ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নাজমুল মাহমুদ

সোহাগপল্লীতে একদিন

প্রকাশিত: ০৯:৩০, ২২ নভেম্বর ২০১৯

সোহাগপল্লীতে একদিন

১০ নবেম্বর। দিনটি ছিল রোববার, রবিউল আওয়াল মাসের ১২ তারিখ। এই দিন আমাদের সকলের জন্য কর্মস্থল ছুটির ঘোষণা করা হয়েছিল। এই কথাটা বলার কারণ হচ্ছে, আমরা মিডিয়াকর্মী। সেজন্য একসঙ্গে সকলের ছুটি পাওয়াটা খুবই কঠিন এবং আনন্দেরও বটে। ছুটি পাওয়ার পর ছোট বেলায় পড়া একটি কবিতা লাইন মনে পড়ে যায় ‘মেঘের কোলে রোদ হেসেছে, বাদল গেছে টুঁটি, আজ আমাদের ছুটিও ভাই আজ আমাদের ছুটি।’ এই ছুটির দিনটিকে আনন্দঘন করে তুলতে আমাদের কর্মস্থল বণিকের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়েছিল ‘ফ্যামেলি ডে ২০১৯’ পিকনিকের। আর সেই পিকনিক স্পট হিসেবে বেছে নেয়া হয় গাজীপুর সোহাগপল্লী। ৯ নবেম্বর রাতভর ছিল বৃষ্টি, কখনও ভারি আবার গুঁড়ি গুঁড়ি তার সঙ্গে ছিল টানটান উত্তেজনা। কখন সকাল হবে কখন আমরা যাব তাই রাতভর জামা-কাপড় গুছিয়ে সকাল হতে না হতেই বৃষ্টি ভেজা সকালে তড়িঘড়ি করে বেরিয়ে পরলাম কাওরান বাজারের উদ্দেশে। এসে দেখি আমার অনেক সহকর্মী আমার আগেই উপস্থিত হয়েছে। তারপর এক এক করে সকলেই একই সঙ্গে সমবেত হলাম। আনন্দের সঙ্গে গাড়িতে উঠে বসলাম। রওনা দিয়েছি সোহাগপল্লীর উদ্দেশে। মনে অজানা সন্দেহ, বৃষ্টি হবে, নাকি আকাশ ভাল থাকবে। গিয়ে কি আনন্দ করতে পারব, নাকি গাড়িতে গাড়িতেই থাকতে হবে। গাড়ি ছাড়ার কিছুক্ষণ পর আমাদের নাস্তা দেয়া হলো। পথিমধ্যে সহকর্মীরা অনেক মজা করলাম। এর আগে আর কখনই সোহগপল্লীতে যাওয়া হয়নি আমাদের। তাই হয়ত আমাদের আনন্দটা খুব বেশি হচ্ছিল। গাড়ি গিয়ে থামে সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ। তারপর গাড়ি থেকে নেমে আমরা বেশ কয়েকজন মিলে ক্যামেরাবন্দী হলাম। একে একে পার্কের ভেতর প্রবেশ করলাম। খুব হৈ-হুল্লোড়, আনন্দ-উল্লাস, সুইমিংপুলে লাফালাফি, ফুটবল, ক্রিকেট খেলা হলো। সবচেয়ে বেশি আনন্দ হয়েছে সুইমিংপুলে। শেষে ক্লান্তি দূর করতে আহার করার জন্য ডাক পরল। খাবার শেষ করে আমরা বিশ্রাম নিলাম। তারপর শুরু হলো খেলাধুলা, বাচ্চাদের বিস্কুট দৌড়, মহিলাদের বালিশ খেলা। তবে আরেকটি আনন্দের বিষয় হলো আমাদের এক সাংবাদিক সহকর্মী গিটার বাজিয়ে খুব সুন্দর গান গেয়ে আমাদের আনন্দ দিয়েছেন। এরমধ্যে সূর্যি মামা পশ্চিম আকাশে হেলান দিয়েছে। সব কর্যক্রম শেষ। ফিরতে হবে গন্তব্যে। এবার গাড়িতে ওঠার পালা। ওই দিনটি সত্যি খুব আনন্দের যা ভুলার নয়। এমন সুন্দর সময় উপহার দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাই আয়োজকদের। যাই হোক সোহাগপল্লী সম্পর্কে একটু বলাÑ সোহাগপল্লী সম্পূর্ণ দূষণ ও কোলাহলমুক্ত পরিবেশে গাজীপুর চন্দ্রা মোড় থেকে ৪ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে প্রায় ১১ একর জায়গার ওপর এর অবস্থান। প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে জলাশয়ের ওপর সৌন্দর্যমণ্ডিত ঝুলন্ত সাঁকো সকলের নজর কাড়ে। পিলার ও বেলকনিতে বিভিন্ন কারুকার্য যেন শৈল্পিক ছোঁয়ার বহির্প্রকাশ। এখানে কৃত্রিমভাবে একটি লেক নির্মাণ করা হয়েছে। যার মধ্যে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রয়েছে। বিভিন্ন কটেজ, এক পাশে রয়েছে হা করা রাক্ষসের মুখ, উপরে সুন্দরী ললনার কুলে জলভর্তি কলস এবং পাহাড়ের সামনে দুদিকে দুটি করে জিরাফ, হরিণ ও গরুর গাড়িসহ বিভিন্ন কৃত্রিম আরও অনেক প্রকৃতি রয়েছে।
×