ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কবিতা

প্রকাশিত: ০৯:৩৬, ২২ নভেম্বর ২০১৯

কবিতা

অনন্তের ঘরে ফেরা এখনই সময় রবীন্দ্রনাথ অধিকারী বুননে লুকানো দাবার ছক দেহ-ঘরে কৃষ্ণ-যাপন কদম তলে বাজে বাঁশি অবিরল সবুজ ঠিকানা মনের ম-পে, পাতে তালশাষ পায়েস হৃদয়ে লাল-হলুদ চূর্নির দলা শিলাময় মূর্তি, মৈত্রির চিরচেনা রোদ ঢেকেছিলো কালো-ঘন অন্ধকারে শয়নে বিছানো ছিলো নীলাদ্রির চিত্রমালা বৈদিক ঐতিহ্যের অন্তর্গত শব্দের রূপ সোম-যাগ অগ্নিহোত্র ও রাজসূয় যজ্ঞ ঘর-জুড়ে ঋদ্ধ-ঋণ, দূর্বাদলের আঁচড় গ্রহ-গ্রহান্তরের ছায়া বুননে ছক আটা কার্যের প্রকৃতি অনন্তে নয়, অনন্তের ঘরে ফেরা এখনই সময়! ৬২, বাইনবাড়ী পাঁচুড়িয়া, গোপালগঞ্জ-৮১০০ ০১৭১৮-২৪৬৪৮১। ** একটি রহস্যময় মাছ মাসুদ মুস্তাফিজ যৌবন ভেঙ্গে নতুন এক রহস্যময় মাছ একটি রহস্যবাদ বিজাতীয় মাছ প্রতিদিন আমার সাথে কথা বলে রাতের দুপুরে বিকারগ্রস্ত সময় কাটে আর রাত কেটে যায় অবিরল আমি নির্মম সাঁতার কাটতে কাটতে সকালের রোদে উঠি জন্মস্বাদে অনির্ধারিত জল কেটে সে তো আসলে আমার মাছ- এক রহস্যময় মাছ সে প্রিয় রামধনুর সুরভিত যৌবন ছড়ায় জলে কতোটা সাঁতার বুঝলে মাছ হওয়া যায় কতটা সঙ্গীবিহীন একাকী কাটে শরমের জীবন রক্তমাখা গরম জলে কোন কবিতা লিখে রাখো তুমি রুমি- আমাদের শরীরে বিভা জ্বলে আর বিভার জলসঙ্গম নাচিয়ে দিনের জন্ম নিলে রাশোভিত স্বপ্নে জলে আগুন ধরে... কোনো সুগভীর জাল-অদৃশ্যের কাল জীবনের রাতদিনে কী অদ্ভুত বিক্ষত আলোমাখা মিথ্যা অন্ধকার ডাকে স্বপ্নের ঋণে! কী প্রতীক্ষা বিদৃশ্যের মাছে- সোনালি-রুপালি বাতাসে ওড়ে নির্বিকার মাছপ্রতিম শীতলকাল আজ দুপুরের রাতে এই রহস্যময় জাতে আমার ডাঙ্গারাঙা মাছের সঙ্গে কথা হলো- এক মির্মম অভিসারে! ** জন্মসঙ্গীত রফিকুজ্জামান রণি [উৎসর্গ : কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য] আমার জন্মচিৎকারের নাম- সঙ্গীত তাল-লয়-ছন্দ-সুর কিংবা স্বরলিপি না জেনেই একদিন আমিও গেয়ে উঠেছিলাম ‘ওঁয়া ওঁয়া’ জন্মসংগীত! আমার কণ্ঠের অনভ্যস্ত সুরে চোখ মেলেছিলেন মা মৃদু হেসেছিলেন বাবা ঠাট্টা করেছিলেন দাদা-দাদি আনন্দে মেতে উঠেছিলো পাড়া-পড়শি অথচ আমিই কেবল ভালো জানি- ভূমিষ্ঠ সময়ের গল্প-বৃত্তান্ত পৃথিবীতে নেমে বুকফাটা চিৎকারে আমি কোনো ঈশ্বরকে ডাকিনি আমি আমার বাবা-মাকেও খুঁজিনি দাদা-দাদি কিংবা পাড়াপড়শিকেও না আমি কেবল পার্থিব নিরাপত্তার দাবি তুলেছি আমি শুধু আমাকেই খুঁজেছি