আইনে স্নাতক কোন ব্যক্তিকে প্রথমে বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্ত হতে হয়। এর জন্য ধাপে ধাপে নৈর্বক্তিক, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্তির পর আবার হাইকোর্টে তালিকাভুক্তের জন্য লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে তবেই সনদ পাওয়া যায়। কিন্তু জুম্মান সিদ্দিকী বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হননি। একাধিকবার অনুত্তীর্ণ হওয়ার পরেও তাকে সরাসরি হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত দেখিয়ে গত ৩১ অক্টোবর গেজেট প্রকাশ করেছে। মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজনের ওপর রায় ৫ ডিসেম্বর মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন-১৯৯৯ এর তিনটি (২গ, ৩ ও ৬) ধারা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না মর্মে জারি করা রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের জন্য ৫ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেছেন। এর আগে ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট রুল জারি করেছিল হাইকোর্ট। রুলে ওই আইনের অধীনে ১৮ বছরেও বিধি প্রণয়ন না করায় বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তাও জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। রিট আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম। আদালতে রিট আবেদনটি দায়ের করেন ফাতেমা জোহরা নামের এক ব্যক্তি। আইনজীবীরা জানান, ফাতেমা জোহরা ২০১৫ সালে তার মেয়ে ফাহমিদাকে একটি কিডনি দান করেন। এরপরও মেয়ের কিডনি অকেজো হয়ে গেছে। বর্তমানে ডায়ালাইসিস করতে হচ্ছে। যা ব্যয়বহুল। কিন্তু আইনগত বাধার কারণে মেয়েকে দাতার কাছ থেকে কিডনি দিতে পারছেন না তিনি। এ অবস্থায় তিনি রিট আবেদন করেন।
×