সেদিন! ** ঝিনুক নূর মোহাম্মদ ঝিনুকের মতো আমাদের চোখও সাইক্লোন সিডর সুনামি ইত্যাদি দেখে না দেখবেই বা কেন! কোন কারণে বলুন জীবনের গুরুত্ব আছে না! গুরুত্ব দিয়েই বুঝে নিজেদের অবস্থান বুঝে চলমান গতিবিধি ও সময় ঝিনুকের মতো নিরাপদ সুখে একটু একটু করে চোখ খুলি খুলতে খুলতে তুলে আনি সুন্দর সম্ভাবনার স্বপ্নীল জগৎ আমাদের স্বপ্নীল জগতে বিচরণ করে জীবনের পর্যটক ভাস্কো দ্য গামা ও ইবনে বতুতারা এভাবেই হোন মণিমুক্তা। একুরিয়ামের কারিগর আমারই পূর্বপুরুষ এনাম রাজু চাঁদ দেখার অশেষ নেশায় একদিন তারাদের গুনতে আরম্ভ করি। কবরের ফিসফাস আওয়াজে বিচলিত হইনি... তাই গ্রহ-নক্ষত্র সব জেনেছি যদিও অতটা সহজ ছিলো না যেমন সুবিধা করতে পারিনি মাছেদের শহরে ধ্যানি হতে অথচ- একুরিয়ামের কারিগর আমারই পূর্বপুরুষ। ** অভ্যন্তরীণ সংস্করণ মামুন অপু ভেতরটা পোড়াতে দাবানল লাগুক সিগ্রেটের ধোঁয়া তো মামুলি বিষয় কামারশালায় দেবো বাতিল হৃদয়টাকে; তীব্র দাহে ভিন্নতা আসুক তারপর গড়ুক লাঙ্গলের তীক্ষ্ম ফলার মতো যেন পারি উর্বর-অনুর্বর মাটিকে বিদীর্ণ করে দিতে এমনকি ক্ষুদ্র মাটির চাকার মতো পাহাড়কে গুড়িয়ে দিতে। নক্ষত্রে বৃষ্টি হবে প্রত্যাশা করে একমাত্র বোকারা... আমার হৃদয়টা এক টুকরো নক্ষত্র চোখ জোড়া সে নক্ষত্রের গ্রহ গ্রহজোড়ায় প্লাবন বারোমাসি বৃষ্টিতে। ** চুপ আকিব শিকদার চুপ করে রও চুপ- এখন আমি জ্বলছি ভীষণ অগ্নিগিরির চূড়ায় যেমন ভয়াল অগ্নিকূপ। চুপ করে রও চুপ- আমার দহন দিচ্ছে পুড়ে মিথ্যে কুহক, কুশ্রী শ্বাপদ, আবর্জনার স্তূপ। চুপ করে রও চুপ- আমার হাতের স্পর্শ পেলে কটুগন্ধী ঘুঁটে পুড়ে হয় গন্ধমধুর ধুপ। ** পেঁয়াজকথন মু. মাহবুব হাসান আমি পেঁয়াজ, টক অব দি টাউন। আমি চাই না হতে ধনীর ভোগ্য পণ্য চাই, দরিদ্রের ভালবাসায় হোক এ জীবন ধন্য। যে মহান কৃষক রোদে ঘামে বৃষ্টিতে ভিজে সোনার ফসল ফলায়, আমি চাই পান্তাভাত আর কাঁচামরিচের সঙ্গে তার নিত্যদিনের সকাল কাটুক ভালবেসে আমায়। হলে থাকা দরিদ্র, নিম্ন বিত্ত কিংবা মধ্যবিত্তের প্রিয় খাবার ডাল, ডিম ভাজি আর আলু ভর্তায় আমি মিশে যেতে চাই আপনজনের মতো। আমায় পেয়ে মুছে যাক অনাহারি, অর্ধহারির কষ্ট আছে যত। প্রেমিকার কোমল হাতে বানানো বিবিধ ভর্তা কিংবা পিঁয়াজুর স্বাদে যে সুখের হাসিতে সপ্নের বাসা বাঁধে, প্রেমিকের মুখের সেই অমলিন হাসি, ভালবাসি! আমি বড় ভালবাসি! আমি চাই হতে গরিব কিংবা মধ্যবিত্তের অতি আপনজন চড়াদামে বিত্তের সাথে আবগাহন! এ নয় আমার জীবন।
×